৫১৫ রানের রেকর্ড গড়া টি-টোয়েন্টি শেষে রিজওয়ান বললেন, ‘পিচই এমন’

টি-টোয়েন্টি ম্যাচে সবচেয়ে বেশি রানের বিশ্বরেকর্ড হলো পাকিস্তান সুপার লিগের ম্যাচে।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 March 2023, 04:36 AM
Updated : 12 March 2023, 04:36 AM

পাকিস্তান সুপার লিগের (পিএসএল) রাওয়ালপিন্ডি অংশে রানের মহোৎসব চলছে কয়েক দিন ধরেই। তার পরও চোখ ছানাবড়া হতে পারে মুলতান সুলতান্স ও কোয়েটা গ্ল্যাডিয়েটর্সের ম্যাচের স্কোর দেখে। একটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ৫১৫ রান! শুধু এই টুর্নামেন্ট নয়, রানের জোয়ারে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের সব ম্যাচকেই ছাড়িয়ে গেল এই ম্যাচ। পরে বিজয়ী অধিনায়ক মোহাম্মদ রিজওয়ান বললেন, এমন উইকেটে বোলারদের কাজ কঠিন।

রাওয়ালপিন্ডি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শনিবার এই ম্যাচে রিজওয়ানের দল মুলতান ২০ ওভারে তোলে ২৬২ রান। পিএসএলের সব আসর মিলিয়ে যা সর্বোচ্চ। এমন পুঁজি গড়ে তাদের নিশ্চিন্তই থাকার কথা। কিন্তু অনেক লড়াই করে শেষ পর্যন্ত ম্যাচটি তাদের জিততে হয়েছে ৯ রানে। কোয়েটার ইনিংস থামে ২৫৩ রানে।

দুই দল মিলিয়ে এই ম্যাচের রান ৫১৫। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের প্রায় ২০ বছরের পথচলায় এক ম্যাচে এত রান আগে কখনও হয়নি।

৫০০ রানের টি-টোয়েন্টি ম্যাচ আগে ছিল একটিই। গত অক্টোবরে দক্ষিণ আফ্রিকার ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি ম্যাচে রান উঠেছিল ৫০১। পচেফস্ট্রুমে সেদিন ডেওয়াল্ড ব্রেভিসের ৫৭ বলে ১৬২ রানের ইনিংসে টাইটান্স তোলে ২৭১ রান। নাইটস রান তাড়ায় যেতে পারে ২৩০ পর্যন্ত।

পিএসএলে এই ম্যাচের আগের দিনই পেশাওয়ার জালমির ২৪২ রান টপকে ৫ বল বাকি রেখে জিতেছে মুলতান। গত বুধবার পেশাওয়ার জালমির বিপক্ষেই ২৪০ রান টপকে কোয়েটা জিতে গেছে ১০ বল বাকি রেখেই। এর আগের দিন ইসলামাবাদ ইউনাইটেড জিতেছে মুলতানের ২০৫ রান তাড়ায়।

শনিবারের ম্যাচে মুলতান রেকর্ড রানের পথে ছুটতে থাকে উসমান খানের সৌজন্যে। এবারের পিএসএলে আগে স্রেফ একটি ম্যাচ খেলে শূন্য রানে আউট হয়ে আর সুযোগই পাচ্ছিলেন না তিনি। অবশেষে আরেকটি সুযোগ পেয়ে বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে ৩৬ বলের সেঞ্চুরিতে গড়লেন পিএসএলের দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড। রিজওয়ানের সঙ্গে উদ্বোধনী জুটিতে ১৫৬ রান তোলেন অবিশ্বাস্যভাবে স্রেফ ১০ ওভারে!

উসমানের ৪৩ বলে ১২০, রিজওয়ানের ২৯ বলে ৫৫, টিম ডেভিডের ২৫ বলে অপরাজিত ৪৩ ও কাইরন পোলার্ডের ১৪ বলে অপরাজিত ২৩ রানে মুলতান পৌঁছে যায় ২৬২ রানে।

কোয়েটার আফগান লেগ স্পিনার কাইস আহমেদের ৪ ওভারে রান আসে ৭৭। পিএসএলে এই প্রথম কোনো বোলার ৪ ওভারে ৭০ রানের বেশি গুনলেন। শহিদ আফ্রিদির ৪ ওভারে ৬৭ রান ছিল আগের সবচেয়ে খরুচে বোলিংয়ের রেকর্ড।

রান তাড়ায় কোয়েটা দ্বিতীয় ওভারে জেসন রয়কে হারালেও লড়াইয়ে হাল ছাড়েনি। মার্টিন গাপটিল ১৪ বলে করেন ৩৭, তিনে নেমে ওমাইর ইউসুফ ৩৬ বলে ৬৭। পরে ইফতিখার আহমেদ করেন ৩১ বলে ৫৪, উমর আকমল ‌১০ বলে ২৮। এমনকি ৯ ও ১০ নম্বরে নেমে দুই বোলার কাইস আহমেদ ও নাভিন-উল-হক খেলেন ৭ বলে ১৭ রানের দুটি ইনিংস।

তাতেই টি-টোয়েন্টি ম্যাচে প্রথমবার একই ম্যাচে দুই দলের স্কোর স্পর্শ করে আড়াইশ।

রানের প্লাবনের ম্যাচে শেষ পর্যন্ত বড় পার্থক্য গড়ে দেন একজন বোলার। ৪৭ রানে ৫ উইকেট নেন মুলতানের পেসার আব্বাস আফ্রিদি, এর মধ্যে ছিল হ্যাটট্রিকও। ব্যাটসম্যানের ম্যাচে ম্যান অব দা ম্যাচও এই ২১ বছর বয়সী পেসার।

 ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণীতে বোলারদের ঘাটতির কথা জিজ্ঞেস করতেই মুলতান অধিনায়ক রিজওয়ান বলেন, বোলারদের এখানে করার আছে সামান্যই।

 “সত্যি বলতে, বোলারদের ভুল তো বুঝতেই পারছি না। কারণ পিচের আচরণ যে ধরণের, ২৫০-২৬০ রান করেও ৯ রানে জিততে হচ্ছে, কাজটা আসলে কঠিনই (বোলারদের)। এটাই বাস্তবতা যে বোলারদের জন্য খুব কঠিন।”