ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ টি-টোয়েন্টির উদ্বোধনী দিনে নখ কামড়ানো উত্তেজনার ম্যাচে ৩ উইকেটে জিতেছে মোহামেডান।
পাঁচ বছর পর প্রিমিয়ার লিগে ফেরার দিনে ব্যাটে-বল উজ্জ্বল সাকিব। শেষ ওভারে ১৫ রান দিলেও, এর আগ পর্যন্ত আঁটসাঁট বোলিংয়ে বেঁধে রেখেছিলেন ব্যাটসম্যানদের। ৪ ওভারে ২৯ রানে নেন ২ উইকেট। পরে ব্যাট হাতে ২২ বলে খেলেন ২৯ রানের ইনিংস।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ব্যাটসম্যানদের ছোট ছোট অবদানে ৬ উইকেটে ১২৫ রান করে শাইনপুকুর। ছোট পুঁজি নিয়েও দারুণ লড়াই করে তারুণ্য নির্ভর দলটি। তবে, এক বল বাকি থাকতে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় মোহামেডান।
বিকেএসপির চার নম্বর মাঠে মোহামেডানের আঁটসাঁট বোলিংয়ে শাইনপুকুরের শুরুটা হয় মন্থর। সপ্তম ওভারে ২৬ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন আসিফ হাসান। বাঁহাতি এই স্পিনার ফিরিয়ে দেন ২০ বলে ১০ রান করা সাব্বির হোসেনকে।
আরেক ওপেনার তানজিদ হাসান অনেকটা সময় ক্রিজে থাকলেও তুলতে পারেননি প্রত্যাশিত ঝড়। দুই ছক্কায় ডানা মেলার ইঙ্গিত দেওয়া বাঁহাতি এই ওপেনারকে বোল্ড করে বিদায় করেন ইয়াসিন আরাফাত।
দ্রুত রান তোলার চেষ্টায় থাকা রবিউল ইসলাম রবিকে বিদায় করেন সাকিব। বাঁহাতি এই স্পিনার পরে ফেরান চোট কাটিয়ে এই ম্যাচ দিয়ে মাঠে ফেরা মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরিকে। গত বছরের জানুয়ারির পর প্রথম খেলতে নেমে পেলেন গোল্ডেন ডাকের স্বাদ।
রান তাড়ায় শুরুতেই অভিষেক মিত্রকে হারায় মোহামেডান। পারভেজ হোসেন ও শামসুর রহমানের ব্যাটে শুরুর ধাক্কা সামাল দিয়ে এগিয়ে যায় দলটি।
৫৪ রানের জুটি ভাঙে পারভেজের রান আউটে। ৩৩ বলে চারটি চার ও এক ছক্কায় ৩৯ রান করেন এই তরুণ ওপেনার। এক চারে ২৪ রান করা শামসুরকে বিদায় করেন মোহর শেখ।
সাকিব ছিলেন দ্রুত রান তোলার চেষ্টায়। কাট করে তানভীর ইসলাকে চার মারার পর ছক্কায় ওড়ান ইফতেখার সাজ্জাদকে। নাদিফ চৌধুরির সঙ্গে তার জুটিতে দল ছিল সহজ জয়ের পথে।
তানভীরকে বেরিয়ে এসে স্লগের চেষ্টায় সাকিব ক্যাচ দিলে পাল্টে যায় চিত্র। পরের ওভারে ইফতেখারের বলে কট বিহাইন্ড হয়ে যান ইরফান শুক্কুর।
পরপর দুই বলে নাদিফ ও শুভাগত হোম চৌধুরিকে ফিরিয়ে শাইনপুকুরের আশা জাগান সুমন।
জয়ের জন্য শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ৬ রান। চোটের জন্য গত যুব বিশ্বকাপের মাঝপথ ধেকে ফেরা মৃত্যুঞ্জয় প্রথম ৪ বলে দেন ৩ রান। পঞ্চম বলটি ছিল লেগ স্টাম্পে, ফ্লিক করে ছক্কায় ওড়ান আবু হায়দার। স্বস্তির জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে মোহামেডান।
প্রিমিয়ার লিগে ফেরার ম্যাচে অলরাউন্ড নৈপুণ্যে সাকিব জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
শাইন পুকুর ক্রিকেট ক্লাব: ২০ ওভারে ১২৫/৬ (তানজিদ ৩০, সাব্বির ১০, রবিউল ২৫, হৃদয় ১, মাহিদুল ২০, মৃতুঞ্জয় ০, সাজিদুল ১২*, সুমন ২৩*; সাকিব ৪-০-২৯-২, শুভাগত ১-০-৫-০, আবু জায়েদ ৪-০-১৬-১, আবু হায়দার ৪-০-২৭-১, আসিফ ৩-০-২৩-১, ইয়াসিন ৪-০-২৪-২)।
মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব: ১৯.৫ ওভারে ১২৯/৭ (অভিষেক ১, পারভেজ ৩৯, শামসুর ২৪, সাকিব ২৯, নাদিফ ১৯, ইরফান ১, শুভাগত ১, আবু হায়দার ৮*, ইয়াসিন ৩*; রবিউল ৩-০-১২-১, সুমন ৪-০-২৭-২, মোহর ৩-০-২৬-১, তানভীর ৪-০-২০-১, মৃত্যুঞ্জয় ২.৫-০-২৪-০, ইখতেখার ৩-০-১৮-১)।
ফল: মোহামেডান ৩ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: সাকিব আল হাসান