জিম্বাবুয়ে-পাকিস্তান সিরিজ
ওয়ানডে ক্যারিয়ারে প্রথম শতকে পাকিস্তানের ১০ উইকেটের জয়ের নায়ক ওপেনার সাইম আইয়ুব।
Published : 26 Nov 2024, 05:59 PM
ক্যারিয়ারের প্রথম ওয়ানডে চমৎকার বোলিংয়ে স্মরণীয় করে রাখলেন আবরার আহমেদ। তার ও সালমান আলি আগার স্পিনে প্রতিপক্ষকে দেড়শর আগে থামিয়ে দিল পাকিস্তান। পরে রান তাড়ায় তাণ্ডব চালালেন সাইম আইয়ুব। তার বিস্ফোরক সেঞ্চুরিতে জিম্বাবুয়েকে উড়িয়ে সিরিজে সমতা ফেরাল মোহাম্মদ রিজওয়ানের দল।
বুলাওয়ায়োতে মঙ্গলবার সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে পাকিস্তানের জয় ১০ উইকেটে।
এই সংস্করণে পঞ্চমবার রান তাড়ায় কোনো উইকেট না হারিয়ে জয়ের স্বাদ পেল এশিয়ার দলটি, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দ্বিতীয়বার।
আবরারের লেগ স্পিন ও সালমানের অফ স্পিনে জিম্বাবুয়েকে ১৪৫ রানে গুটিয়ে দেয় পাকিস্তান। পরে সাইমের খুনে ব্যাটিংয়ে ১৯০ বল বাকি থাকতেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় সফরকারীরা। ১০ উইকেটে পাকিস্তানের জয়ে এবারই সবচেয়ে কম বল লাগল।
বৃষ্টিবিঘ্নিত প্রথম ওয়ানডেতে ডাকওয়ার্থ লুইস-স্টার্ন (ডিএলএস) পদ্ধতিতে ৮০ রানে জিতে সিরিজে এগিয়ে গিয়েছিল জিম্বাবুয়ে। সিরিজ নির্ধারণী শেষ ওয়ানডে আগামী বৃহস্পতিবার।
পাকিস্তানকে জয়ের ভিত গড়ে দেওয়া আবরার ৩৩ রানে নেন ৪ উইকেট। ওয়ানডে অভিষেকে তার চেয়ে বেশি উইকেট নিতে পারেননি দেশটির আর কেউ। জাকির খান, আব্দুল কাদির ও সারফরাজ নাওয়াজও নিয়েছিলেন ৪টি করে উইকেট।
সালমান ধরেন ২৬ রানে ৩ শিকার। একটি করে প্রাপ্তি সাইম ও ফাইসাল আকরামের।
ম্যাচের দ্বিতীয়ভাগে সব আলো কেড়ে দেন সাইম। জিম্বাবুয়ের বোলারদের রীতিমতো কচুকাটা করে ১১৩ রান করেন তিনি। তার ৬২ বলের বিধ্বংসী ইনিংসে ৩ ছক্কার সঙ্গে চার ১৭টি। তাকে সঙ্গে দেওয়া আবদুল্লাহ শাফিক ৪টি চারে করেন ৩২ রান।
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা জিম্বাবুয়ের টাডিওয়ানাশে মারুমানি দ্বিতীয় ওভারে কাটা পড়েন রান আউটে। নিজের দ্বিতীয় ওভারে জয়লর্ড গাম্বিকে বোল্ড করে ওয়ানডেতে প্রথম উইকেটের স্বাদ নেন আবরার।
২৩ রানে দুই ওপেনারকে হারানো জিম্বাবুয়ের হাল ধরার চেষ্টা চালান ডিয়ন মায়ার্স ও ক্রেইগ আরভিন। পরপর দুই ওভারে থিতু দুই ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়ে দেন সালমান। কয়েক ওভার পর সিকান্দার রাজাও ধরা পড়েন সালমানের স্পিন জালে।
অভিজ্ঞ শন উইলিয়ামসকে এলবিডব্লিউ হন সাইমের স্পিনে। পরে নিজের টানা তিন ওভারে তিন শিকার ধরেন আবরার। ৩৩তম ওভারে থেমে যাওয়া জিম্বাবুয়ের ইনিংসে ফিফটি করতে পারেননি কেউ।
লক্ষ্য তাড়ায় আত্মবিশ্বাসী শুরু করেন সাইম। আলগা বল পেলেই বাউন্ডারিতে পাঠাতে থাকেন তিনি। সপ্তম ওভারে ৭ রানে থাকা শাফিকের ক্যাচ ছাড়ে জিম্বাবুয়ে।
দশম ওভারে ট্রেভর গয়ান্ডাকে চার ও ছক্কায় উড়িয়ে ৩২ বলে পঞ্চাশ স্পর্শ করেন সাইম। পাওয়ার প্লে শেষে পাকিস্তানের রান তখন ৭১।
ফিফটির পর আরও আগ্রাসী হয়ে ওঠেন সাইম। ব্র্যান্ডন মাভুটাকে টানা তিনটি চার মারেন তিনি। এই লেগ স্পিনারের পরের ওভারে হাঁকান ছক্কা ও চার। রাজাকে চার মেরে ৫৩ বলে কাঙ্ক্ষিত তিন অঙ্কে পা রাখেন বাঁহাতি ওপেনার সাইম। পঞ্চাশ থেকে একশ ছুঁতে তার লাগে কেবল ২১ বল।
ওয়ানডেতে পাকিস্তানের হয়ে সাইমের চেয়ে কম বলে সেঞ্চুরি আছে কেবল শাহিদ আফ্রিদির। ১৯৯৬ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৩৭ বলে এবং ২০০৫ সালে ভারতের বিপক্ষে ৪৫ বলে তিন অঙ্ক স্পর্শ করেন দেশটির সাবেক অধিনায়ক। সাইমের সমান ৫৩ বলেও সেঞ্চুরি আছে তার, ২০১০ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে।
রাজার পরের ওভারে চার মেরে দলকে কাঙ্ক্ষিত ঠিকানায় পৌঁছে দেন শাফিক।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
জিম্বাবুয়ে: ৩২.৩ ওভারে ১৪৫ (গাম্বি ৫, মারুমানি ৪, মায়ার্স ৩৩, আরভিন ১৮, উইলিয়ামস ৩১, রাজা ১৭, বেনেট ১৪, মাভুটা ৩, এনগারাভা ২, মুজারাবানি ১১, গোয়ান্ডু ১*; জামাল ৪-১-২৪-০, আবরার ৮-২-৩৩-৪, রউফ ৪-০-২৬-০, সালমান ৭-০-২৬-৩, সাইম ৪-০-১৬-১, ফাইসাল ৫.৩-০-১৯-১)
পাকিস্তান: ১৮.২ ওভারে ১৪৮/০ (সাইম ১১৩*, শাফিক ৩২*; মুজারাবানি ৫-০-৩০-০, এনগারাভা ৩-০-১৭-০, গোয়ান্ডু ২-০-২৪-০, রাজা ৪.২-০-৩০-০, মাভুটা ৪-০-৪৭-০)
ফল: পাকিস্তান ১০ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: সাইম আইয়ুব
সিরিজ: ৩ ম্যাচের সিরিজে ১-১ সমতা