নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে ডাকওয়ার্থ-লুইস-স্টার্ন পদ্ধতিতে ৪৪ রানে হেরেছে নাজমুল হোসেন শান্তর নেতৃত্বাধীন দল।
Published : 17 Dec 2023, 02:21 AM
নিউ জিল্যান্ড: ৩০ ওভারে ২৩৯/৭
বাংলাদেশ: (লক্ষ্য ৩০ ওভারে ২৪৫) ৩০ ওভারে ২০০/৯
বিশ্বকাপে ভরাডুবির পর প্রথমবারের মতো ওয়ানডে খেলতে নামছে বাংলাদেশ। এই সংস্করণে নিজেদের ‘কঠিনতম’ চ্যালেঞ্জ দিয়েই শুরু হচ্ছে নতুন পথ চলা। নাজমুল হোসেন শান্তর নেতৃত্বাধীন দল নামছে নিউ জিল্যান্ডে সাদা বলের ক্রিকেটে স্বাগতিকদের বিপক্ষে নিজেদের প্রথম জয়ের লক্ষ্যে।
ডানেডিনে বাংলাদেশ সময় ভোর ৪টায় শুরু হবে প্রথম ওয়ানডে।
নিউ জিল্যান্ড সফরে গিয়ে প্রতিবার একই ফল নিয়ে দেশে ফেরে বাংলাদেশ। ব্যতিক্রম শুধু গত বছর, সেবার অসাধারণ ক্রিকেট খেলে জিতে যায় একটি টেস্টে! তবে ওয়ানডেতে সেই অপূর্ণতা ঘোচানোর চ্যালেঞ্জ মুশফিকুর রহিম, লিটন দাসদের সামনে।
বিশ্রাম ও চোট মিলিয়ে এই সিরিজের জন্য এক রকম নতুন চেহারার দল নিয়ে নামছে নিউ জিল্যান্ড। তাই কিছুটা হলেও বাড়ছে বাংলাদেশের সুযোগ। তবে চোট সমস্যা আছে বাংলাদেশ দলেও। তাই চ্যালেঞ্জটা কঠিনই হওয়ার কথা শান্তদের জন্য।
সিরিজের প্রথম ম্যাচে টস জিতলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। বাংলাদেশ অধিনায়ক নিলেন ফিল্ডিং। নিউ জিল্যান্ড অধিনায়ক টম ল্যাথাম জানালেন, টস জিতলে আগে বোলিং করতেন তিনিও।
দলে ফেরা সৌম্য সরকার ও আফিফ হোসেনের সঙ্গে একাদশে জায়গা পেয়েছেন এনামুল হক। বিশ্বকাপের শেষ পর্যায়ে ডাক পেলেও সেবার খেলার সুযোগ হয়নি এই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানের।
তিনজনই সবশেষ ওয়ানডে খেলেছিলেন গত সেপ্টেম্বরে। এশিয়া কাপে ভারতের বিপক্ষে খেলেছিলেন এনামুলন, পাকিস্তানের বিপক্ষে আফিফ। দেশের মাটিতে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে সবশেষ খেলেছিলেন সৌম্য।
একাদশে জায়গা হয়নি ওপেনার তানজিদ হাসান, পেসার তানজিম হাসান, বাঁহাতি স্পিনার রাকিবুল হাসান ও লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেনের।
বাংলাদেশ একাদশ: নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), এনামুল হক, তাওহিদ হৃদয়, মুশফিকুর রহিম, লিটন কুমার দাস, আফিফ হোসেন, সৌম্য সরকার, মেহেদী হাসান মিরাজ, মুস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম, হাসান মাহমুদ।
চোট ও বিশ্রামের জন্য প্রথম পছন্দের অনেক খেলোয়াড়ই নেই নিউ জিল্যান্ড দল। তাই বিশ্বকাপে খেলা সবশেষ একাদশ থেকে এসেছে অনেক পরিবর্তন। অভিষেক হচ্ছে পেসার উইল ও’রোক ও বোলিং অলরাউন্ডার জশ ক্লার্কসন।
