ইংলিশ ক্রিকেটারদের বিভ্রান্ত করতে ভাষার কৌশল নিয়েছিলেন বলে দাবি করলেন পাকিস্তানের সাজিদ খান।
Published : 26 Oct 2024, 12:16 PM
ফ্লাইট-টার্ন-স্পিনের বৈচিত্রে ইংলিশ ব্যাটসম্যানদের তো নাকানি-চুবানি খাইয়েই চলেছেন সাজিদ খান। এবার তিনি ইংলিশদের বিভ্রান্ত করেছেন কথার খেলা দিয়েও! তার দাবি, ব্যাটিং কৌশলের কথা ইচ্ছে করেই ইংলিশ ক্রিকেটারদের শুনিয়ে নিজেদের পক্ষে তা কাজে লাগিয়েছেন তারা।
রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের দ্বিতীয় দিনের ঘটনা সেটি। সাউদ শাকিলের সঙ্গে সাজিদ খানের জুটি চলছে তখন। ৮৬তম ওভারের চতুর্থ বলে শাকিল সিঙ্গেল নেওয়ায় স্ট্রাইক পান সাজিদ। এরপর দুজন ক্রিজে একত্র হয়ে আলোচনা করতে থাকেন। স্টাম্প মাইকের তোয়াক্কা না করে বেশ জোরেই কথা বলতে থাকেন দুজন।
লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যান হিসেবে ওভারের শেষ দুই বল কোনোরকমে কাটিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবেন সাজিদ, এমনটিই সাধারণত হওয়ার কথা। কিন্তু পরের বলেই ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে অফ স্পিনার শোয়েব বাশিরকে গ্যালারিতে আছড়ে ফেলেন সাজিদ।
দিনের খেলা শেষে সাজিদ সংবাদমাধ্যমে বলেন, ওই সময়টায় ইচ্ছে করেই উর্দুতে জোরে জোরে কথা বলছিলেন তারা, যাতে ইংল্যান্ডের পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত দুই ক্রিকেটার শোয়েব বাশির ও রেহান আহমেদ তা বুঝতে পারেন। বাশির ও রেহানর জন্ম ও বেড়ে ওঠা ইংল্যান্ডে হলেও পারিবারিক সূত্রে উর্দু বুঝতে পারেন দুজনই।
সেটি মাথায় রেখেই তারা কৌশলটি খাটিয়েছিলেন বলে জানান সাজিদ।
“আমরা ওরকম (জোরে জোরে উর্দুতে বলা) করছিলাম ওদের বোলারদের বিভ্রান্ত করতে। রেহান ও শোয়েব উর্দু বুঝতে পারে। ওদেরকে বোকা বানাতে চেয়েছিলাম আমরা। ওদেরকে শুনিয়ে শুনিয়ে বলছিলাম যে, সিঙ্গেল নিয়ে খেলব। এজন্যই ওরা ফিল্ডার ওপরে তুলে আনে এবং বোলাররা ফ্লাইট দিতে থাকে। সাউদ আমাকে বলেছিল, ওরা এরকম করলেই যেন বড় শট খেলি। মাঝামাঝি কিছু নেই, যতটা জোরে সম্ভব, বলে যেন হিট করি।”
সাজিদকে সেটিই করতে দেখা যায়। ৮৬তম ওভারে ওই ছক্কার পর বাশিরের পরের ওভারে দুটি ছক্কা ও এক চার মারেন সাজিদ। ওভার থেকে আসে ১৯ রান। পরে বাশিরকে সরিয়ে ওই প্রান্তে লেগ স্পিনার রেহানকে আক্রমণে আনেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক বেন স্টোকস।
রেহানের বলে অবশ্য বড় শট খেলতে পারেননি তারা। নবম উইকেটে শাকিল ও সাজিদের ৭২ রানের জুটি ভাঙেন শেষ পর্যন্ত পেসার গাস অ্যাটকিনসন। ১৩৪ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে ফেরেন শাকিল।
তবে ৯ নম্বরে নামা নোমান আলির ৪৫ ও ১০ নম্বরে নামা সাজিদ খানের ৪৮ রানের অপরাজিত ইনিংসের বড় ভূমিকা ছিল পাকিস্তানের লিড পাওয়ায়।
আগের টেস্টে বল হাতে তারা দুজন মিলেই ২০ উইকেট নিয়ে জয় এনে দিয়েছিলেন দলকে। এই টেস্টেও প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেট শিকার করেন সাজিদ, নোমান ৩টি। এরপর ব্যাটিংয়ে ইংলিশদের যন্ত্রণা দেন দুজন।
সাজিদের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংসটি প্রশংসা করছেন রেহান আহমেদও। তবে চার উইকেট শিকার করা তরুণ ইংলিশ লেগ স্পিনার উড়িয়ে দিয়েছেন সাজিদের কথার কৌশলের দাবিকে।
“সে আমাকে মোটেও বোকা বানায়নি। মিডিয়ার জন্য (প্রচার পেতে) এসব বলে থাকতে পারে। আমি তো তার কোনো কথা ভালোভাবে শুনতেই পাইনি! যতটুকু শুনেছিলাম, সে বলছিল যে, এই বলটিকে আলতো করে খেলার চেষ্টা করবে সে। তবে আমি জানতাম সে বড় শট খেলতে চাইবে। এটা তাই কাজে দেয়নি।”
“সে দারুণ ব্যাট করেছে। কয়েকটি বড় শট খেলেছে। তবে আমাকে বা ব্যাশকে (বাশির) বোকা বানায়নি সে।”