আগের দুই ম্যাচে পরে ব্যাট করা কঠিন হলেও শেষ ম্যাচে শিশিরের কারণে পরের দিকে বল ভালোভাবে ব্যাটে আসছিল, বললেন বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক।
Published : 12 Nov 2024, 08:02 AM
প্রথম দুই ম্যাচের যা অভিজ্ঞতা, তাতে ম্যাচের ভাগ্য গড়া হয়ে যাচ্ছিল আসলে ম্যাচ শুরুর আধ ঘণ্টা আগেই। টস জেতা মানেই যেন ম্যাচ পকেটে একরকম ঢুকে যাওয়া! সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে মহামূল্য সেই টস জিতে তাই দারুণ খুশি ছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। কিন্তু এবার ম্যাচে দেখা গেল উল্টো চিত্র। আগে ব্যাট করেও ম্যাচ হেরে যাওয়ার পর বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক বললেন, এই ম্যাচে শিশির পড়ায় উইকেট পরের দিকেও ব্যাটিংয়ের জন্য ভালো ছিল।
সিরিজের প্রথম ম্যাচে ২৩৫ রানের পুঁজি নিয়ে ৯২ রানে ম্যাচ জেতে আফগানিস্তান, পরের ম্যাচে ২৫২ রান তুলে বাংলাদেশ জিতে যায় ৬৮ রানে। সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে সোমবার টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। আফগানিস্তান অধিনায়ক হাশমাতউল্লাহ শাহিদি তখন হতাশাও প্রকাশ করেন টস হারায়।
এক পর্যায় বিপর্যয়ে পড়লেও মাহমুদউল্লাহর ৯৮ ও মিরাজের ৬৬ রানের ইনিংসের সৌজন্যে বাংলাদেশ তোলে ২৪৪ রান।
সিরিজের ধারা অনুযায়ী বাংলাদেশেরই জেতার কথা। চোটের কারণে বাইরে থাকা অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত মাঝবিরতিতে টিভি সাক্ষাৎকারে বললেন, এই রান নিয়ে তারা খুবই খুশি।
কিন্তু সেই খুশি উবে যায় পরে। ৭ ছক্কায় রাহমানউল্লাহ গুরবাজের সেঞ্চুরি ও ৫ ছক্কায় আজমাতউল্লাহ ওমারজাইয়ের অপরাজিত ৭০ রানের ইনিংসে আফগানিস্তান ৫ উইকেটের জয়ে সিরিজও জিতে যায়।
ম্যাচের পর মিরাজ বললেন, দ্বিতীয় ইনিংসে উইকেটে আচরণ এবার ছিল অন্যরকম। পাশাপাশি গুরবাজ-ওমারজাইকেও কৃতিত্ব দিলেন তিনি।
“গত দুই ম্যাচে আমরা দেখেছি, উইকেটে স্পিন ধরছিল (পরে), এজন্য আমরা ব্যাটিং নিয়েছি (টস জিতে)। তবে উইকেট পরেও ভালো ছিল, ভালোভাবেই ব্যাট করা যাচ্ছিল এবং শিশিরও পড়েছিল (রাতে)। বল ভালোভাবে ব্যাটে আসছিল।”
“তবে অবশ্যই তাদেরকে কৃতিত্ব দিতে হবে, তারা ভালো খেলেছে, বিশেষ করে গুরবাজ ও ওমারজাই সত্যিই ভালো খেলেছে। মাঝের ওভারগুলোয় আমরা উইকেট নিতে পারিনি। উইকেট নিতে পারলে আমরা ঘুরে দাঁড়াতে পারতাম।”
প্রথম দুই ম্যাচে শিশিরের কোনো প্রভাব দেখা যায়নি। সেই দুই ম্যাচ হয়েছিল একই উইকেটে। দুই ম্যাচেই দেখা গিয়েছিল, দ্বিতীয় ইনিংসের ১৮-২০ ওভারের সময় থেকে বল একটু নরম হয়ে যাওয়ার পর স্পিনারদের সহায়তা মেলে প্রবলভাবে। শেষ ম্যাচে খেলা হয় ভিন্ন উইকেটে। এ দিন স্পিনারদের ততটা বড় ভূমিকা দেখা যায়নি। বাংলাদেশের বোলিংও অবশ্য ভালো হয়নি। মিরাজ নিজে প্রচুর শর্ট বল করেন। এছাড়া বাজে ফিল্ডিং তো ছিলই। গুরবাজকে চার দফায় ফেরানোর সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেনি ফিল্ডাররা।
এই নিয়ে আফগানদের কাছে পরপর দুই বছর সিরিজ হারল বাংলাদেশ। তবে এই সিরিজ থেকেও কিছু প্রাপ্তি দেখছেন মিরাজ। এখন তিনি তাকিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে।
“আমার মনে হয় কিছু অর্জন আমাদের আছে। লম্বা সময় পর শারজাহতে আমরা ওয়ানডে খেললাম। (প্রথম ম্যাচে হারের পর) আমরা ঘুরে দাঁড়িয়েছি। আরেকটি সফর এগিয়ে আসছে। আজকে রাতেই ওয়েস্ট ইন্ডিজে যাচ্ছি আমরা।”
ওয়েস্ট ইন্ডিজে দুই টেস্ট, তিন ওয়ানডে ও তিন টি-টোয়েন্টি খেলবে বাংলাদেশ। ২২ নভেম্বর শুরু টেস্ট সিরিজ। চোটের কারণে নিয়মিত অধিনায়ক শান্ত খেলতে পারবেন না সেই টেস্ট সিরিজেও, নেতৃত্ব দেবেন মিরাজ। আঙুলের চোটে টেস্ট সিরিজ থেকে ছিটকে গেছেন মুশফিকুর রহিমও। অবসরের ঘোষণা দেওয়া সাকিব আল হাসানও নেই। ওয়েস্ট ইন্ডিজেও তাই বাংলাদেশের অপেক্ষায় কঠিন পরীক্ষা।