জায়গা হয়নি চোটের সঙ্গে লড়াই করা পেস বোলিং অলরাউন্ডার কাইল জেমিসনের।
নিউ জিল্যান্ড একাদশ: টম ল্যাথাম (অধিনায়ক), টম ব্লান্ডেল, মার্ক চ্যাপম্যান, জশ ক্লার্কসন, জ্যাকব ডাফি, অ্যাডাম মিল্ন, হেনরি নিকোলস, উইল ও’রোক, রাচিন রবীন্দ্র, ইশ সোধি, উইল ইয়াং।
টসের একটু পর বৃষ্টি নেমেছে ডানেডিনে। ঢেকে দেওয়া হয়েছে সেন্টার উইকেট। দেরি হচ্ছে খেলা শুরু হতে।
গুঁড়িগুঁড়ি থামায় জেগেছে ম্যাচ শুরুর আশা। চলছে মাঠ প্রস্তুতের কাজ। ফিল্ডিংয়ে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ।
নতুন করে বৃষ্টি শুরু না হলে বাংলাদেশ সময় ভোর ৫ টা ১০ মিনিটে শুরু হবে ম্যাচ। এক ঘণ্টা ১০ মিনিট সময় নষ্ট হওয়ায় ম্যাচের দৈর্ঘ্য কমে নেমে এসেছে ৪৬ ওভারে।
প্রথম ওভারেই নিউ জিল্যান্ডের শুরুর জুটি ভাঙল বাংলাদেশ। শরিফুল ইসলামের দারুণ এক ডেলিভারিতে শূন্য রানেই ফিরলেন রাচিন রবীন্দ্র।
বাঁহাতি পেসারের প্রথম বলে চার মেরে শুরু করেন উইল ইয়াং। পরের বল থার্ড ম্যানে খেলে নেন সিঙ্গেল।
মুখোমুখি হওয়া প্রথম বল ছেড়ে দেন রাচিন। পরের বল খেলার চেষ্টায় হন কটবিহাইন্ড। অফ স্টাম্পের একটু বাইরের বল ব্যাটের কানা ছুঁয়ে জমা পড়ে মুশফিকুর রহিমের গ্লাভসে।
এক বল পর আবার আঘাত হানলেন শরিফুল ইসলাম। বাঁহাতি এই পেসার ফিরিয়ে দিলেন হেনরি নিকোলসকে।
অফ স্টাম্পের বাইরের বল আরও বেরিয়ে যাচ্ছিল। পা বাড়িয়ে ডিফেন্স করতে চেয়েছিলেন নিকোলস। ঠিক মতো পারেননি, ব্যাটের কানা ছুঁয়ে চলে যায় দ্বিতীয় স্লিপে। সেখানে কোনো ভুল করেননি এনামুল হক।
২ বল খেলে রানের খাতা খুলতে পারেননি নিকোলস।
১ ওভারে নিউ জিল্যান্ডের রান ২ উইকেট ৫। ক্রিজে উইল ইয়াংয়ের সঙ্গী টম ল্যাথাম।
প্রথম ওভারেই শরিফুল ইসলামের হাত ধরে এসেছিল ২ উইকেট। পাওয়ার প্লের বাকি সময় মেলেনি আর কোনো সাফল্য।
৯ ওভারে নিউ জিল্যান্ডের রান ২ উইকেটে ৩৫।
২৬ বলে দুই চারে ১০ রানে খেলছেন উইল ইয়াং। ম্যাচের প্রথম বলে বাউন্ডারি হাঁকানোর পর নিজেকে বেশ গুটিয়ে নিয়েছেন তিনি। একটু দ্রুত রান তোলার চেষ্টায় আছেন টম ল্যাথাম। ২৪ বলে বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান করেছেন ১৮ রান।
পিচে পেসারদের জন্য বেশ সহায়তা আছে। ব্যাটসম্যানদের বেশ পরীক্ষায়ও ফেলছেন পেসাররা। কিন্তু প্রথম ওভারের পর আর উইকেট নিতে পারেননি তারা। ধীরে হলেও জুটি গড়ছেন ল্যাথাম ও ইয়াং।
সৌম্য সরকারের ব্যর্থতায় বেঁচে গেলেন টম ল্যাথাম। মুস্তাফিজুর রহমানের বলে খোঁচা মেরে স্লিপে ক্যাচ দিয়েছিলেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান।
