পাকিস্তানকে হারিয়ে আরও আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশের মেয়েরা

যে কোনো টুর্নামেন্টে প্রথম ম্যাচ অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আর শুরুটা ভালো হলে দলের আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায় অনেকটা। সেই কাজটি দারুণভাবে সেরেছে বাংলাদেশ নারী দল। পাকিস্তানকে হারিয়ে বিশ্বকাপ বাছাই শুরুর পর অধিনায়ক নিগার সুলতানা তাই বলছেন, সামনে এগিয়ে যাওয়ার টনিক হিসেবে কাজ করবে এই জয়।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Nov 2021, 07:31 PM
Updated : 21 Nov 2021, 08:11 PM

হারারেতে রোববার ‘বি’ গ্রুপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ৩ উইকেটে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। পাকিস্তানের ২০১ রান তারা পেরিয়ে যায় ২ বল বাকি থাকতে।

এই সংস্করণে পাকিস্তানের বিপক্ষে টানা দুই ম্যাচ জিতল বাংলাদেশ। মাঝে সময়ের ব্যবধান যদিও দুই বছরের বেশি। ২০১৯ সালের ৪ নভেম্বর পাকিস্তান সফরে দুই ম্যাচ সিরিজের শেষটিতে ২১১ রানের লক্ষ্য তাড়ায় বাংলাদেশ ১ উইকেটে জিতেছিল ১ বল বাকি থাকতে। ওয়ানডেতে যা বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়।

ওই ম্যাচের পর দীর্ঘ বিরতি শেষে বাংলাদেশ ওয়ানডে খেলতে নামে এই মাসের শুরুর দিকে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। স্বাগতিকদের বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজ জিতে নেয় ৩-০ ব্যবধানে। বিশ্বকাপ বাছাই শুরুর আগে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ৫০ ওভারের একটি প্রস্তুতি ম্যাচও জেতে তারা। সেই ধারাবাহিকতায় এবার জয় ধরা দিল শক্তিশালী পাকিস্তানের বিপক্ষে।

এই জয় দলকে মোমেন্টাম এনে দিয়েছে বলে মনে করেন জিম্বাবুয়ে সিরিজ দিয়ে অধিনায়ক হিসেবে যাত্রা শুরু করা নিগার।

“একটা টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচ অনেক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে থাকে। জয় দিয়ে শুরু করতে পেরেছি, পুরো টুর্নামেন্ট আমরা কেমন খেলব, এটা আমাদের পুরো দলকে একটা মোমেন্টাম এনে দিয়েছে। পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ সব সময় অনেক উত্তেজনাপূর্ণ থাকে। আমরাও সেভাবেই প্রস্তুত ছিলাম। আমরা নিজেদের সেরাটা দিয়েই চেষ্টা করেছি।”

টস জিতে বোলিং নিয়ে বাংলাদেশের শুরুটা হয় দারুণ। ৪৯ রানের মধ্যেই তুলে নেয় প্রতিপক্ষের ৫ উইকেট। এরপর ১৩৭ রানের একটা বড় জুটি গড়েন নিদা দার ও আলিয়া রিয়াজ। রানটা দুইশর আশেপাশে রাখায় নিগার কৃতিত্ব দিলেন বোলারদের।

“আমরা দেখেছি দ্রুত ৫ উইকেট নেওয়ার পর ওরা একটা জুটি গড়ে। এই সময়ে আমরা ‘প্যানিকড’ হয়ে যাইনি। খুব ঠাণ্ডা মাথায় সামাল দিয়েছি। আমি বলব এখানে বোলারদের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি। তারা আমাকে অনেক সহায়তা করেছে। এই সব উইকেটে দুইশ রান করা কিংবা দুইশ রান তাড়া করে জেতা খুব স্বাভাবিক একটা বিষয়।”

উইকেট নেওয়ার পর বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের উল্লাস। ছবি: জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট

রান তাড়ায় তিন নম্বরে নেমে ৪৫ রানের ইনিংসে দলকে পথ দেখান ফারজানা হক। মাঝে তাকেসহ ১৮ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে দল। পঞ্চম উইকেটে ৬১ রানের জুটি গড়েন রুমানা আহমেদ ও রিতু মনি। এরপরই আবার ১ রানের মধ্যে হারায় ৩ উইকেট।

সালমা খাতুনকে সঙ্গে নিয়ে শেষ ৩ ওভারে ৩৫ রানের কঠিন সমীকরণ মেলান রুমানা। ৪৪ বলে ৫০ রানে অপরাজিত থাকেন সাবেক অধিনায়ক। আরেক সাবেক অধিনায়ক সালমা ১৩ বলে করেন ১৮।

এই জয় সামনে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে বলে মনে করেন নিগার।

“এটা (জয়) আমাদের দলের আত্মবিশ্বাস আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। পরে যে ম্যাচগুলো আমরা খেলব সেখানে এটা আরও বেশি সহায়তা করবে।”

নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। ‘বি’ গ্রুপে তাদের অন্য দুই প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে ও থাইল্যান্ড। পাপুয়া নিউ গিনি নাম প্রত্যাহার করে নেওয়ায় ‘এ’ গ্রুপে আছে শ্রীলঙ্কা, নেদারল্যান্ডস, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও আয়ারল্যান্ড।

দুই গ্রুপ থেকে সেরা তিনটি করে দল নিয়ে আয়োজিত হবে সুপার সিক্স। চূড়ান্ত পর্বের জন্য সেরা তিন দল নির্বাচিত করা হবে এখান থেকে।

বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত ওয়ানডে বিশ্বকাপের মূল পর্বে খেলতে পারেনি। এর আগে দুইবার বাছাই পর্ব খেলে তারা প্রতিবারই পঞ্চম হয়েছে।