জাতীয় ক্রিকেট লিগ
জাতীয় ক্রিকেট লিগের ষষ্ঠ রাউন্ডে প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারে নিজের প্রথম সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন পারভেজ হোসেন।
Published : 24 Nov 2024, 07:37 PM
আগের ছয় ইনিংসের পাঁচটিতেই ৩ উইকেট করে পেয়েছিলেন রেজাউর রহমান রাজা। ষষ্ঠ রাউন্ডেও প্রথম দিন তিনি শেষ করেন ৩ উইকেট নিয়ে। মনে হচ্ছিল যেন, ৩-র সঙ্গে এক ধরনের সখ্যতা গড়ে উঠেছে তার। সেটি এড়িয়ে অবশেষে ৫ উইকেটের দেখা পেলেন সিলেটের পেসার।
জাতীয় ক্রিকেট লিগে রাজার ৫ উইকেটের অপেক্ষা ঘোচানোর দিনে ক্যারিয়ারের প্রথম তিন অঙ্কের উষ্ণ ছোঁয়া পেয়েছেন পারভেজ হোসেন। তার সেঞ্চুরির ম্যাচে ৫ উইকেট পেয়েছেন মেহেদি হাসান। আর ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসে ডাবল সেঞ্চুরির আশা জাগিয়েও ১৮০ রানে থেমেছেন মোহাম্মদ নাঈম শেখ।
পারভেজের সেঞ্চুরি, মেহেদির ৫ উইকেট
তৃতীয় রাউন্ডের ম্যাচে সম্ভাবনা জাগিয়েও ৫ রানের আক্ষেপে পুড়েছিলেন পারভেজ হোসেন। দুই ম্যাচ পর আর ভুল করলেন না। দারুণ ব্যাটিংয়ে খুলনার বিপক্ষে সেঞ্চুরি তুলে নিলেন তরুণ বাঁহাতি ওপেনার।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের একাডেমি মাঠে পারভেজের সেঞ্চুরিতে খুলনার বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ১৬ রানের লিড পেয়েছে চট্টগ্রাম। খুলনার ২০৪ রানের বিপরীতে তারা করে ২২০ রান।
পরে দ্বিতীয় দিনের শেষ সেশনে ১ উইকেট হারিয়ে খুলনার সংগ্রহ ৫৬ রান। এনামুল হক ৩৮ বলে ৩৭ রানে অপরাজিত।
কোনো উইকেট না হারিয়ে ৩১ রানে দিন শুরু করা চট্টগ্রাম উদ্বোধনী জুটিতে পায় ৬১ রান। সাদিকুর রহমান ফেরেন ২৭ রান করে। এরপর সাজ্জাদুল হক, সাব্বির হোসেন, ইয়াসির আলি চৌধুরিরা হতাশ করলে চাপে পড়ে যায় চট্টগ্রাম।
ইরফান শুক্কুরের সঙ্গে পঞ্চম উইকেটে ৬৯ রানের জুটি গড়েন পারভেজ। ১৮ চারের সঙ্গে ১ ছক্কায় ১২০ বলে ২৫ ম্যাচের ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন বাঁহাতি ওপেনার। শেষ পর্যন্ত ১০৭ রানে ফেরেন তিনি। ইরফানের ব্যাট থেকে আসে ৪০ রান।
৬৫ রানে ৫ উইকেট নেন বাঁহাতি পেসার মেহেদি। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তার দ্বিতীয় ৫ উইকেট এটি। এছাড়া ৪ উইকেট পান আরেক পেসার মাসুম খান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
খুলনা ১ম ইনিংস: ২০৪
চট্টগ্রাম ১ম ইনিংস: ৬৪.১ ওভারে ২২০ (আগের দিন ৩১/০) (সাদিকুর ২৭, পারভেজ ১০৭, সাজ্জাদুল ৪, সাব্বির ১, ইয়াসির ০, ইরফান ৪০, নাঈম ১০, শরিফ ৭, আশরাফুল ৪*, এনামুল ১২, ফাহাদ ০, আলআমিন ১৩-২-৮৩-১, মেহেদি ১৭.১-২-৬৫-৫, মাসুম ১৯-৯-৩২-৪, নাহিদুল ৩-১-৫-০, পারভেজ ৯-৪-১৫-০, আরিদুল ৩-০-১৩-০)
খুলনা ২য় ইনিংস: ১৭ ওভারে ৫৬/১ (এনামুল ৩৭*, অমিত ১৮, আরিদুল ০*; ফাহাদ ৩-১-২৬-০, নাঈম ৮-৪-১০-০, এনামুল ৩-০-১২-০, আশরাফুল ২-১-৬-০, শরিফ ১-০-১-১)
রাজার ৫ উইকেট, মুবিন-অমিত-নাসুমের ফিফটি
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে রেজাউর রহমান রাজার ফিফটির পর মুবিন আহমেদ, অমিত হাসান ও নাসুম আহমেদের ফিফটিতে বরিশালকে জবাব দিচ্ছে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থাকা সিলেট।
দ্বিতীয় দিন শেষে ৪ উইকেট বাকি রেখে ৮৭ রানে পিছিয়ে সিলেট। বরিশালের ৩০৪ রানের জবাবে সিলেটের সংগ্রহ ৬ উইকেটে ২১৭ রান।