শর্ট অব লেংথ ডেলিভারি একটু বাড়তি বাউন্স করায় ঠিক মতো খেলতে পারেননি ল্যাথাম। ব্যাটের কানায় লেগে দ্রুত গতিতে যায় স্লিপে। সেখানে দুই হাতে চেষ্টা করলেও মুঠোয় নিতে পারেননি সৌম্য।
সে সময় ১৮ রানে ছিলেন নিউ জিল্যান্ড অধিনায়ক।
১০ ওভারে স্বাগতিকদের রান ২ উইকেটে ৩৭।
মুস্তাফিজুর রহমানের খরুচে ওভারে পঞ্চাশ স্পর্শ করল নিউ জিল্যান্ডের রান। বাঁহাতি পেসার নিজের তৃতীয় ওভারে দিয়েছেন ১০ রান।
৫০ রান করার পথে অতিরিক্ত থেকে ১২ রান পেয়েছে স্বাগতিকরা।
১২ ওভারে নিউ জিল্যান্ডের রান ২ উইকেটে ৫৩।
দ্রুত ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া নিউ জিল্যান্ডকে টানছেন উইল ইয়াং ও টম ল্যাথাম। দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে দুই জনে গড়েছেন পঞ্চাশ রানের জুটি, ৬৭ বলে।
জুটি পঞ্চাশ স্পর্শ করার পর কট বিহাইন্ডের রিভিউ নিয়ে ব্যর্থ হয়েছে। হাসান মাহমুদের দারুণ ডেলিভারি একটুর জন্য ইয়াংয়ের ব্যাটের কানা নেয়নি।
১৩ ওভারে নিউ জিল্যান্ডের রান ২ উইকেটে ২ উইকেটে ৫৬। ৩৬ বলে ১৭ রানে খেলছেন ইয়াং। ৩৮ বলে ল্যাথামের রান ২৬।
ওভার শেষ করতে পারলেন না মুস্তাফিজুর রহমান। এর আগেই সতীর্থদের সঙ্গে মাঠ ছাড়লেন বাঁহাতি এই পেসার। ফের বৃষ্টি নেমেছে। বন্ধ হয়ে গেছে খেলা।
১৩.৫ ওভারে নিউ জিল্যান্ডের রান ২ উইকেটে ৬৩।
টসের পর প্রথম দফায় বৃষ্টি নামে। তাই নির্ধারিত সময়ের ১ ঘণ্টা ১০ মিনিট পর খেলা শুরু হয়। এতে ম্যাচের দৈর্ঘ্য কমে নেমে আসে ৪৬ ওভারে।
ফের বৃষ্টি নামায় ম্যাচের দৈর্ঘ্য কমতে পারে আরও।
দ্বিতীয় দফা বৃষ্টিতে হারিয়ে গেল আরও ৬ ওভার। ম্যাচের দৈর্ঘ্য নেমে এলো ৪০ ওভারে।
বাংলাদেশ সময় সকাল ৭টা ১০ মিনিটে ফের শুরু হবে খেলা। দুই দফা বৃষ্টিতে সব মিলিয়ে খেলা বন্ধ থাকছে প্রায় দুই ঘণ্টা।
দ্বিতীয় দফা বৃষ্টির পর রানের গতি বাড়িয়েছে নিউ জিল্যান্ড। ১৯তম ওভারের প্রথম বলে মেহেদী হাসান মিরাজকে ছক্কায় উড়িয়ে দলের রান তিন অঙ্কে নিয়ে গেছেন উইল ইয়াং।
৭০ বলে পঞ্চাশ ছুঁয়েছিল নিউ জিল্যান্ডের রান। একশ হয়েছে ১০৯ বলে। পরের পঞ্চাশ রান এসেছে কেবল ৩৯ বলে।
১৯ ওভারে নিউ জিল্যান্ডের রান ২ উইকেটে ১০৪।
ম্যাচে তৃতীয়বারের মতো হানা দিল বৃষ্টি। আরও একবার বন্ধ হলো খেলা। জাগল ম্যাচের দৈর্ঘ্য আরও কমার শঙ্কা।
হাসান মাহমুদের প্রথম বলে ২ রান নেন টম ল্যাথাম। এতে জুটির রান স্পর্শ করে একশ, ১১০ বলে। তার পঞ্চাশ এসেছিল ৬৭ বলে।
একই সঙ্গে চার হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন ল্যাথাম। এই তালিকায় তিনি নিউ জিল্যান্ডের দ্বাদশ ব্যাটসম্যান।
পরের বলে ২ রান নিয়ে পঞ্চাশ স্পর্শ করেন ল্যাথাম। ১৮ রানে সৌম্যর হাতে জীবন পাওয়া নিউ জিল্যান্ড অধিনায়ক ৫৮ বলের ইনিংসে মেরেছেন ৬টি চার।
