ইংলিশ ক্রিকেট
কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপের ইতিহাসে এক ওভারে সবচেয়ে বেশি রান দেওয়ার অনাকাঙ্ক্ষিত রেকর্ড গড়লেন ইংলিশ পেসার অলিভার রবিনসন।
Published : 26 Jun 2024, 08:46 PM
একের পর এক শর্ট বল করে গেলেন অলিভার রবিনসন। একেকটি বল বাউন্ডারির বাইরে পাঠালেন ব্যাটসম্যান লুইস কিম্বার। এক ওভার শেষ করতে ইংলিশ পেসার বল করলেন ৯টি। খরচ হলো ৪৩ রান! ওভারটি জায়গা পেয়ে গেল রেকর্ডের পাতায়।
ইংলিশ কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপ ‘ডিভিশন টু’-র ম্যাচে বুধবার সাসেক্সের হয়ে লেস্টারশায়ারের বিপক্ষে এমন খরুচে বোলিং করেন রবিনসন। কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপের ইতিহাসে এক ওভারে সবচেয়ে বেশি রানের রেকর্ড এটি।
১৯৯৮ সালে ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে ল্যাঙ্কাশায়ারের হয়ে সারের বিপক্ষে এক ওভারে ৩৮ রান দিয়েছিলেন আলেক্স টিউডর। ওই ওভারে ব্যাট থেকে ৩৪ রান নিয়েছিলেন অ্যান্ড্রু ফ্লিনটফ। টিউডর ‘নো’ বল করেছিলেন দুটি। ইংল্যান্ড ও ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডের (ইসিবি) ঘরোয়া প্রতিযোগিতায় ‘নো’ বলের জন্য দেওয়া হয় দুই রান। তাই মোট রান হয় ৩৮।
গত সোমবার টিউডরের রেকর্ড স্পর্শ করেন শোয়েব বাশির। তরুণ এই অফ স্পিনার এক ওভারে ৩৮ রান দেন উস্টারশায়ারের হয়ে সারের বিপক্ষে।
বাশিরের প্রথম পাঁচ বলে পাঁচটি ছক্কা মারেন ড্যান লরেন্স। পরের বল হয় ওয়াইড, কিপারকে ফাঁকি দিয়ে বল চলে যায় বাউন্ডারিতে, রান আসে ৫। এরপর ‘নো’ বল থেকে এক রান নেন লরেন্স। ‘নো’ বলে দুই রানের হিসাবে এই বলে আসে মোট ৩ রান। শেষ বলে কোনো রান দেননি বাশির।
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে রবিনসনের চেয়ে খরুচে ওভার আছে আর একটিই। ১৯৯০ সালে ক্রাইস্টচার্চে নিউ জিল্যান্ডের শেল ট্রফিতে ক্যান্টারবুরির বিপক্ষে ওয়েলিংটনের বোলার বার্ট ভ্যান্স দিয়েছিলেন ৭৭ রান! এটিকে যদিও অফিসিয়াল রেকর্ড হিসেবে ধরা হয় না।
ইচ্ছাকৃতভাবে ১৭টি ফুল টস বল দিয়েছিলেন ভ্যান্স। সবগুলোই ছিল ‘নো’ বল। আম্পায়ারের গণনার ভুলে ভ্যান্সের ‘বৈধ’ ডেলিভারি ছিল মাত্র পাঁচটি।
হোভের কাউন্টি গ্রাউন্ডে রবিনসনের ওভারটি লেস্টারশায়ারের রান তাড়ায় ইনিংসের ৫৯তম ওভারে। শর্ট বল ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগের ওপর দিয়ে ছক্কায় উড়িয়ে ওভার শুরু করেন ব্যাটসম্যান কিম্বার। পরেরটি আবার শর্ট বল, আবার পুল করে স্কয়ার লেগ দিয়ে চার। সেই ডেলিভারি ছিল ‘নো’ বল। ইসিবির নিয়মে ‘নো’ বলের জন্য দুই রান।
আবারও শর্ট বল করেন রবিনসন। এবার কিম্বার ঠিকমতো খেলতে না পারলেও চার হয়ে যায় থার্ডম্যান দিয়ে। এরপর আরেকটি শর্ট বলে স্কয়ার লেগ দিয়ে মারেন ছক্কা। ফের শর্ট বলে চার আসে মিডউইকেট দিয়ে।
এরপর আরেকটি ‘নো’ বল করেন রবিনসন। এবার কাভার দিয়ে চার মেরে কিম্বার সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ৬২ বলে।
পরের বল আবার শর্ট, এবার চার মিড অন দিয়ে। এরপর আবার ‘নো’ বল করেন বোলার, এবার ফুল লেংথ বলে কাভারের ওপর দিয়ে চার। শেষ বল স্কয়ার লেগে খেলে এক রানের বেশি নিতে পারেননি কিম্বার। যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন রবিনসন।
খুনে ব্যাটিংয়ে দারুণ এক জয়ের আশা জাগিয়েও পারেননি কিম্বার। ৪৬৪ রানের লক্ষ্য তাড়ায় শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে যখন আউট হন তিনি, জয় থেকে আর ১৯ রান দূরে ছিল তার দল।
এই ইনিংসের পথে তিনি দুইশ স্পর্শ করেন ১০০ বলে। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে যা দ্বিতীয় দ্রুততম ডাবল সেঞ্চুরির কীর্তি।
২০১৮ সালে আফগানিস্তানের ঘরোয়া ক্রিকেটে শাফিকউল্লাহ শিনওয়ারি কাবুলের হয়ে বিশ্বরেকর্ড গড়েন ৮৯ বলে ডাবল সেঞ্চুরি করে।
আট নম্বরে নেমে ১২৭ বলে ২৪৩ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলে আউট হন কিম্বার। যেখানে ২০টি চারের পাশে ছক্কা ২১টি!
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে এক ইনিংসে তার চেয়ে বেশি ছক্কা আছে আর কেবল তিন জনের। এই বছরের জানুয়ারিতে রঞ্জি ট্রফিতে হায়দরাবাদের হয়ে অরুনাচল প্রদেশের বিপক্ষে ৩৬৬ রানের ইনিংসে ২৬ ছক্কা মেরে বিশ্ব রেকর্ড গড়েন তান্মায় আগারওয়াল।
২০১৫ সালে নিউ জিল্যান্ডের প্লাঙ্কেট শিল্ডে সেন্ট্রাল ডিস্ট্রিক্টের বিপক্ষে অকল্যান্ডের হয়ে কলিন মানরোর ২৮১ রানের ইনিংসে ছক্কা ছিল ২৩টি। ২০১৮ সালে আফগানিস্তানের ঘরোয়া চার দিনের টুর্নামেন্টে কাবুল রিজিয়নের হয়ে অপরাজিত ২০০ রানের ইনিংসে ২২ ছক্কা হাঁকান শাফিকউল্লাহ শিনওয়ারি।