ক্যারিয়ারে তৃতীয়বার ৫ উইকেটের স্বাদ পেয়ে রাজার শিকার ৬৯ রানে ৫ উইকেট। ইবাদত হোসেন ধরেন ২ শিকার।
৭ উইকেটে ২৫৮ রান নিয়ে দিন শুরু করা বরিশালকে তিনশ পার করান মইনুল ইসলাম ও তানভির ইসলাম। দুজনের অষ্টম উইকেট জুটিতে আসে ৪৮ রান। মইনুল ২৭ ও তানভির করেন ২৯ রান।
পরে ব্যাট করতে নেমে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি সিলেটের দুই ওপেনার পিনাক ঘোষ ও তৌফিক খান। তিন নম্বরে নামা মুবিন খেলেন ১০১ বলে ৫৩ রানের ইনিংস।
চতুর্থ উইকেটে নাসুমকে নিয়ে ৯১ রানের জুটি গড়েন অমিত। দারুণ ছন্দে থাকা অমিত আরেকটি পঞ্চাশছোঁয়া ইনিংসে করেন ৫৬ রান করেন। আসরে ৯ ইনিংসে ২ সেঞ্চুরি ও ৩ ফিফটিতে তার সংগ্রহ ৬২৩ রান। আর কেউ এখনও ৬০০ রান করতে পারেননি।
প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারের পঞ্চম ফিফটিতে ২টি করে চার-ছক্কায় ৮২ বলে ৫৩ রান করেন নাসুম।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বরিশাল ১ম ইনিংস: ৯৩.২ ওভারে ৩০৪ (আগের দিন ২৫৮/৭) (মইনুল ২৭, তানভির ২৯, মহিউদ্দিন ৯*, রুয়েল ১; ইবাদত ১৬-২-৪০-২, খালেদ ১৬-২-৫৩-০, রাজা ১৯.২-৫-৬৯-৫, তোফায়েল ১৫-৩-৪১-১, নাসুম ২৩-৭-৪৮-১, রাহাতুল ৩-০-২৬-১, গালিব ১-০-৪-০)
সিলেট ১ম ইনিংস: ৬১ ওভারে ২১৭/৬ (পিনাক ২০, তৌফিক ২৯, মুবিন ৫৩, অমিত ৫৬, নাসুম ৫৩, গালিব ০*, রাহাতুল ০, তোফায়েল ১*; রুয়েল ১৪-২-৫২-১, মহিউদ্দিন ৯-০-৪৩-১, তানভির ১০-১-৩০-০, সালমান ৬-১-২১-০, মইনুল ৬-২-১২-১, সোহাগ ৮-০-২৩-২, মইন ৬-০-২৭-০, ইফতেখার ২-০-৬-১)
নাঈমের ক্যারিয়ার সেরা ১৮০
দেড়শ ছাড়িয়ে অপরাজিত থাকা মোহাম্মদ নাঈম শেখ দ্বিতীয় দিন দ্বিশতক করতে পারেননি। ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসে ১৮০ রানে থেমেছেন ঢাকা মেট্রোর বাঁহাতি ওপেনার। সঙ্গে তাহজিবুল ইসলাম ও মার্শাল আইয়ুবের সেঞ্চুরিতে ৪৭৫ রান করেছে মেট্রো।
জবাবে দিনের শেষ দিকে ৩২ রানে ২ উইকেট হারিয়েছে রংপুর।
ডাবল সেঞ্চুরির কাছাকাছি যাওয়া নাঈমকে থামান চৌধুরি মোহাম্মদ রিজওয়ান। বোল্ড হয়ে ফেরার আগে প্রায় আট ঘণ্টা ব্যাটিং করে ২০ চার ও ১ ছক্কায় ২৮৫ বলে ১৮০ রান করেন ঢাকা মেট্রো অধিনায়ক।
এছাড়া মার্শাল আইয়ুবের ব্যাট থেকে আসে ৬১ রান। আলআমিন হোসেন জুনিয়র করেন ৪৪ রান।
মেট্রোর ব্যাটসম্যানদের থামাতে ১০ জন বোলার ব্যবহার করেন রংপুর অধিনায়ক আব্দুল্লাহ আল মামুন। সবার শেষে বোলিংয়ে আসা আরিফুল হক নেন সর্বোচ্চ ৩ উইকেট।
পরে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম ওভারেই রংপুরের দুই ওপেনার খালিদ হাসান ও রিজওয়ানকে ফেরান মেহেদি হাসান। এরপর আর বিপদ ঘটতে দেননি নাঈম ইসলাম ও মামুন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ঢাকা মেট্রো ১ম ইনিংস: ১৪১.৩ ওভারে ৪৭৫ (আগের দিন ২৭৬/২) (নাঈম ১৮০, মার্শাল ৬১, শামসুর ১৪, আমিনুল ৩০, আলআমিন ৪৪, রকিবুল ২০, আশরাফুল ১১, আরিফ ১*, মেহেদি ২; রবিউল ১৭-৬-৫৪-২, মেহেদি ২১-৪-৭১-১, নজরুল ২৫-২-৮০-১, মামুন ১৩-২-৫৬-১, লিওন ২৫.২-০-৮১-১, রিজওয়ান ৪-১-১১-১, খালিদ ৫-০-১৬-০, নাঈম ৩.৪-০-১৩-০, তানবীর ৮-০-২৮-০, আরিফুল ১৯.৩-৪-৫৫-৩)
রংপুর ১ম ইনিংস: ১৬ ওভারে ৩২/২ (খালিদ ০, রিজওয়ান ০, মামুন ৬*, নাঈম ১৬*; মেহেদি ৫-২-৬-২, আনিসুল ৪-২-৫-০, আলআমিন ৩-২-৪-০, রকিবুল ৩-০-৭-০, আরিফ ১-০-১-০)