সিলেট অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার মতে, ১২০ রানের ম্যাচের জন্য একদম উপযুক্ত ব্যাটসম্যান বাবর আজম।
Published : 23 Jan 2024, 07:06 PM
পুঁজি একদম মামুলি। কিন্তু সিলেট স্ট্রাইকার্সের আশার আলো হয়ে এলো দুশান হেমান্থার প্রথম ওভার। চার বলে তিন উইকেট নিয়ে রংপুর রাইডার্সকে খাদের কিনারায় ঠেলে দিলেন শ্রীলঙ্কান লেগ স্পিনার। তখন ঢাল হয়ে দাঁড়িয়ে গেলেন বাবর আজম। লড়াইয়ে সঙ্গী হিসেবে পেলেন আজমতউল্লাহ ওমারজাইকে। গোছানো ব্যাটিংয়ে তারা রংপুরকে এনে দিলেন আসরের প্রথম জয়।
হেমান্থার এক ওভারে খানিক সম্ভাবনা জাগলেও প্রথম ইনিংসে স্রেফ ১২০ রান করার পরই ম্যাচের ভাগ্য লেখা হয়ে গিয়েছিল মনে করেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। তবে স্কোরবোর্ডে আর ২০ রান যোগ হলে বাবরের জন্য লক্ষ্য তাড়ার চ্যালেঞ্জ আরও কঠিন হতো বলে বিশ্বাস সিলেট অধিনায়কের।
মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে রোববার ছোট রানের ম্যাচে রংপুর জেতে ৪ উইকেটে। ১২১ রান তাড়ায় একপর্যায়ে স্রেফ ৩৯ রানে ৬ উইকেট হারায় তারা। সেখান থেকে বাবর ও ওমারজাইয়ের ৬৮ বলে ৮৬ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে আসে জয়।
আগের রাতে ঢাকায় পা রাখা বাবর ইনিংস শুরু করতে নেমে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ৫৬ রান করে। ওপেনিংয়ে নেমে ৪৯ বলের ইনিংসটি তিনি সাজান ৬ চারে। তার ইনিংসের মাহাত্ম্য মূলত চাপ সামাল দেওয়ার ক্ষেত্রে। নন স্ট্রাইক প্রান্ত থেকে তিনি একে একে দেখেন ছয় ব্যাটসম্যানের বিদায়।
পাওয়ার প্লেতে ড্রেসিং রুমের পথ ধরেন রনি তালুকদার, ব্র্যান্ডন কিং ও নুরুল হাসান সোহান। এরপর হেমান্থার এক ওভারে শিকার শামীম হোসেন, মোহাম্মদ নাবি ও শেখ মেহেদি হাসান।
সহজ লক্ষ্যে রংপুরের তখন পা হড়কানোর শঙ্কা। তবে বাবর ছিলেন অবিচল। এমনিতে খুব বিস্ফোরক ব্যাটসম্যান তিনি নন বা ঝড়ের গতিতে রান তোলার পরিচিতি তার নেই। এই ম্যাচে রান রেটের চাপ না থাকায় কোনো ঝুঁকিও নিতে হয়নি পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ককে। অন্য প্রান্তে ওমারজাইয়ের সাবলীল ব্যাটিংয়ে আরও সহজ হয় বাবরের কাজ।
ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে মাশরাফি বললেন, বাবরকে চাপে ফেলার মতো যথেষ্ট পুঁজি তাদের ছিল না, পরে বোলিংও হয়তো ততটা দুর্দান্ত হয়নি।
“বাবরের জন্য এটা খুব আদর্শ ম্যাচ। কারণ বলপ্রতি রানের চাহিদায় খেলা ওর জন্য খুব সহজ। আমার কাছে মনে হয়, এই কাজে ও মাস্টার। রানটা যদি ১৪০ হতো, তখন ওর জন্য খুব কঠিন হতো।”
“ওর ব্যাটিংয়ের যে ধরন, ১২০ বলে ১২০ করা এক হিসাব, ১৪০ করা আরেক হিসাব। এজন্য মাঝের ওভারগুলোতে তিন-চার রান করে দিয়ে যদি তিন-চারটা ওভার করা যেত, তাহলে ও হয়তো চাপটা অনুভব করতে পারত। যেটা আমরা পারিনি।”
টি-টোয়েন্টি সংস্করণে প্রায় ১০ হাজার রান করা বাবরের এমন ব্যাটিং অনুমেয়ই ছিল মাশরাফির কাছে। তবে অন্য প্রান্তে থাকা ওমারজাইয়ের ওপরও চাপ সৃষ্টি করতে না পারার আক্ষেপ সিলেট অধিনায়কের।
“যে পরিস্থিতি ছিল... অবশ্যই বাবর আজম অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। তবে ও কিন্তু এমন না যে বড় শট খেলে ম্যাচ জেতাবে। ওর যা করার ছিল, সেটাই করেছে। আমরা অন্য প্রান্ত থেকেও চ্যালেঞ্জ দিতে পারিনি। ওখান থেকে একটা উইকেট নিতে পারলেও কিন্তু পরে সব লেজের সারির ব্যাটসম্যান।”
“তখন স্ট্রাইক রোটেট করতে না পারলে ওকে (বাবর) শটস খেলতে হতো। তখন ভুল হতো। বাবর আজম ও রকম শটস খেলা ক্রিকেটার না যে আসলে শটস খেলে ম্যাচের অবস্থা বদলে দিবে। ওই চাপটা আমরা কোনো দিক থেকে রাখতে পারিনি।”