৮৫ রানে একবার বৃষ্টিতে ড্রেসিং রুমে বসে থাকতে হয় ২৬ মিনিট, ৯৬ রানে আরেক দফায় ৩৮ মিনিট। একটা সময় প্রবল শঙ্কা, আবার ব্যাটিংয়ের সুযোগ পান কিনা। প্রকৃতি সদয় হওয়ায় মুশফিক ছুঁতে পারেন কাঙ্ক্ষিত মাইলফলক।
মুশফিকের ওয়ানডে ক্যারিয়ারের যেটি অষ্টম সেঞ্চুরি, দেশের মাঠে সাড়ে ৫ বছর পর ওয়ানডে সেঞ্চুরি এবং নিশ্চিতভাবেই তার ক্যারিয়ারের সেরা ইনিংসগুলির একটি।
দলের ২৪৬ রানে মুশফিকের একার রানই ১২৫, তার ইনিংসের ওজন বোঝা যায় এতেই। দ্বিতীয় ওভারে উইকেটে গিয়ে আউট হন ৪৯তম ওভারে। তবে স্রেফ সংখ্যাগুলি ফুটিয়ে তুলতে পারছে না সবটুকু।
যেভাবে ইনিংসটি গড়েছেন, যেভাবে সাজিয়েছেন, দলের ভার নিজের কাঁধে বয়ে যেভাবে এগিয়ে গেছেন, সবকিছু মিলিয়ে ওয়ানডে ব্যাটিংয়ের মাস্টারক্লাস মেলে ধরেছেন তিনি।
প্রথম ওয়ানডেতেও এভাবেই খেলেন তিনি। বাউন্ডারির দিকে না ঝুঁকে মাঠের চারপাশে খেলে এক-দুই নিয়ে বাড়িয়েছেন দলের রান। তার প্রায় ৯৭ স্ট্রাইক রেটের ইনিংসে সেদিন বাউন্ডারি ছিল কেবল ৫টি। তবে দারুণ খেলেও সেদিন রয়ে যায় অপূর্ণতা। হাতছাড়া করেন সেঞ্চুরি। ৮৭ বলে ৮৪ রানে থেমে যান রিভার্স সুইপ খেলে।
সেই আক্ষেপ ঘুচিয়ে দিলেন পরের ম্যাচেই। দ্বিতীয় ওভারেই দল তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসানকে হারানোর পর উইকেট যান তিনি। যথারীতি সিঙ্গেলস-ডাবলসে ভর করে এগিয়ে যান। প্রথম বাউন্ডারি মারেন ৪০ বল পর। প্রথম ৭০ রানে চার ছিল ওই একটিই!
সংযম ছিল আরও। আগের ম্যাচে রিভার্স সুইপে আউট হয়েছেন বলেই কিনা, এ দিন একটিও খেলেননি নিজের প্রিয় এই শট।
দলকে বিপদ থেকে উদ্ধার করার পরেই ক্ষান্ত হননি, নিয়ে গেছেন লড়িয়ে পুঁজির ঠিকানায়। পরিস্থিতি যখন দাবি করেছে, দারুণ সব শটে ঠিকই আদায় করেছেন বাউন্ডারি।
ফিফটি করতে তার লেগেছিল ৭০ বল, পরের পঞ্চাশ করেন ৪৪ বলেই। সেঞ্চুরির পর দ্রুত রান বাড়ান আরও।
১২৭ বলে ১০ চারে ১২৫ বলের এই ইনিংস তার ওয়ানডে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ ইনিংসটিও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেই, ২০১৮ এশিয়া কাপে দুবাইয়ে। তার ক্যারিয়ারের সেরা ইনিংসও বলা যায় সেটিকেই। সেদিনও প্রায় একার লড়াইয়ে অসাধারণ ব্যাটিংয়ে দলকে টেনে নিয়েছিলেন তিনি। এবার এই ম্যাচের ব্যাটিংয়েও ছিল এশিয়া কাপের ওই ইনিংসের ছাপ।
সব মিলিয়ে এই সিরিজে আরও একবার প্রমাণ হলো, বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের বড় ভরসার নাম মুশফিক। দলের যখন বিপদ, সবচেয়ে নির্ভরতার আশ্রয়স্থলও মুশফিক।