প্লেয়ার অব দা মান্থ
গত মাসের সেরা নারী ক্রিকেটার বাছাইয়ের সংক্ষিপ্ত তালিকায় জায়গা পেয়েছেন অ্যামেলিয়া কার, ডিয়ান্ড্রা ডটিন ও লরা উলভার্ট।
Published : 05 Nov 2024, 07:30 PM
বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্টে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করে সিরিজ সেরার পুরস্কার জেতা কাগিসো রাবাদার সামনে আরেকটি স্বীকৃতির হাতছানি। ‘আইসিসি প্লেয়ার অব দা মান্থ’-এর পুরুষ ক্রিকেটারের সংক্ষিপ্ত তালিকায় জায়গা পেয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকান এই পেসার। অক্টোবরের সেরার লড়াইয়ে তার প্রতিদ্বন্দ্বী নিউ জিল্যান্ডের মিচেল স্যান্টনার ও পাকিস্তানের নোমান আলি।
গত মাসের সেরা পুরুষ ও নারী ক্রিকেটারের লড়াইয়ে থাকাদের নাম মঙ্গলবার প্রকাশ করেছে বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্তা সংস্থা আইসিসি। মেয়েদের সংক্ষিপ্ত তালিকায় জায়গা পেয়েছেন নিউ জিল্যান্ডের অ্যামেলিয়া কার, ওয়েস্ট ইন্ডিজের ডিয়ান্ড্রা ডটিন ও দক্ষিণ আফ্রিকার লরা উলভার্ট।
কাগিসো রাবাদা
অক্টোবরে দুটি টেস্ট খেলেন রাবাদা, দুটিই বাংলাদেশের বিপক্ষে। মিরপুরে প্রথম ম্যাচের প্রথম ইনিংসে ৩ উইকেট নেন তিনি। যেখানে প্রথম শিকারটি ধরে পূর্ণ করেন টেস্ট ক্যারিয়ারের ৩০০ উইকেট; ইতিহাসের প্রথম পেসার হিসেবে ১২ হাজারের কম ডেলিভারিতে এই মাইলফলক স্পর্শ করেন তিনি (১১ হাজার ৮১৭ ডেলিভারি)।
দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশকে বলা যায় একাই গুঁড়িয়ে দেন তিনি। ৪৬ রানে নেন ৬ উইকেট। ম্যাচে তার প্রাপ্তি ৭২ রানে ৯ উইকেট। উপমহাদেশের বাইরের কোনো পেসারের জন্য মিরপুরে সেরা বোলিং এটিই।
চট্টগ্রামে দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট নেন রাবাদা। দ্বিতীয় ইনিংসে তেমন বোলিং করতে হয়নি, থাকেন উইকেটশূন্য। দুই ম্যাচই জেতে দক্ষিণ আফ্রিকা।
এই পারফরম্যান্সে টেস্ট বোলারদের র্যাঙ্কিংয়ে পাঁচ বছর পর শীর্ষে ফেরেন রাবাদা। এবার আইসিসি প্লেয়ার অব দা মান্থের স্বীকৃতি জেতা তৃতীয় দক্ষিণ আফ্রিকান হতে পারেন তিনি।
মিচেল স্যান্টনার
নিউ জিল্যান্ডের হয়ে অক্টোবরে কেবল এক ম্যাচ খেলেই মাস সেরার লড়াইয়ে জায়গা করে নিয়েছেন স্যান্টনার। ভারতের বিপক্ষে পুনে টেস্টে সুযোগ পেয়ে দুর্দান্ত বোলিং উপহার দেন তিনি। ম্যাচে ১৩ উইকেট নিয়ে দলের জয়ে সবচেয়ে বড় অবদান রাখেন বাঁহাতি এই স্পিনার।
পুনের টার্নিং উইকেটে স্যান্টনারের বাঁহাতি স্পিনের ধ্রুপদি প্রদর্শনীতে দুই ইনিংসেই ব্যাটিং ধসে পড়ে ভারত। প্রথম ইনিংসে ৫৩ রানে ৭ উইকেট নেওয়া স্যান্টনার দ্বিতীয়ভাগে নেন আরও ৬টি। জেতেন ম্যাচে সেরার পুরস্কার।
স্যান্টনারের ১৫৭ রানে ১৩ উইকেট টেস্টে নিউ জিল্যান্ড বোলারদের মধ্যে তৃতীয় সেরা। টেস্টের দুই ইনিংসেই অন্তত পাঁচটি করে উইকেট নেওয়া নিউ জিল্যান্ডের দ্বিতীয় স্পিনার স্যান্টনার। আগের জন ড্যানিয়েল ভেটোরি।
নোমান আলি
