তাইজুল-মুশফিক ঝলকে জয়ে শুরু আবাহনীর

সদ্য সমাপ্ত শ্রীলঙ্কা সিরিজের ফর্ম ঘরোয়া ক্রিকেটেও বয়ে আনলেন মুশফিকুর রহিম। ছোট রান তাড়ায় কঠিন হয়ে ওঠা পথে দলকে এগিয়ে নিলেন তিনিই। তাইজুল ইসলামের দারুণ বোলিং আর মুশফিকের কার্যকর ইনিংসে জয় দিয়ে লিগ শুরু করল বর্তমান চ্যাম্পিয়ন আবাহনী।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 May 2021, 07:54 AM
Updated : 31 May 2021, 12:50 PM

ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ টি-টোয়েন্টির প্রথম দিনে পারটেক্স স্পোর্টিং ক্লাবের বিপক্ষে ডাকওয়ার্থ-লুইস-স্টার্ন পদ্ধতিতে আবাহনী লিমিটেডের জয় ৭ উইকেটে।

মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে সোমবার তাসামুল হকের অপরাজিত ৬৫ রানের ইনিংসের পরও পারটেক্স ২০ ওভারে ৫ উইকেটে করতে পারে কেবল ১২০ রান। আবাহনীর তাইজুল ৪ ওভারে মাত্র ১২ রানে নেন ২ উইকেট।

বৃষ্টিতে আবাহনীর লক্ষ্য দাঁড়ায় ১০ ওভারে ৭০। জিতে যায় ৪ বল বাকি রেখে। শুরুতে জোরালো আবেদন থেকে বেঁচে গিয়ে মুশফিক অপরাজিত থাকেন ২৬ বলে ৩৮ রানের ইনিংস খেলে।

সকাল ৯টায় শুরু ম্যাচে পারটেক্স ব্যাটিংয়ে নামে টস হেরে। প্রথম ওভারেই মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিনের শর্ট বলে দারুণ এক পুল শটে ছক্কা মারেন আব্বাস মুসা আলভি। পরের ওভারের প্রথম বলেই বাঁহাতি পেসার মেহেদি হাসান রানা ফিরিয়ে দেন সায়েম আলমকে।

প্রথম বলে রানাকে কাট করে বাউন্ডারি মেরে শুরু করেন তাসামুল। এক বল পর বাউন্ডারি পান ব্যাটের কানায় লেগে। রানার পরের ওভারে মাথার ওপর দিয়ে দৃষ্টিনন্দন ছক্কায় ওড়ান আলভি। তবে ১০ বলে ১৭ রান করা ওপেনারকে পরের বলেই ফিরিয়ে শোধ তোলেন রানা।

ফিফটির পথে তাসামুল হকের একটি শট। ছবি: বিসিবি।

এরপর তাইজুল দ্রুত ফিরিয়ে দেন শফিউল হায়াত ও অভিজ্ঞ ধীমান ঘোষকে। দলের বিপর্যয়ে নিজেকে একটু গুটিয়ে নেন তাসামুল। জুটি হিসেবে পান মইন খানকে। তবে রানের গতি কমে যায় অনেকটা।

৪৮ রানের জুটি থামে মইনের বিদায়ে। ২২ রান করতে ২৫ বল খেলেন তিনি।

তাসামুল টি-টোয়েন্টিতে তার প্রথম ফিফটি স্পর্শ করেন ৪৭ বলে। ঘরোয়া ক্রিকেটে ১০ বছরের বেশি সময় ধরে খেললেও এটি তার মাত্র চতুর্থ টি-টোয়েন্টি। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন তিনি ৯ চারে ৫৪ বলে ৬৫ রান করে।

আবাহনী এ দিন খেলায়নি লেগ স্পিনার আমিনুল ইসলাম বিপ্লবকে। কবজির ব্যথার কারণে ছিলেন না লিটন দাসও। মোহাম্মদ নাঈম শেখের সঙ্গে ইনিংস শুরু করেন নাজমুল হোসেন শান্ত।

দুজনের জুটি জমেনি একদমই। ইমরান আলি ইনামের শর্ট বল পুল করে শান্ত শর্ট ফাইন লেগে ধরা পড়েন ২ রানে। একটি করে চার ও ছক্কা মারলেও নাঈমের ১৯ রানে লাগে ১৭ বল।

১০ ওভারের ইনিংসে মুশফিক নামেন তিনে। ১ রানে বাঁহাতি স্পিনার শাহবাজ চৌহানের বলে বল লাগে তার প্যাডে, এলবিডব্লিউর জোরালো আবেদনে আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত পক্ষে পাওয়ায় নিজেকে সৌভাগ্যবান ভাবতেই পারেন তিনি। দলকে জিতিয়ে সুযোগটি কাজেও লাগান।

এক পর্যায়ে যদিও ম্যাচ বেশ জমে ওঠার ইঙ্গিত মিলেছিল। শাহবাজকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে মিড উইকেটে ধরা পড়েন আফিফ হোসেন। তবে শাহবাজের বলে এক্সট্রা কাভার দিয়ে মুশফিকের ছক্কায় আলগা হয় চাপ। শেষ ওভারে জয়নুল ইসলামকে কাভার দিয়ে বাউন্ডারিতে পাঠিয়ে দলকে জিতিয়ে ফেরেন মুশফিক। চাপের মধ্যে ঠাণ্ডা মাথার ইনিংস তিনিই জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

পারটেক্স: ২০ ওভারে ১২০/৫ (সায়েম ১, আলভি ১৭, তাসামুল ৬৫*, শফিউল ০, ধীমান ৪, মইন ২২, নাজমুল মিলন ৭*; সাইফ উদ্দিন ৪-০-২১-০, মেহেদি রানা ৩-০-৩১-২, আরাফাত সানি ৪-০-২২-০, তাইজুল ৪-০-১২-২, শহিদুল ৪-০-২২-০, মোসাদ্দেক ১-০-৮-০)।

আবাহনী: (লক্ষ্য ১০ ওভারে ৭০) ৯.২ ওভারে ৭২/৩ (নাঈম শেখ ১৯, শান্ত ২, মুশফিক ৩৮*, আফিফ ২, মোসাদ্দেক ৬*; জয়নুল ১.২-০-১২-০, ইমরান ২-০-১১-১, শাহবাজ ২-০-১১-১, নিহাদ ২-০-১৮-১, মইন ১-০-৯-০, মিলন ১-০-১০-০)।

ফল: ডাকওয়ার্থ-লুইস-স্টার্ন পদ্ধতিতে আবাহনী লিমিটেড ৭ উইকেটে জয়ী।

ম্যান অব দা ম্যাচ: মুশফিকুর রহিম।