নিজের ভূমিকা জানতে মুশফিকের আকুতি

অধিনায়ক তো আছেনই। দলের সেরা ব্যাটসম্যানদের একজনও। তবে তার পরও টেস্ট দলে থিতু হতে পারছেন না কোনো একটি ব্যাটিং পজিশনে। কারণ ব্যাটিং পজিশনের প্রশ্ন এলেই পাশাপাশি চলে আসে কিপিংয়ের ভূমিকা। কখনও তিনি কিপার, কখনও নন। এ নিয়ে অনিশ্চয়তায় থাকা মুশফিকুর রহিম নিজেও আকুতি জানাচ্ছেন তার ভূমিকা নির্দিষ্ট করার।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Sept 2017, 03:02 PM
Updated : 7 Sept 2017, 04:17 PM

কিপার-ব্যাটসম্যান মুশফিক নাকি শুধুই ব্যাটসম্যান, এই টানাপোড়েন চলে আসছে অনেক দিন থেকেই। মিডল অর্ডারের সেরা ব্যাটসম্যান হিসেবে তার খেলা উচিত চার বা পাঁচ নম্বরে। কিন্তু কিপিং করলে ক্লান্তি ও পরিশ্রমের কথা ভেবে তাকে খেলতে হয় ছয় নম্বরে। এই চট্টগ্রাম টেস্টেই যেমন দুই ইনিংসেই ব্যাট করেছেন ছয়ে।

এই ব্যাটিং পজিশনের সূত্রেই এল ভূমিকার প্রসঙ্গ। টেনে আনলেন নিজেই। বাঁহাতিদের ভিড়ে একজন ডানহাতি খেলানোর ভাবনায় দ্বিতীয় ইনিংসে চার নম্বরে প্রমোশন দেওয়া হয় নাসির হোসেনকে। ডানহাতিই যদি চারে খেলানো হবে, তাহলে মুশফিক কেন নন? মুশফিক তুলে ধরলেন তার বাস্তবতা।

“আমার কথা যদি বলে থাকেন, ১২০ ওভার কিপিং করার পর যদি আবার চার নম্বরে ব্যাটিং করতে হয়, তাহলে আমি বলব এটা আমার একার দায়িত্ব নয়। শুধুমাত্র অধিনায়ক হিসেবেই নয়, প্রত্যেকটা ক্রিকেটারের একটা অনুমাপক থাকে খেলার। টেস্টে এমনটা হতে পারে না যে আপনি আগে ব্যাটিং পেলে চারে খেলবেন, পরে ব্যাটিং পেলে আপনি ছয়ে খেলবেন। সুনির্দিষ্ট জায়গা থাকে। আমার জন্য কাজটি অনেক চ্যালেঞ্জিং।”

নিজেই যখন নিজের ভূমিকার টানাপোড়েনের প্রসঙ্গ আনলেন, জানতে চাওয়া হলো তার চাওয়া। কিপিং করতে চান? কোথায় ব্যাট করতে চান! মুশফিকের উত্তরে ফুটে উঠল অসহায়ত্ব।

“এটাতো আসলে আমার ইচ্ছাতে হচ্ছে না। আমি যে শ্রীলঙ্কাতে কিপিং করিনি, সেটাও আমার ইচ্ছাতে ছিল না! আমার কিপিংয়ে কখনোই আপত্তি ছিল না। আমি ৪০-৫০ বছর খেলব না, হয়তো ৫-৬ বছর খেলবো। আমি চেষ্টা করি, দলের জন্য যতটুকু সম্ভব সেরাটা দেওয়ার।”

“অধিনায়কত্ব না থাকলেও আমার কোন সমস্যা নেই। কিপিং না থাকলেও সমস্যা নেই। আমি ব্যক্তিগতভাবে অনুভব করি যে শতভাগ দিতে পারছি কিনা। প্রয়োজনে দ্বাদশ খেলোয়াড় হিসেবেও শতভাগ দিতে আমি রাজি। সেটাতে আমার সমস্যা নেই। আমার মনে হয় উপরে যারা আছেন তাদেরকে এই প্রশ্নটা করা ভালো। সেক্ষেত্রে আমিও আমার দিক থেকে পরিষ্কার হয়ে যাই। ইনপুট আরও ভালো ভাবে দিতে পারি।”

মুশফিকের কথায় ফুটে ওঠে অসহায়ত্ব। জাগে বেশ কিছু প্রশ্নও। অধিনায়ক হয়েও কেন ভূমিকা নিয়ে তিনি অনিশ্চয়তায়? কেন টিম ম্যানেজমেন্ট বা কোচ তাকে পরিষ্কার করছেন না? কেন তিনি নিজেই জানতে চাচ্ছেন না বা জানতে পারছেন না? মুশফিকের আকুতি আর এই প্রশ্নগুলি ফুটিয়ে তুলছে টিম ম্যানেজমেন্টের মাঝে যোগাযোগের ঘাটতিও।