পাকিস্তান-ইংল্যান্ড সিরিজ
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টেস্টের প্রথম দিন তিনশ ছাড়িয়ে বড় সংগ্রহের পথে পাকিস্তান।
Published : 07 Oct 2024, 06:56 PM
চার বছরের খরা কাটিয়ে সেঞ্চুরির স্বাদ পেলেন শান মাসুদ। আগের ১০ ইনিংসে সাতবার দুই অঙ্ক ছোঁয়ার আগে ফেরার পর এবার শতকের দেখা পেলেন আব্দুল্লাহ শাফিকও। দুজনে উপহার দিলেন আড়াইশ ছাড়ানো জুটি। প্রথম দিন তিনশ ছাড়িয়ে গেল পাকিস্তানের সংগ্রহ।
মুলতানে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে বড় সংগ্রহের পথে আছে পাকিস্তান। প্রথম দিন শেষে স্বাগতিকদের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ৩২৮ রান।
চার বছর ও ২৭ ইনিংস পর সেঞ্চুরির স্বাদ পেয়ে ১৭৭ বলে ১৫১ রান করেন মাসুদ। পাকিস্তান অধিনায়কের ইনিংস গড়া ১৩ চার ও ২ ছক্কায়। ১৮৪ বলে ১০ চার ও ২ ছক্কায় ১০২ রান করেন শাফিক। দুজনের দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে আসে ২৫৩ রান।
থিতু হয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি সাবেক অধিনায়ক বাবর আজম (৭১ বলে ৩০)। টেস্টে এই নিয়ে টানা ১৭ ইনিংসে পঞ্চাশ ছুঁতে ব্যর্থ হলেন তিনি।
ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে প্রথম দুই সেশনে স্রেফ একটি উইকেট নিতে পারে ইংল্যান্ড। তৃতীয় সেশনে ৩ উইকেট নিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর আভাস দিয়েছে তারা।
প্রথম সেশনে ১ উইকেট হারিয়ে ১২২ রান করা পাকিস্তান দ্বিতীয় সেশনে বিনা উইকেটে করে ১১১। তৃতীয় সেশনে ৯৫ রান করতে হারায় ৩ উইকেট।
মুলতান ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সোমবার টস জিতে ব্যাটিং নিয়ে পাকিস্তানের শুরুটা ভালো ছিল না। পঞ্চম ওভারে তারা হারায় সাইম আইয়ুবকে। লেগ স্টাম্পের বাইরে গাস অ্যাটকিনসনের ব্যাক অব লেংথ ডেলিভারিতে কিপারের গ্লাভসে ধরা পড়েন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।
শুরুর ধাক্কা সামলে বড় জুটি গড়ে তোলেন মাসুদ ও শাফিক। ১৬ রানে মাসুদকে এলবিডব্লিউ দিয়েছিলেন আম্পায়ার, রিভিউ নিয়ে বাঁচেন ব্যাটসম্যান। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ফিফটি পূর্ণ করেন তিনি ৪৩ বলে। অফ স্পিনার শোয়েব বাশিরকে পরপর চার ও ছক্কায় ৭৭ বলে পঞ্চাশে পা রাখেন শাফিক।
দ্বিতীয় সেশনে মাসুদ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ১০২ বলে। ২০১৪ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মিসবাহ-উল-হাকের ৫৬ বলে সেঞ্চুরির পর টেস্টে পাকিস্তানের কারও দ্রুততম সেঞ্চুরি এটিই। পাকিস্তানের অধিনায়ক হিসেবে দ্বিতীয় দ্রুততম সেঞ্চুরি এটি। দ্রুততম মিসবাহর ৫৬ বলের সেঞ্চুরিটি।
মাসুদের ক্যারিয়ারের পঞ্চম ও অধিনায়ক হিসেবে প্রথম সেঞ্চুরি এটি। চতুর্থটি করেছিলেন ২০২০ সালের অগাস্টে, ইংল্যান্ডের বিপক্ষেই ম্যানচেস্টারে ১৫৬।
সবশেষ সিরিজে ঘরের মাঠে বাংলাদেশের বিপক্ষে হোয়াইটওয়াশড হওয়া ও নেতৃত্বের প্রথম পাঁচ টেস্টেই হারের সঙ্গে নিজের পারফরম্যান্স মিলিয়ে চাপের মুখে ছিলেন মাসুদ। এই সেঞ্চুরি তাই বড় স্বস্তি হয়ে এলো তার জন্য।
তৃতীয় সেশনের শুরুতে ৯৪ থেকে জ্যাক লিচকে ছক্কা মেরে শাফিক সেঞ্চুরি তুলে নেন ১৫৬ বলে। ২০ টেস্টের ক্যারিয়ারে তার পঞ্চম সেঞ্চুরি এটি।
১৭ বলের মধ্যে বিদায় নেন দুই থিতু ব্যাটসম্যানই। শাফিককে ফিরিয়ে ৩৩৮ বল স্থায়ী জুটি ভাঙেন অ্যাটকিনসন। অফ স্টাম্পের বাইরের বলে ড্রাইভ করে পয়েন্টে ক্যাচ দেন ২৪ বছর বয়সী ওপেনার।
শাফিক ও মাসুদের ২৫৩ রানের জুটি পাকিস্তানের হয়ে দ্বিতীয় উইকেটে চতুর্থ সর্বোচ্চ জুটি।
বাঁহাতি স্পিনার লিচকে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে থামেন মাসুদ। চতুর্থ উইকেটে সাউদ শাকিলের সঙ্গে ৬১ রানের জুটি গড়ে দিনের শেষের আগের ওভারে বিদায় নেন বাবর। ক্রিস ওকসের বলে এলবিডব্লিউ হন তিনি।
‘নাইটওয়াচম্যান’ নাসিম শাহকে নিয়ে বাকি সময়টুকু কাটিয়ে দেন শাকিল। ৭৩ বলে ৩৫ রানে অপরাজিত আছেন তিনি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
পাকিস্তান ১ম ইনিংস: ৮৬ ওভারে ৩২৮/৪ (শাফিক ১০২, সাইম ৪, মাসুদ ১৫১, বাবর ৩০, শাকিল ৩৫*, নাসিম ০*; ওকস ১৫-২-৫৮-১, অ্যাটকিনসন ১৫-২-৭০-২, কার্স ১৪-২-৫২-০, বাশির ১৮-২-৭১-০, লিচ ২১-৪-৬১-১, রুট ৩-০-১৪-০)