১৯.২ ওভারে স্বাগতিকদের রান ২ উইকেটে ১০৮।
তৃতীয় দফার বৃষ্টিতে ভেসে গেল প্রায় পৌনে দুই ঘণ্টা। এর প্রভাব পড়ল ম্যাচের দৈর্ঘ্যে। আরেক দফা কমল ওভার। ৫০ ওভারের ম্যাচে এখন খেলা হবে ৩০ ওভার।
টসের পরের বৃষ্টিতে ওভার কমেছিল ৪, পরের দফার বৃষ্টিতে ৬। এবার কমল আরও ১০ ওভার।
বাংলাদেশ সময় সকাল সোয়া নয়টায় ফের মাঠে গড়াবে লড়াই।
বাংলাদেশ ইনিংসে প্রথম পাওয়ার প্লে হবে ৬ ওভার, তৃতীয় পাওয়ার প্লে হবে শেষ ৬ ওভার। একজন বোলার সর্বোচ্চ ৬ ওভার বোলিং করতে পারবেন।
বৃষ্টির পর আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে রানের গতি বাড়িয়েছেন উইল ইয়াং ও টম ল্যাথাম। দুজন মিলে এরই মধ্যে যোগ করেছেন ১৫০ রান।
বাংলাদেশের বিপক্ষে তৃতীয় উইকেটে এটিই নিউ জিল্যান্ডের সর্বোচ্চ জুটি। আগের সর্বোচ্চ ১৩১ রান ছিল ২০১৫ সালে মার্টিন গাপটিল ও রস টেলরের।
২৪ ওভারে নিউ জিল্যান্ডের সংগ্রহ ২ উইকেটে ১৫৯ রান। ল্যাথাম ৮২, ইয়াং ৬১ রানে অপরাজিত।
নিজের কোটার ৬ ওভার শেষ করেছেন শরিফুল ইসলাম। ২৮ রান খরচায় তিনি ধরেছেন ২ শিকার। ষষ্ঠ বোলার হিসেবে আক্রমণে আনা হয়েছে আফিফ হোসেনকে।
তৃতীয় দফা বৃষ্টির পর খুনে ব্যাটিংয়ে এগোচ্ছিলেন টম ল্যাথাম। তাকে বোল্ড করে থামালেন মেহেদী হাসান মিরাজ।
অফ স্পিনারের বল লেগে টেনে ছক্কা মারতে চেয়েছিলেন ল্যাথাম। ঠিক মতো খেলতে পারেননি, ব্যাটের কানায় লেগে এলোমেলো করে দেয় স্টাম্প। ভাঙে ১৪৫ বল স্থায়ী ১৭১ রানের জুটি।
৭৭ বলে তিন ছক্কা আর নয় চারে ৯২ রান করেন ল্যাথাম।
ক্রিজে গিয়েই চার মারে রানের খাতা খুলেন মার্ক চাপম্যান। দুই বল পর মারেন ছক্কা।
২৬ ওভারে নিউ জিল্যান্ডের রান ৩ উইকেটে ১৮৭।
শুরুর মন্থর ব্যাটিং ছাপিয়ে বড় স্কোরের পথে এগিয়ে গেছে নিউ জিল্যান্ড। ২৭তম ওভারে তারা পূর্ণ করেছে দলীয় দুইশ রান।
একশ রান করতে স্বাগতিকদের লেগেছিল ১৯ ওভার। সেখান থেকে ৮ ওভারের মধ্যে এসেছে পরের একশ রান।
২৭ ওভারে নিউ জিল্যান্ডের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ২০৫ রান। উইল ইয়াং ৭২, মার্ক চ্যাপম্যান ১৮ রানে খেলছেন।
তিন পেসারই শেষ করেছেন নিজেদের কোটার ৬ ওভার। তাই শেষ ৩ ওভারে বোলিং করতে হবে মেহেদী হাসান মিরাজ, সৌম্য সরকার, আফিফ হোসেনদের।
অসম্ভব একটি রানের চেষ্টা করতে চেয়েছিলেন মার্ক চ্যাপম্যান। তবে সম্ভব নয় বুঝে তাকে ফিরিয়ে দেন উইল ইয়াং। কিন্তু এতোটা এগিয়ে গিয়েছিলেন যে ফিরতে পারেননি চ্যাপম্যান।
১১ বলে দুই ছক্কা ও এক চারে ২০ রান করে ফেরেন চ্যাপম্যান।
২৯ ওভারে নিউ জিল্যান্ডের রান ৪ উইকেটে ২৩১।
