কাছে গিয়েও না পাওয়ার ব্যথা খুব ভালোভাবেই উপলব্ধি করার কথা রহমত শাহর। পরপর দুই ম্যাচে যে অল্পের জন্য সেঞ্চুরির উষ্ণ ছোঁয়া পাওয়া হলো না এই ব্যাটসম্যানের। তবে তার আরেকটি আক্ষেপের দিনে প্রথম শতকের স্বাদ পেলেন ইব্রাহিম জাদরান। তাদের দুইজনের ব্যাটেই জিম্বাবুয়েকে উড়িয়ে দিয়ে সিরিজ জিতল আফগানিস্তান।
Published : 06 Jun 2022, 10:07 PM
হারারেতে সোমবার দ্বিতীয় ওয়ানডে ৮ উইকেটে জিতেছে হাশমতউল্লাহ শাহিদির দল। ৩ ম্যাচের সিরিজে এগিয়ে গেছে ২-০ ব্যবধানে। ক্রিকেট বিশ্বকাপ সুপার লিগে আরও ১০ পয়েন্ট যোগ করেছে তিন নম্বরে থাকা দলটি।
ইনোসেন্ট কাইয়া ও রায়ান বার্লের ফিফটিতে ২১৮ রানের সংগ্রহ গড়ে জিম্বাবুয়ে। রান তাড়ায় প্রতিপক্ষ বোলারদের কোনো পাত্তাই দিলেন না রহমত ও ইব্রাহিম। তাদের ১৯৫ রানের জুটিতে ৩৩ বল বাকি থাকতেই জয়ে বন্দরে পৌঁছে যায় আফগানিস্তান।
আগের ম্যাচে ৯৪ রান করা রহমত এদিন আউট হলেন ৮৮ রানে। তার ১১২ বলের ইনিংসটি গড়া ৯ চারে। ওপেন করতে নেমে ১৬ চারে ১২০ রান করে দলের জয় সঙ্গে নিয়ে মাঠ ছাড়েন চতুর্থ ওয়ানডে খেলতে নামা ইব্রাহিম। ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন ২০ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যান।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে দ্বিতীয় বলেই রেজিস চাকাভাকে হারায় জিম্বাবুয়ে। শুরু ধাক্কা সামাল দেন ক্রেইগ আরভিন ও কাইয়া। তাদের জুটিতে আসে ৪৭ রান।
এরপর ওয়েসলি মাধেভেরে ও সিকান্দার রাজাকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন কাইয়া। দ্বিতীয় ওয়ানডে খেলতে নামা এই ব্যাটসম্যান ফিফটি স্পর্শ করেন ৫৯ বলে। এক ছক্কা ও ৬ চারে ৬৩ রান করা কাইয়ার বিদায়ে ভাঙে রাজার সঙ্গে তার ৬৭ রানের জুটি।
রাজাকে বেশিদূর এগোতে দেননি মোহাম্মদ নবি। এক ছক্কা ও ২ চারে ৪০ রান করেন রাজা। দ্রুত আরও দুই উইকেট হারিয়ে দুইশর আগে গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় পড়ে যায় জিম্বাবুয়ে।
বার্ল এক প্রান্তে লড়াই চালিয়ে যান। তাকে সঙ্গ দেন ব্লেসিং মুজারাবানি। নবম উইকেটে তাদের ৪৬ রানের জুটিতে দুইশ পার করে স্বাগতিকরা। ৫৮ বলে ফিফটি করা বার্ল শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন এক ছক্কা ও ২ চারে ৫১ করে।
আফগানদের হয়ে সর্বোচ্চ তিনটি শিকার ধরেন ফরিদ আহমাদ। দুটি করে প্রাপ্তি ফাজলহক ফারুকি, মোহাম্মদ নবি ও রশিদ খানের।
জবাব দিতে নেমে ১৭ রানেই রহমানউল্লাহ গুরবাজকে হারায় আফগানিস্তান। এরপর শুরু হয় ইব্রাহিম ও রহমতের দুর্দান্ত জুটির পথচলা। ৫৬ বলে পঞ্চাশ, ১৩১ বলে তিন অঙ্ক স্পর্শ করে এগিয়ে যেতে তাদের তাদের জুটির রান।
আগের ওয়ানডেতে ২০ রান পার করতে না পারা ইব্রাহিম ৫৯ বলে পা রাখেন ফিফটিতে। রহমতের পঞ্চাশ আসে ৭১ বলে।
দারুণ ব্যাটিংয়ে ১১৯ বলে কাঙ্ক্ষিত তিন অঙ্ক স্পর্শ করেন ইব্রাহিম। ততক্ষণে জয়ের কাছে চলে যায় আফগানিস্তান। তবে তখনও সম্ভব ছিল রহমতের সেঞ্চুরি। ডোনাল্ড টিরিপানোর বলে তিনি যখন কট বিহাইন্ড হলেন, জয়ের সীমানা থেকে ১৭ রান দূরে ছিল আফগানিস্তান। আর সেঞ্চুরির জন্য রহমতের দরকার ছিল ১২।
আগামী বৃহস্পতিবার সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে মুখোমুখি হবে দুই দল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
জিম্বাবুয়ে: ৫০ ওভারে ২২৮ (চাকাভা ০, কাইয়া ৬৩, আরভিন ৩২, মাধেভেরে ১৫, রাজা ৪০, শুম্বা ১, বার্ল ৫১*, টিরিপানো ৫, চাতারা ০, মুজারাবানি ৯, চিভাঙ্গা ১; ফারুকি ৮-১-৩৪-২, মুজিব ৬-০-২৪-০, ফরিদ ১০-০-৫৬-৩, আজমতউল্লাহ ৭-০-২৫-০, নবি ৯-০-৩১-২, রশিদ ১০-০-৫৬-২)
আফগানিস্তান: ৪৪.৩ ওভারে ২২৯/২ (রহমানউল্লাহ ৪, ইব্রাহিম ১২০*, রহমত ৮৮, হাশমতউল্লাহ ১*; মুজারাবানি ৮-১-৪২-১, চাতারা ৬.৩-০-৩৬-০, চিভাঙ্গা ৮-০-৩৪-০, বার্ল ৫-০-৩০-০, রাজা ৬-০-২৫-০, টিরিপানো ৬-০-৩২-১, শুম্বা ২-০-১৫-০, মাধেভেরে ৩-০-১১-০)
ফল: আফগানিস্তান ৮ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: ইব্রাহিম জাদরান
সিরিজ: তিন ম্যাচের সিরিজ ২-০ তে এগিয়ে আফগানিস্তান