চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি
ব্যক্তিগত স্বার্থের জন্য পাকিস্তান ক্রিকেটকে কিছু মানুষ ধ্বংস করছে বলে অভিযোগ তুলেছেন দেশটির সাবেক ওপেনার মহসিন খান।
Published : 03 Mar 2025, 07:35 PM
ভিরাট কোহলির সঙ্গে তুলনা পছন্দ নয় বাবর আজমের। ভারতীয় গ্রেটের পর্যায়ে এখনও নিজেকে ভাবেনই না পাকিস্তানের তারকা ব্যাটসম্যান। সেখানে মহসিন খান কি-না এগিয়ে রাখছেন বাবরকেই! পাকিস্তানের সাবেক প্রধান কোচের মতে, তার উত্তরসূরির তুলনায় কিছুই নয় কোহলি।
বাবরের সঙ্গে ভিরাট কোহলি, কেন উইলিয়ামসন ও জো রুটকে প্রজন্মের সেরা চার ব্যাটসম্যান ধরে একসময় বলা হতো ‘ফ্যাবুলাস ফোর।’ তবে বাবর এখন পেছনে পড়েছেন অনেকটাই। অন্য তিন জনের কাতারে তাকে আপাতত রাখেন না অনেকেই, বিশেষ করে টেস্ট ক্রিকেটে।
অভিজাত এই সংস্করণে সবশেষ ২৬ ইনিংসে শতরান করতে পারেননি বাবর। এই সময়ে তার ফিফটি কেবল একটি। একসময় ব্যাটিং গড় ছিল ৫০ ছুঁইছুঁই। এখন তা নেমেছে ৪৩-এর নিচে।
অন্য দুই সংস্করণেও নিজের সেরা সময়ের ধারেকাছে নেই বাবর। চলতি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেই যেমন ব্যাটিংয়ের ধরনের জন্য সমালোচিত হতে হয়েছে তাকে। তিন ম্যাচে ফিফটি করতে পেরেছেন একটি। সেই ম্যাচেও ৬৪ রান করতে তার লেগে যায় ৯০ বল।
যেই সংস্করণ বাবরের শক্তির জায়গা, সেই ওয়ানডেতে তার ব্যাটিং গড় ৬০ থেকে নেমে এসেছে ৫৬ এর নিচে। এই সংস্করণে গত ২৩ ম্যাচে সেঞ্চুরির দেখা পাননি তিনি। সবশেষ তিন অঙ্কের স্বাদ পেয়েছেন ২০২৩ সালের অগাস্টে, সেটিও ছিল নেপালের বিপক্ষে।
আর টি-টোয়েন্টিতে তো তার ব্যাটিংয়ের ধরন নিয়ে প্রশ্ন ছিল আগে থেকেই। এখন রানও নিয়মিত করতে পারছেন না। এখানে ফিফটি নেই গত ১১ ইনিংসে।
কোহলি সাম্প্রতিক ফর্মও তেমন ভালো নয়। তবে বাবরের মতো খারাপও নয়। সবশেষ টেস্ট সিরিজেই অস্ট্রেলিয়ার সেঞ্চুরি করেছেন তিনি। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে রান তাড়ায় খেলেছেন অপরাজিত ১০০ রানের ইনিংস।
ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা ব্যাটসম্যানদের একজন হিসেবে বিবেচনা করা হয় কোহলিকে। টেস্টে ৯ হাজারের বেশি রান তার। ওয়ানডেতে দ্বিতীয় ক্রিকেটার হিসেবে স্পর্শ করেছেন ১৪ হাজার রানের মাইলফলক। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে রান আছে চার হাজারের বেশি।
ওয়ানডেতে তার ৫১ সেঞ্চুরি সর্বোচ্চ। টেস্টে করেছেন ৩০টি, দেশের জার্সিতে টি-টোয়েন্টিতে একটি। সব মিলিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তার সেঞ্চুরি ৮২টি, যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
পরিসংখ্যানে যোজন-যোজন এগিয়ে থাকলেও মহসিনের চোখে বাবরের তুলনায় কোহলি শূন্য!
“আমি পরিষ্কার করে বলতে চাই, বাবর আজমের তুলনায় বিরাট কোহলি কিছুই নয়; কোহলি শূন্য। কিন্তু এটা মূল বিষয় নয়। আসল সমস্যা পাকিস্তান ক্রিকেট, যা পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। এখানে কোনো পরিকল্পনা, সঠিক কৌশল, মেধার মূল্যায়ন বা জবাবদিহিতা নেই।”
“আগের টুর্নামেন্টেও আমরা পরের রাউন্ডে উঠতে পারিনি। কেবল ব্যক্তিগত সুবিধা ও ব্যক্তিগত উদ্দেশ্যের কারণে আমাদের ক্রিকেট যেভাবে তলানিতে নেমে গেছে, তা খুবই হতাশার।”
পাকিস্তানের দল নির্বাচন থেকে শুরু করে সব জায়গায় ‘স্বজনপ্রীতি’ দেখেন দেশটির সাবেক প্রধান নির্বাচক মহসিন।
“সুপারিশের কথা বললে, দলে যে কেউ নির্বাচিত হতে পারে। একটা বিষয় জানিয়ে রাখি, সর্বশক্তিমান আল্লাহর রহমতে আমি যখন প্রধান নির্বাচক ছিলাম, তখন সম্ভাব্য (সেরা) দলই নির্বাচন করতাম।”
“আমি আন্তরিকভাবে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের জন্য কাজ করেছি এবং প্রধান কোচ হিসেবে সাফল্যে আমার কঠোর পরিশ্রমের প্রতিফলন ঘটেছে। আমার লক্ষ্য ছিল পাকিস্তান ক্রিকেটকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।”