মেহেদী হাসান মিরাজের বলে কভার দিয়ে চার মেরে নব্বইয়ে ঢুকলেন উইল ইয়াং। পরের বলে ছক্কা মেরে পৌঁছে গেলেন ৯৯ রানে। এক বল পর সিঙ্গেল নিয়ে তিনি পূর্ণ করলেন ক্যারিয়ারের তৃতীয় সেঞ্চুরি।
জাদুকরী তিন অঙ্ক ছুঁতে ইয়াং খেলেছেন স্রেফ ৮২ বল। ১৩ চারের সঙ্গে মেরেছেন ৪টি ছক্কা। অথচ ফিফটি করতে তার লেগেছিল ৬১ বল। পরের পঞ্চাশ রান করেছেন স্রেফ ২১ বলে। যেখানে ৭ চারের সঙ্গে মেরেছেন ২টি ছক্কা।
সেঞ্চুরি ছুঁয়ে বেশিদূর যেতে পারলেন না উইল ইয়াং। ঝুঁকিপূর্ণ ২ রান নেওয়ার চেষ্টায় ফিরে গেলেন রান আউট হয়ে।
এনামুল হকের থ্রো ধরে মুশফিকুর রহিম স্টাম্প ভেঙে দেওয়ার সময় বেশ দূরে ছিলেন ইয়াং। ৮৪ বলে চার ছক্কা ও ১৪ চারে তিনি করেন ১০৫ রান।
শেষ ৩ বলে দ্বিতীয় রান নেওয়ার চেষ্টায় রান আউট হয়ে যান টম ব্লান্ডেল ও জশ ক্লার্কসন। ইয়াংয়ের মতোই এনামুলের থ্রোয়ে রান আউট হন ব্লান্ডেল (১)।
অভিষেকে ১ রান করে ফেরেন ক্লার্কসন। নাজমুল হোসেন শান্তর থ্রো ধরে রান আউট হয়ে যান তিনি।
তৃতীয় দফা বৃষ্টির পর আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে বড় সংগ্রহ গড়েছে নিউ জিল্যান্ড। শেষ ১০.৪ ওভারে ১৩১ রান যোগ করেছে স্বাগতিকরা!
ঝড়ের সবচেয়ে ঝাপটা গেছে সৌম্য সরকারের উপর দিয়ে। ৬ ওভারে তিনি দিয়েছেন ৬৩ রান। মেহেদী হাসান মিরাজের ৬ ওভার থেকে এসেছে ৫৩ রান।
খরুচে বোলিংয়ে মুস্তাফিজুর রহমান ৬ ওভারে দিয়েছেন ৪৭ রান।
শরিফুল ইসলাম ও হাসান মাহমুদ ৬ ওভারে দিয়েছেন ২৮ রান করে। শরিফুল নিয়েছেন দুটি উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
নিউ জিল্যান্ড: ৩০ ওভারে ২৩৯/৭ (ইয়াং ১০৫, রাচিন ০, নিকোলস ০, ল্যাথাম ৯২, চ্যাপম্যান ২০, ক্লার্কসন ১, ব্লান্ডেল ১, মিল্ন ১*; শরিফুল ৬-১-২৮-২, হাসান ৬-০-২৮-০, মুস্তাফিজ ৬-০-৪৭-০, সৌম্য ৬-০-৬৩-০, মিরাজ ৫-০-৫৩-১, আফিফ ১-০-১৭-০)
শুরুর ভালো বোলিংয়ের ধারা পড়ে আর ধরে রাখতে পারেনি বাংলাদেশ। শেষ দিকে সৌম্য সরকার ও মেহেদী হাসান মিরাজের উপর চড়াও হয়ে রান বাড়িয়ে নিয়েছে নিউ জিল্যান্ড।
৩০ ওভারে স্বাগতিকরা ৭ উইকেটে করেছে ২৩৯ রান। ডাকওয়ার্থ-লুইস-স্টার্ন পদ্ধতিতে বাংলাদেশ পেয়েছে ২৪৫ রানের লক্ষ্য।
বাংলাদেশ থেকে নিউ জিল্যান্ড, মিরপুর থেকে ডানেডিন। দেশ বদলেছে, বদলেছে ভেন্যুও। বদলায়নি সৌম্য সরকারের রান। বিশ্বকাপের আগে কিউইদের বিপক্ষে সবশেষ ম্যাচে শূন্য রানে আউট হয়েছিলেন তিনি। বিশ্বকাপের পর একই দলের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচেও তিনি ফিরেছেন খালি হাতে।
অ্যাডাম মিল্নের লেগ স্টাম্পে পিচ করে অফ স্টাম্পের দিকে মুভ করা ডেলিভারি খোঁচা মারেন সৌম্য। তার ব্যাটের বাইরের কানায় লেগে বল জমা পড়ে দ্বিতীয় স্লিপে থাকা টম ল্যাথামের হাতে। ৪ বল খেলে রানের খাতা খুলতে পারেননি সৌম্য।
