নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স আশা জাগানিয়া না হলেও ঘরের মাঠে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে স্মরণীয় কিছু করতে চান অধিনায়ক নিগার সুলতানা।
Published : 05 May 2024, 07:13 PM
ভারতের বিপক্ষে চলতি সিরিজে লড়াই জমাতে একদমই ব্যর্থ বাংলাদেশ। কিছুদিন আগে বাংলাদেশ থেকে অনায়াসে সিরিজ জিতে গেছে অস্ট্রেলিয়া। বিশ্বকাপের বছরে এমন পারফরম্যান্স অশনি সংকেত বটে। সমর্থকদের দুর্ভাবনার জায়গাটা উপলব্ধি করতে পারছেন নিগার সুলতানা নিজেও। তবে শঙ্কাগুলো উড়িয়ে ঘরের মাঠে বিশ্ব আসর রঙিন করে তুলতে প্রত্যয়ী বাংলাদেশ অধিনায়ক।
আগামী ৩ অক্টোবর শুরু হবে মেয়েদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের এবারের আসর। ঢাকা ও সিলেটের দুই মাঠে সব টুর্নামেন্টের সব ম্যাচ।
চলতি বছর এই দুই মাঠেই একের পর এক ম্যাচে হতাশ করে চলেছে নিগারের দল। গত মার্চ-এপ্রিলে বাংলাদেশে খেলতে এসে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজে স্বাগতিকদের হোয়াইটওয়াশ করেছে অস্ট্রেলিয়া। দুই সিরিজের ছয় ম্যাচের একটিতেও ন্যুনতম সম্ভাবনা জাগাতে পারেনি বাংলাদেশ।
খুব একটা উন্নতির ছাপ নেই ভারতের বিপক্ষে চলতি টি-টোয়েন্টি সিরিজেও। প্রথম তিন ম্যাচের একটিতেও ১২০ রান করতে পারেনি নিগার, মুর্শিদা খাতুনরা। প্রথম ম্যাচে নিগারের ফিফটি ছাড়া আর কোনো চল্লিশছোঁয়া ইনিংস নেই।
হতশ্রী ব্যাটিংয়ের মাশুল দিতে হচ্ছে নিয়মিত ম্যাচ হেরে। দুই ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজ জিতে নিয়েছে ভারত। গত বছর এই ভারতের বিপক্ষেই দুর্দান্ত পারফরম্যান্স ছিল নিগারদের। এবার দল চলছে যেন উল্টো রথে।
সেই হতাশাকে চাপা দিয়েই আশাভরে সামনে তাকাচ্ছেন নিগার। তার নিজের ব্যক্তিগত রোমাঞ্চের ব্যাপারও আছে। ১০ বছর আগে যখন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আসর বসেছিল বাংলাদেশে, তিনি তখনও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রাখেনি। এবার দেশের মাঠে প্রথমবার বিশ্বকাপ খেলার হাতছানি আছে, সব ঠিকঠাক থাকলে দলকে নেতৃত্বও দেবেন তিনিই।
বিশ্বকাপের সূচি প্রকাশের অনুষ্ঠানে রোববার ঢাকার একটি অনুষ্ঠানে নিজের খেলার সম্ভাবনা নিয়ে খানিকটা মজা করলেন নিগার। পরে নিজের ও দলের রোমাঞ্চের কথা জানালেন অধিনায়ক।
"প্রথমত এখনও কিন্তু নিশ্চিত না (হাসি)... যেহেতু ৪টা মাস এখনও বাকি। আমি নিজেও জানি না, খেলতে পারব কি না। যদি আমি সুস্থ থাকি, আল্লাহ্ রহমত করেন, কোনো সমস্যা যদি না থাকে, তাহলে হয়তো (খেলব)।"
"আমি যেটা বলতে চাই, প্রত্যেক ক্রিকেটারের স্বপ্ন থাকে, নিজ দেশে বিশ্বকাপ খেলার। সবাই খেলে কিন্তু খুবই কমসংখ্যক ক্রিকেটার (নিজ দেশে বিশ্বকাপ) খেলতে পারে। এখন যারা দলে আছি কম-বেশি এখান থেকে সবাই (বিশ্বকাপে) খেলবে। তারা অনেক বেশি সৌভাগ্যবান যে, দেশের মাঠে একটা বড় টুর্নামেন্টে দেশের প্রতিনিধিত্ব করবে।"
২০১৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কা ও আয়ারল্যান্ডকে হারানোর পর এখনও পর্যন্ত বিশ্ব আসরে বাংলাদেশের আর কোনো জয় নেই। পরের চার বিশ্বকাপের ১৬ ম্যাচের সবকটিই হেরেছে বাংলাদেশ। নিগার খেলেছেন সবগুলো ম্যাচ। গত বছর দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপে অধিনায়কও ছিলেন তিনি।
এবার ঘরের মাঠে বড় চ্যালেঞ্জ এই অতীত বদলানো। এতে স্বাগতিক দর্শকদের সমর্থনের সঙ্গে স্বয়ংক্রিয়ভাবে যে প্রত্যাশার চাপও চলে আসবে, তা ভালোভাবেই বুঝতে পারছেন নিগার। তাই বাস্তবতা মাথায় রেখেই বড় স্বপ্ন দেখছেন তিনি।
"রোমাঞ্চের চেয়ে আমি বলব যে, একটা টেনশনও কাজ করছে। কারণ ঘরের মাঠের দর্শক থাকবে। সবাই চাইবে, আমরা যেন ভালো করি। আর আমরা এখন একটু কঠিন সময় পার করছি। তাই অনেক সংশয়-সন্দেহ আসতে পারে। তবু বলব যে, এই দলটা অনেক প্রস্তুতি নিচ্ছে।"
"আমাদের হাতে যে সময়টা আছে, যদি প্রস্তুতি নিতে পারি, আরেকটু ভালো পারফরম্যান্স করতে পারি, আমাদের যে আক্রমণটা আছে... আমরা যে সবশেষ বিশ্বকাপগুলো খেলেছি, ২০১৪ ছাড়া মনে হয় আর কোনো ম্যাচ জিততে পারিনি। তাই আমাদের মনোযোগ প্রথমেই থাকবে, আমরা যেন ম্যাচ জিততে পারি। সবাই যদি সেরাটা দিতে পারি, বিশ্বকাপটা আমরা রঙিন করে রাখতে পারব।"
বিশ্বকাপের উদ্বোধনী দিনে বাংলাদেশ লড়বে বাছাই পেরিয়ে আসা দলের সঙ্গে। এই গ্রুপের অন্য তিন দল ইংল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও দক্ষিণ আফ্রিকা। এই গ্রুপের সব ম্যাচ হবে সিরপুরে।