টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের টিকেট নিশ্চিত করতে দক্ষিণ আফ্রিকার চাই ১২১ রান, হাতে ৭ উইকেট।
Published : 28 Dec 2024, 11:02 PM
আম্পায়ার নিতিন মেনন লাইট মিটারে দেখে শান মাসুদকে জিজ্ঞেস করলেন, কোনো স্পিনারকে বোলিংয়ে আনতে চান কি-না তিনি। পাকিস্তান অধিনায়ক তা না চাওয়ায় আলোয়স্বল্পতায় আগেভাগে শেষ হয়ে গেল দিনের খেলা। তার আগেই অবশ্য পাকিস্তান শিবিরে আশার আলো জ্বালিয়ে দিলেন দুই পেসার মোহাম্মদ আব্বাস ও খুররাম শাহজাদ।
সেঞ্চুরিয়ন টেস্টে পাকিস্তানের দ্বিতীয় ইনিংস শেষ হয় যখন, তখন লড়াইটা মনে হচ্ছিল একপেশে। তবে ঘন্টা খানেকের কম সময়ে বদলে গেল চিত্র, ম্যাচ এখন অনেকটা ভারসাম্যপূর্ণ।
১৪৮ রানের ছোট লক্ষ্য তাড়ায় শনিবার তৃতীয় দিনের খেলা শেষে দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহ ৩ উইকেটে ২৭ রান। এই ম্যাচ জিতে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের টিকেট নিশ্চিত করতে এখনও ১২১ রান দরকার স্বাগতিকদের। অভাবনীয় জয় পেতে পাকিস্তানের চাই ৭ উইকেট।
দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে টেস্টে সর্বনিম্ন ১৩১ রান ডিফেন্ড করে জয়ের নজির আছে ইংল্যান্ডের। ১৮৯৯ সালে জোহানেসবার্গে ৩২ রানে জিতেছিল তারা।
পেস সহায়ক উইকেটে প্রোটিয়াদের লক্ষ্য দেড়শর নিচে রাখার মূল কারিগর মার্কো ইয়ানসেন। দ্বিতীয় ইনিংসে ৫২ রানে ৬ উইকেট নেন এই পেস বোলিং অলরাউন্ডার। বাবর আজম ও সাউদ শাকিলের ফিফটির পরও পাকিস্তান অল আউট হয়ে যায় ২৩৭ রানে। প্রথম ইনিংসে ৯০ রানে পিছিয়ে থাকা দলটি ৮৪ রানে হারায় শেষ ৭ উইকেট।
১৯ ইনিংস ও ৭৩২ দিন পর টেস্ট ক্রিকেটে পঞ্চাশ ছুঁয়ে ঠিক ৫০ রানেই আউট হন বাবর। ১১৩ বলে ১০ চার ও এক ছক্কায় ৮৪ রান করেন শাকিল।
সুপারস্পোর্ট পার্কে বৃষ্টিতে প্রথম সেশন ভেস্তে যাওয়ার পর ৩ উইকেটে ৮৮ রান নিয়ে তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করে পাকিস্তান। আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান বাবর ও শাকিল সাবলীল ব্যাটিংয়ে এগিয়ে নেন দলকে।
বাবর ২০২২ সালের ডিসেম্বরের পর প্রথম পঞ্চাশ স্পর্শ করেন ৮০ বলে। এরপরই ইয়ানসেনের অফ স্টাম্পের বাইরের শর্ট বলে ডিপ পয়েন্টে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন তিনি। তার ৮৫ বলের ইনিংস গড়া ৯ চারে।
৭৯ রানের জুটি ভাঙা থেকেই পথ হারানোর শুরু সফরকারীদের। ইয়ানসেনের শর্ট বল পুল করার চেষ্টায় কিপারের গ্লাভসে ধরা পড়েন মোহাম্মদ রিজওয়ান। নিজের পরের ওভারে সালমান আলি আগাকে ফিরিয়ে টেস্টে তৃতীয়বার পাঁচ উইকেট পূর্ণ করেন ইয়ানসেন। অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বল তাড়া করে উইকেট উপহার দেন সালমান।
ড্যান প্যাটারসনের শর্ট বলে বিদায় নেন আমের জামাল। নাসিম শাহকে টিকতে দেননি কাগিসো রাবাদা।
এক প্রান্ত আগলে রাখা শাকিল দলকে এগিয়ে নেন আরও কিছুটা। তাকে এলবিডব্লিউ করে ষষ্ঠ শিকার ধরেন ইয়ানসেন। মোহাম্মদ আব্বাসকে ফিরিয়ে ইনিংস গুটিয়ে দেন অভিষিক্ত কার্বিন বশ।
লক্ষ্য তাড়ায় চতুর্থ ওভারে টনি ডি জর্জিকে হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। আব্বাসের বলে এলবিডব্লিউ হন তিনি। পরের ওভারে শাহজাদের বলে এলবিডব্লিউ রায়ান রিকেলটন। পাকিস্তান এই সাফল্য পায় রিভিউ নিয়ে।
আরেকটি রিভিউ নিয়ে ট্রিস্টান স্টাবসের উইকেটও পেয়ে যায় তারা। এরপর খেলা হতে পারে আর এক ওভার।
৪ ওভারে ৩ মেডেনে ৩ রানে ২ উইকেট নিয়েছেন আব্বাস।
এইডেন মার্করাম ২৫ বলে ২২ রানে অপরাজিত আছেন। তার সঙ্গে অপরাজিত আছেন টেম্বা বাভুমা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
পাকিস্তান ১ম ইনিংস: ২১১
দক্ষিণ আফ্রিকা ১ম ইনিংস: ৩০১
পাকিস্তান ২য় ইনিংস: (আগের দিন ৮৮/৩) ৫৯.৪ ওভারে ২৩৭ (বাবর ৫০,শাকিল ৮৪, রিজওয়ান ৩, সালমান ১, জামাল ১৮, নাসিম ০, শাহজাদ ৯*, আব্বাস ০; রাবাদা ১৬-২-৬৮-২, বশ ১১.৪-১-৫৪-১, প্যাটারসন ১৮-৩-৫৫-১, ইয়ানসেন ১৪-৩-৫২-৬)
দক্ষিণ আফ্রিকা ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ১৪৮) ৯ ওভারে ২৭/৩ (ডি জর্জি ২, মার্করাম ২২*, রিকেলটন ০, স্টাবস ১, বাভুমা ০*; শাহজাদ ৫-০-২২-১, আব্বাস ৪-৩-৩-২)