বৃষ্টি শেষে তামিম ইকবালের ঝড়

লিগের প্রথম দিনের ছয় ম্যাচের মধ্যে সত্যিকার অর্থে বড় ম্যাচ এটিই। বৃষ্টি আর ভেজা মাঠ মিলিয়ে সেই খেলা শুরু হতে দেরি হলো অনেকটা। লম্বা অপেক্ষার পর শুরু হওয়া ম্যাচে লড়াইও জমল না তেমন। তবে কিছুটা বিনোদনের খোরাক জোগাল তামিম ইকবালের ঝড়ো ব্যাটিং।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 May 2021, 12:27 PM
Updated : 31 May 2021, 12:50 PM

বিকেএসপিতে তামিম খেললেন ৫ ছক্কায় ২২ বলে ৪৬ রানের ইনিংস। গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সকে ৭ উইকেটে হারিয়ে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ টি-টোয়েন্টি অভিযান শুরু করল প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব।

১২ ওভারে নেমে আসা ম্যাচে মাহমুদউল্লাহর গাজী গ্রুপ করতে পারে ৫ উইকেটে ৯১ রান। তামিমের সৌজন্যে প্রাইম ব্যাংক অনায়াসেই জিতে যায় ১৬ বল বাকি রেখে।

গত বছর এক রাউন্ড হয়েই স্থগিত হওয়া লিগে প্রাইম ব্যাংককে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তামিম। এবার নতুন করে শুরু হওয়া পুরনো লিগে দলটি খেলছে নতুন অধিনায়ক এনামুল হকের নেতৃত্বে।

এনামুলকে নিয়েই রান তাড়া শুরু করেন তামিম। প্রথম ওভারে বাঁহাতি স্পিনার নাসুমকে বাউন্ডারি মারেন এনামুল, ওই ওভারেই তামিম শুরু করেন ছক্কায়। তবে মেহেদি হাসানের অফ স্পিনে সুইপ করার চেষ্টায় এলবিডব্লিউ হয়ে এনামুল বিদায় নেন দ্বিতীয় ওভারেই।

দলকে অবশ্য সেই চাপ অনুভব করতে দেননি তামিম। নাসুমকে সুইপ করে ছক্কায় ওড়ান তিনি। তিনে নামা রনি তালুকদার টানা দুই বলে ছক্কা মারেন বাঁহাতি পেসার নাহিদ হাসানকে। প্রথমটি পুল করে, পরেরটি এক্সট্রা কাভার দিয়ে ইনসাইড আউটে। অফ স্পিনার সঞ্জিত সাহাকে মাথার ওপর দিয়ে ছক্কায় পাঠান তামিম। ৬ ওভারেই ৫০ হয়ে যায় দলের।

পরে মুকিদুল ইসলামের এক ওভারে ছক্কা ও চারে দলকে জয়ের দিকে এগিয়ে নেন তামিম। নিজের পঞ্চম ছক্কাটি পান তিনি মেহেদির বলে লং অন দিয়ে।

তামিমকে ফিফটি পেতে দেননি এই মেহেদিই। ছক্কার পরের বলেই আবার ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে ওড়ানোর চেষ্টায় স্টাম্পড হয়ে যান বাঁহাতি ওপেনার।

জয়ের কাছে গিয়ে রনি তালুকদার আউট হয়ে যান ১৯ বলে ২৫ করে। পরে মোহাম্মদ মিঠুনের ছক্কা ও রকিবুল হাসানের বাউন্ডারিতে প্রাইম ব্যাংক জেতে হেসেখেলেই।

ম্যাচের প্রথম ভাগে হতাশ করেন গাজী গ্রুপের বড় তারকারা। ছোট হয়ে আসা ম্যাচে সৌম্য সরকারের সঙ্গে মেহেদি হাসানকে দিয়ে ইনিংস শুরু করে তারা। শুরুটা দুজনই করেন আগ্রাসী, ৩ ওভারে আসে ২৭ রান। কিন্তু দলকে বড় স্কোরে নেওয়ার মতো ইনিংস খেলতে পারেননি কেউই।

একটি করে ছক্কা-চারে ১২ বলে ১৬ করেন মেহেদি, তিন চারে ১৩ বলে ১৩ সৌম্য। মিডল অর্ডারে মাহমুদউল্লাহ (৭ বলে ৫) ও আরিফুল হকের (১১ বলে ৬) মতো অভিজ্ঞ দুজন ছিলে নিষ্প্রভ। আকবর আলিও জ্বলে উঠতে পারেননি।

প্রাইম ব্যাংকের মুস্তাফিজুর রহমান ও নাঈম হাসান দারুণ বোলিংয়ে আটকে রাখেন গাজী গ্রুপকে।

তিনে নেমে একটা প্রান্তে পড়ে থাকা জাকির হাসান শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ২২ বলে ২৬ রান করে। সাতে নেমে তিন বাউন্ডারিতে ৪ বলে অপরাজিত ১৩ করে রান কিছুটা বাড়ান মুমিনুল হক।

তাতে লাভ খুব বেশি হয়নি। সেই পুঁজি নিয়ে গাজী গ্রুপ লড়াই করতেও পারেনি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

গাজী গ্রুপ: ১২ ওভারে ৯১/৫ (মেহেদি ১৬, সৌম্য ১৪, জাকির ২৬*, মাহমুদউল্লাহ ৫, আরিফুল ৬, আকবর ৬, মুমিনুল ১৩* ; নাহিদুল ২-০-১৯-০, শরিফুল ৩-০-২৭-১, মুস্তাফিজ ৩-০-২১-২, নাঈম ২-০-১২-২, নাজমুল অপু ২-০-১০-০)।

প্রাইম ব্যাংক:  ৯.২ ওভারে ৯২/৩ (তামিম ৪৬, এনামুল ৫, রনি ২৫, মিঠুন ৮*, রকিবুল ৫*; নাসুম ২.২-০-২৩-০, মেহেদি ৩-১-১৮-২, নাহিদ ১-০-১৪-০, সঞ্জিত ১-০-১২-০, মুকিদুল ১-০-১৬-০, মাহমুদউল্লাহ ১-০-৮-১)।

ফল: প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব ৭ উইকেটে জয়ী।

ম্যান অব দা ম্যাচ: তামিম ইকবাল।