তিন নম্বরে নেমেছেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। ২ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ১ উইকেটে ৫ রান। ২ রানে খেলছেন এনামুল হক।
জ্যাকব ডাফির বলে দারুণ ফ্লিক শটে ইনিংসের প্রথম বাউন্ডারি মারলেন এনামুল হক। পরের বলেই অল্পের জন্য বাঁচলেন ক্যাচ আউট থেকে।
লেগ স্টাম্পের ওপর করা ডেলিভারি আবারও ফ্লিক করার চেষ্টা করেন এনামুল। এবার কানায় লেগে বল উঠে যায় আকাশে। বাম দিকে অনেকটা পথ দৌড়ে বলের কাছে যান উইকেটরক্ষক টম ব্লান্ডেল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে গ্লাভসে নিতে পারেননি।
তখন ৮ রানে খেলছিলেন এনামুল।
৪ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ১ উইকেটে ২০ রান। এনামুল ১১, নাজমুল হোসেন শান্ত ৭ রানে অপরাজিত।
ষষ্ঠ ওভারের শেষ দুই বলে দুই চার মেরে রানের গতি বাড়িয়ে নিয়েছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ইশ সোধির করা পরের ওভারে আবারও দ্রুত রানের খোঁজে তিনি বিলিয়ে দিয়েছেন নিজের উইকেট।
লেগ স্টাম্পের ওপর করা ফুল লেংথ ডেলিভারি রিভার্স সুইপ খেলার চেষ্টা করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। ব্যাটে লাগেনি বল। সোজা আঘাত করে স্টাম্পে। বিদায়ঘণ্টা বাজে ২ চারে ১৩ বলে ১৫ রান করা শান্তর।
চার নম্বরে নেমেছেন লিটন কুমার দাস। এনামুল হক খেলছেন ২৪ বলে ২৮ রানে।
৭ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ২ উইকেটে ৪৮ রান।
অষ্টম ওভারে পূর্ণ হয়েছে বাংলাদেশের পঞ্চাশ রান। বিপরীতে ড্রেসিং রুমের পথ ধরেছেন সৌম্য সরকার, নাজমুল হোসেন শান্ত। জুটি গড়ার চেষ্টায় এখন ক্রিজে এনামুল হক, লিটন কুমার দাস।
৮ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ২ উইকেটে ৫২ রান। এনামুল ২৮ বলে ২৯, লিটন ৩ বলে ৩ রানে খেলছেন।
নবম ওভারের প্রথম ডেলিভারি মিডল স্টাম্পের ওপর কিছুটা টেনে দিয়েছিলেন ইশ সোধি। সুযোগ কাজে লাগাতে ভুল করলেন না লিটন কুমার দাস। পেছনের পায়ে ভর করে পুল শটে মারলেন ইনিংসের প্রথম ছক্কা।
শর্ট অব লেংথ ডেলিভারি পুল শটের চেষ্টা করলেন এনামুল হক। কিন্তু ঠিকভাবে খেলতে পারলেন না। বল উঠে গেল আকাশে। নন স্ট্রাইক প্রান্তে পপিং ক্রিজের ডানে সরে নিজের বলে ফিরতি ক্যাচ নিলেন অভিষিক্ত পেসার জশ ক্লার্কসন।
অথচ আগের বলেই ফ্লিক শটে বাউন্ডারি মেরেছিলেন এনামুল। পরের বলে আবারও বড় শটের চেষ্টায় তিনি দিয়েছেন নিজের উইকেট। ৫ চারে ৩৯ বলে করেছেন ৪৩ রান।
পাঁচ নম্বরে নেমেছেন তাওহিদ হৃদয়। ১৭ রানে খেলছেন লিটন কুমার দাস।