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে গত মাসে দুই টেস্ট খেলার সুযোগ পান নোমান। দুই ম্যাচেই বাজিমাত করেন তিনি। দুই ম্যাচে ২০ উইকেট নিয়ে পাকিস্তানের সিরিজে জয়ে সবচেয়ে বড় অবদান রাখেন বাঁহাতি এই স্পিনার। আর এই পারফরম্যান্সে প্রথমবারের মতো জায়গা করে নিয়েছেন মাসে সেরার সংক্ষিপ্ত তালিকায়।
ঘরের মাঠে ইংল্যান্ড সিরিজের প্রথম ম্যাচে একাদশে জায়গা হয়নি নোমানের। ম্যাচটি হেরে তিন ম্যাচের সিরিজে পিছিয়ে পড়ে স্বাগতিকরা। পরের দুই ম্যাচে সুযোগ পেয়ে বল হাতে দলের ভাগ্য বদলে দেন তিনি। রাওয়ালপিণ্ডিতে ১১ উইকেট নেওয়া স্পিনার মুলতানে ধরেন ৯ শিকার।
অ্যামেলিয়া কার
নিউ জিল্যান্ডের নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ে ব্যাট-বল হাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে এবারের মাস সেরার লড়াইয়ে জায়গা করে নিয়েছেন অ্যামেলিয়া। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারির সেরা হয়েছিলেন এই অলরাউন্ডার।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে ১৩৫ রান করার পাশাপাশি রেকর্ড ১৫ উইকেট নিয়েছেন অ্যামেলিয়া। টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কার ওঠে তারই হাতে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ফাইনালে ৩৮ বলে ৪৩ রান করার পর ২৪ রান দিয়ে ৩ শিকার ধরে ম্যাচ সেরার পুরস্কারও জিতে নেন তিনি।
ডিয়ান্ড্রা ডটিন
নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে ফেরেন ডটিন। টুর্নামেন্টে অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে উজ্জ্বল ছিলেন তিনি। ২০১৮ সালের পর প্রথমবার দলটির সেমি-ফাইনালে খেলার পথে বড় অবদান রাখেন এই অলরাউন্ডার।
স্কটল্যান্ড ও বাংলাদেশের বিপক্ষে দারুণ খেলা ডটিন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয়েও। পরে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে হেরে যাওয়া সেমি-ফাইনালে ৩৩ রান করার পাশাপাশি ৪ উইকেট নেন তিনি।
লরা উলভার্ট
‘আইসিসি প্লেয়ার অব দা মান্থ’ এর সংক্ষিপ্ত তালিকায় এর আগে চারবার জায়গা পেয়েছেন উলভার্ট। কিন্তু কখনও পুরস্কারটি জেতা হয়নি তার। পঞ্চমবারের মতো তার সামনে এলো স্বীকৃতিটি পাওয়ার সুযোগ।
নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ফাইনাল খেলা দক্ষিণ আফ্রিকাকে নেতৃত্ব দেন উলভার্ট। ৪৪.৬০ গড়ে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ ২২৩ রান করেন তিনি। ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচের পর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে নাটকীয় সেমি-ফাইনালেও চল্লিশ ছোঁয়া ইনিংস খেলেন এই ব্যাটার।
ফাইনালে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে আউট হয়ে যান ৩৩ রানে। তার দলও পারেনি শিরোপার স্বাদ নিতে। হেরে যায় ৩২ রানে।
আইসিসির ভোটিং একাডেমি ও ক্রিকেট সমর্থকদের যৌথ ভোটে নির্বাচন করা হয় মাসের সেরা দুই ক্রিকেটার। ভোটিং একাডেমিতে আছেন জ্যেষ্ঠ ক্রীড়া সাংবাদিক, সাবেক ক্রিকেটার ও ধারাভাষ্যকাররা। তারা ভোট দেন ই-মেইলে, আইসিসির নিবন্ধিত সমর্থকদের ভোট দিতে হয় আইসিসির ওয়েবসাইটে।
সেরার রায়ে ভোটিং একাডেমির ভোট বিবেচনায় নেওয়া হয় শতকরা ৯০ ভাগ, সমর্থকদের ভোট বাকি ১০ ভাগ।