ইংল্যান্ড-শ্রীলঙ্কা
কন্ডিশনের কারণে এবারের জয়টি স্পেশাল হয়ে উঠেছে বলে মনে করেন ২৬ বছর আগের জয়ের নায়কদের একজন ও শ্রীলঙ্কার অন্তর্বর্তীকালীন কোচ সানাৎ জায়াসুরিয়া।
Published : 10 Sep 2024, 11:00 PM
কেনিংটন ওভালে ১৯৯৮ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট জয় এখনও উপমহাদেশের বাইরে শ্রীলঙ্কার সবচেয়ে বড় অর্জন বলে বিবেচিত হয়। দুই যুগের বেশি সময় পর একই মাঠে তারা পেয়েছে আরেকটি স্মরণীয় টেস্ট জয়ের স্বাদ। দুই জয়ের মধ্যে এগিয়ে কোনটি? ২৬ বছর আগের জয়ের নায়কদের একজন ও শ্রীলঙ্কার অন্তর্বর্তীকালীন কোচ সানাৎ জায়াসুরিয়ার মতে, কন্ডিশনের কারণে স্পেশাল হয়ে উঠেছে এবারের জয়।
ওভালে ১৯৯৮ সালে প্রথম ইনিংসে ইংল্যান্ডের ৪৪৫ রানের জবাবে শ্রীলঙ্কা করেছিল ৫৯১। ২৭৮ বলে ২১৩ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেছিলেন জায়াসুরিয়া। মুত্তাইয়া মুরালিদারানের জাদুকরি বোলিংয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ইংল্যান্ডকে দুইশর নিচে গুটিয়ে ৩৬ রানের লক্ষ্যে শ্রীলঙ্কা জিতেছিল ১০ উইকেটে। দ্বিতীয় ইনিংসে ৯টিসহ ১৬ উইকেট নিয়ে ম্যাচের সেরা হয়েছিলেন মুরালিদারান।
সেখানেই সোমবার শ্রীলঙ্কা জয় পায় ৮ উইকেটে। এবার প্রথম ইনিংসে ইংল্যান্ডের ৩২৫ রানের জবাবে সফরকারীরা থামে ২৬৩ রানে। ৬২ রানে এগিয়ে থাকা ইংলিশদের দ্বিতীয় ইনিংসে স্রেফ ১৫৬ রানে গুটিয়ে দেয় লঙ্কানরা। পাথুম নিসাঙ্কার অপরাজিত সেঞ্চুরিতে ছুঁয়ে ফেলে ২১৯ রানের লক্ষ্য।
এই ম্যাচে প্রথম দিন থেকেই আকাশ ছিল মেঘলা। উইকেটে ছিল সবুজ ঘাসের ছোঁয়া। ব্যাটিং ছিল চ্যালেঞ্জিং। ২৬ বছর আগের ম্যাচে উইকেট ছিল শুষ্ক। বেশিরভাগ সময়ই আকাশ ছিল ঝকঝকে।
দুই জয়ের তুলনায় জায়াসুরিয়া বললেন, কন্ডিশনের কারণে এবারের জয়ের মাহাত্ম্য অন্যরকম।
“প্রায় ২৭ বছর আগে আমরা এখানে জিতেছিলাম আর্জুনার (রানাতুঙ্গা) নেতৃত্বে। মুরালি (মুরালিদারান) ১৬ উইকেট পেয়েছিল, আমি ডাবল সেঞ্চুরি করেছিলাম, আরাভিন্দা (ডি সিলভা) করেছিল দেড়শ। এটি (ওভাল) এমন একটি জায়গা, যা আমরা কখনই ভুলব না।”
“তবে এই ছেলেরা পুরোপুরি ভিন্ন কন্ডিশনে খেলেছে। এবার কন্ডিশন ছিল কঠিন- ঘাস, আবহাওয়া, মেঘলা আকাশ ও ঠাণ্ডা। সব কৃতিত্ব এই ছেলেদের। ফিল্ডাররা ভালো ফিল্ডিং করেছে এবং দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটসম্যানরা দায়িত্ব নিয়েছে।”
শ্রীলঙ্কার এবারের জয়ের ভিত গড়ে দেন মূলত বোলাররা। সিরিজের প্রথম দুই টেস্টে হারের পর এই ম্যাচে চার পেসার নিয়ে নামে লঙ্কানরা। দুই ইনিংস মিলিয়ে ২০ উইকেটের ১৮টিই ভাগাভাগি করে নেন আসিথা ফার্নান্দো (৩), মিলান রাত্নায়েকে (৪), ভিশ্ব ফার্নান্দো (৫) ও লাহিরু কুমারা (৬)। জায়াসুরিয়া প্রশংসায় ভাসালেন এই চার পেসারকে।
“প্রথমবার আমরা চার জন ফাস্ট বোলার নিয়ে নেমেছি, এখানকার কন্ডিশনের কারণেই তা করা হয়েছে এবং তাদের সকলেই নিজেদের প্রচেষ্টায় শতভাগ ছাড়িয়ে গিয়েছে। তাদের নিয়ে কথা বলা আনন্দের। আমাদের দ্বিতীয় ইনিংসের বোলিং ছিল অসাধারণ, তারা পরিকল্পনায় স্থির ছিল এবং ৩৫ ওভারের নিচে, দেড়শর একটু বেশি রানে তাদের (ইংল্যান্ড) অল আউট করেছিল।”
“লাহিরু কুমারা যে মনোভাব দেখিয়েছে, সেটাই আমি আশা করেছিলাম, আমি চেয়েছিলাম সে যতটা সম্ভব তা দেখাবে। এভাবেই আমাদের ক্রিকেট খেলতে হবে। সে চমৎকার লাইন ও লেংথে বোলিং করেছে। অসিথা ফার্নান্দো এই সিরিজে ছিল অসাধারণ। নতুন একজন হিসেবে রাত্নায়েকে সত্যিই খুব ভালো বোলিং করেছে। ভিশ্ব ফার্নান্দো দ্বিতীয় ইনিংসে সেভাবেই বোলিং করেছে, যেভাবে আমরা চেয়েছিলাম।”
নিসাঙ্কাকেও কৃতিত্ব দেন জায়াসুরিয়া। এই ওপেনার প্রথম ইনিংসে খেলেন ৫১ বলে ৬৪ রানের ইনিংস। আর রান তাড়ায় তিনি দলের জয় নিয়ে ফেরেন ১২৪ বলে ১২৭ রানের ইনিংস খেলে।