১২ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ৮৩ রান।
আউট হয়ে অনেকক্ষণ হতাশায় দাঁড়িয়ে রইলেন লিটন দাস। অবিশ্বাস্য আউট যেন মানতেই পারছিলেন না তিনি।
জশ ক্লার্কসনের ডেলিভারি এমন আহামরি কিছু ছিল না। স্লোয়ার বাউন্সারে হুক করার জন্য তৈরি হয়ে গিয়েছিলেন লিটন। কিন্তু বল দেরিতে আসায় দ্বিধায় পড়ে যান তিনি। সেটাই কাল হয় তার জন্য। শেষ পর্যন্ত ব্যাট যথেষ্ট নামাননি, গ্লাভস ছুঁয়ে জমা পড়ে কিপার টম ব্লান্ডেলের গ্লাভসে।
১৯ বলে একটি করে ছক্কা ও চারে ২২ রান করেন লিটন।
১৪ ওভারে বাংলাদেশের রান ৪ উইকেটে ৯২। ক্রিজে তাওহিদ হৃদয়ের সঙ্গী মুশফিকুর রহিম।
আগের ওভারে ইশ সোধির বলে এলবিডব্লিউর রিভিউ নিলে হৃদয়ের উইকেটও পেত নিউ জিল্যান্ড। সে সময় ১ রানে ছিলেন তরুণ মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান।
রান তাড়ায় ক্রমেই পিছিয়ে পড়ছে বাংলাদেশ। ইনিংসের অর্ধেক পেরিয়ে স্রেফ একশ রান করেছে সফরকারীয়া। অষ্টম ওভারে পঞ্চাশ ছোঁয়ার পর তারা ষোড়শ ওভারে করেছে দলীয় একশ রান।
১৬ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ১০৩ রান। জয়ের জন্য ১৪ ওভারে করতে হবে আরও ১৪২ রান।
নাজমুল হোসেন শান্তর মতো রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে ফিরলেন মুশফিকুর রহিমও। অভিজ্ঞ মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানের বিদায়ে বাড়ল বিপদ।
রাচিন রবীন্দ্রর স্টাম্প তাক করে ডেলভারিতে ঠিক মতো শট খেলতে পারেননি মুশফিক। তার ব্যাটের কানা ছুঁয়ে প্যাডে লেগে উঠে যায় সহজ ক্যাচ। বাকিটা অনায়াসে সারেন টম ব্লান্ডেল। ১০ বলে মুশফিক করেন ৪. রান।
১৭ ওভারে বাংলাদেশের রান ৫ উইকেটে ১০৯। ক্রিজে তাওহিদ হৃদয়ের সঙ্গী আফিফ হোসেন।
ক্রিজে গিয়েই ঝড় তুলেছেন আফিফ হোসেন। তাকে দারুণ সঙ্গ দিচ্ছেন তাওহিদ হৃদয়। দুই তরুণে জুটিতে পঞ্চাশ এসেছে কেবল ৩১ বলে।
২২ ওভারে বাংলাদেশের রান ৫ উইকেটে ১৫৭। ২১ বলে ৩৪ রানে খেলছেন আফিফ। ২৬ বলে হৃদয়ের রান ৩৩। জয়ের জন্য শেষ ৮ ওভারে ৮৮ রান চাই সফরকারীদের।
বিপজ্জনক জুটি ভাঙলেন ইশ সোধি। লেগ স্পিনারকে ছক্কায় ওড়ানোর চেষ্টায় সীমানায় ধরা পড়লেন তাওহিদ হৃদয়।
অফ স্টাম্পের বাইরের বলে সুইপ করেন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। একটু বাড়তি বাউন্স করায় ঠিক মতো খেলতে পারেননি, ব্যাটের উপরের দিকে লেগে ক্যাচ চলে যায় ডিপ ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে। বাকিটা সারেন অ্যাডাম মিল্ন। ভাঙে ৩৮ বল স্থায়ী ৫৬ রানের জুটি।
২৭ বলে এক ছক্কা ও দুই চারে ৩৩ রান করেন হৃদয়।
২৩ ওভারে বাংলাদেশের রান ৬ উইকেটে ১৬১। ক্রিজে আফিফ হোসেনের সঙ্গী মেহেদী হাসান মিরাজ।
অ্যাডাম মিল্নকে ছক্কায় ওড়ানোর চেষ্টায় ফিরে গেলেন শরিফুল ইসলাম। বড় জয়ের পথে আরেক ধাপ এগিয়ে গেল নিউ জিল্যান্ড।
এই ওভারেই একবার ক্যাচ দিয়েও ‘নো’ বলের জন্য বেঁচে গিয়েছিলেন শরিফুল। কিন্তু শেষ বলে টিকতে পারলেন না। সীমানায় উইল ইয়াংয়ের এক হাতের দুর্দান্ত ক্যাচে ফিরলেন তিনি।
৮ বলে ৫ রান করেন শরিফুল।
২৬ ওভারে বাংলাদেশের রান ৮ উইকেটে ১৭৪। ক্রিজে মেহেদী হাসান মিরাজের সঙ্গী মাহমুদ।
বিশ্বকাপের পর প্রথম ওয়ানডেতে বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ে দেখা দেখ পুরনো রোগেরই ছাপ। ভালো শুরু পেলেন বেশ কয়েকজন কিন্তু ইনিংস বড় করতে পারলেন না কেউই, দলকে দায়িত্ব নিয়ে টানতে পারলেন না কেউই।
ব্যাটিংয়ের জন্য ভালো পিচ, ছোট বাউন্ডারি। হাতে যথেষ্ট উইকেট থাকলে শেষ দিকে দ্রুত রান তোলা অসম্ভব কিছু ছিল না। কিন্তু বাংলাদেশ হাতে যথেষ্ট উইকেট রাখতে পারেনি।
এক সময়ে পুরো ৩০ ওভার খেলা নিয়েও শঙ্কা জেগেছিল। মেহেদী হাসান মিরাজের ব্যাটে কোনোমতে সেটা কাটাতে পেরেছে।
অভিষেকে ম্যাচের শেষ বলে উইকেট পেয়েছেন উইলিয়াম ও’রোক। দারুণ এক ডেলিভারিতে বোল্ড করেছেন হাসান মাহমুদকে। ২১ বলে ২৮ রানে অপরাজিত ছিলেন মিরাজ।
বোলিংয়ে প্রথম ২০ ওভার মোটামুটি ভালো অবস্থানেই ছিল বাংলাদেশ। শেষ ১০ ওভারের রান বন্যায় চালকের আসনে বসে যায় নিউ জিল্যান্ড।
এই রানও পেরিয়ে যাওয়া অসম্ভব কিছু ছিল না। কিন্তু লম্বা সময় ধরে উইকেটে থাকতে পারেননি বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। গড়তে পারেননি খুব ভালো কোনো জুটি। আফিফ হোসেন ও তাওহিদ হৃদয় সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন কিন্তু তারা বিচ্ছিন্ন হন জুটি পঞ্চাশ ছোঁয়ার একটু পরেই।
এর বাইরে আর কোনো জুটি সেভাবে ভাবাতে পারেনি স্বাগতিকদের। উইল ইয়াংয়ের সেঞ্চুরি ও টম ল্যাথামের বিস্ফোরক ইনিংসে বড় পুঁজি গড়ার পর বোলারদের মিলিত অবদানে সহজ জয়ই পেয়েছে নিউ জিল্যান্ড।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
নিউ জিল্যান্ড: ৩০ ওভারে ২৩৯/৭ (ইয়াং ১০৫, রাচিন ০, নিকোলস ০, ল্যাথাম ৯২, চ্যাপম্যান ২০, ক্লার্কসন ১, ব্লান্ডেল ১, মিল্ন ১*; শরিফুল ৬-১-২৮-২, হাসান ৬-০-২৮-০, মুস্তাফিজ ৬-০-৪৭-০, সৌম্য ৬-০-৬৩-০, মিরাজ ৫-০-৫৩-১, আফিফ ১-০-১৭-০)
বাংলাদেশ: (লক্ষ্য ৩০ ওভারে ২৪৫) ৩০ ওভারে ২০০/৯ (সৌম্য ০, এনামুল ৪৩, শান্ত ১৫, লিটন ২২, হৃদয় ৩৩, মুশফিক ৪, আফিফ ৩৮, মিরাজ ২৮*, শরিফুল ৫, হাসান ৪; মিল্ন ৬-০-৪৬-২, ডাফি ৬-০-৩৯-১, ও’রোক ৫-০৩৫-১, সোধি ৬-০-৩৫-২, ক্লার্কসন ৪-০-২৪-২, রাচিন ৩-০-২০-১)