চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি
তার দুর্দান্ত ইনিংসের সৌজন্যে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৩২৫ রান করেছে আফগানিস্তান।
Published : 26 Feb 2025, 07:08 PM
লিয়াম লিভিংস্টোনকে স্লগ সুইপ করে বাউন্ডারিতে ধরা পড়ে ড্রেসিং রুমের পথে হাঁটা দিলেন ইব্রাহিম জাদরান। প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়, সতীর্থ ও গ্যালারির দর্শকরা করতালি দিয়ে তাকে জানালেন অভিবাদন। মাঠে ছাড়তে ছাড়তে ব্যাট উঁচিয়ে জবাব দিলেন আফগান ওপেনারও। ছোট ছোট এসব মুহূর্তে ফুটে উঠছে দুর্দান্ত কিছু করে ফিরছেন তিনি।
ম্যারাথন ব্যাটিংয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে রেকর্ড গড়েছেন ইব্রাহিম। উপহার দিয়েছেন এই টুর্নামেন্টের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস।
লাহোরে বুধবার ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বাঁচা-মরার লড়াইয়ে ইনিংস শুরু করতে নেমে শেষ ওভারে আউট হয়েছেন তিনি। খেলেছেন ১৭৭ রানের চোখধাঁধানো ইনিংস। তার ১৪৬ বলের ইনিংসটি সাজানো ৬টি ছক্কা ও ১২ চারে।
গত শনিবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ইনিংসের কীর্তি গড়েছিলেন বেন ডাকেট। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তার করা ১৬৫ রানের রেকর্ডটি টিকল না এক সপ্তাহও। ইব্রাহিমের ব্যাটে নিজের রেকর্ড ভাঙার মুহূর্ত মাঠে থেকেই দেখলেন ইংলিশ ওপেনার। মাঠ ছাড়ার সময় আফগান ব্যাটসম্যানের পিঠ চাপড়ে দেন তিনি।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে দেড়শ ছোঁয়া ইনিংস এই দুটিই।
এ দিন আরেকটি রেকর্ডও ভেঙেছেন ইব্রাহিম। অবশ্য সেটি আগে থেকেই ছিল তার। ওয়ানডেতে আফগানিস্তানের জার্সিতে সর্বোচ্চ ১৬২ রান ছাড়িয়ে এবার ১৭৭ করলেন তিনি।
অথচ চোটের কারণে দীর্ঘ দিন মাঠের বাইরে ছিলেন জাদরান। এই টুর্নামেন্ট দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরেন আট মাস পর, ওয়ানডে খেলেন ১১ মাস পর। ফেরার পর দ্বিতীয় ম্যাচেই অসাধারণ ইনিংস উপহার দিলেন তিনি।
গাদ্দাফি স্টেডিয়ামের ইতিহাসে এর আগে ৬৭ ওয়ানডেতে দেড়শ ছোঁয়া ইনিংস ছিল না একটিও। চলতি মাসেই দেড়শ রানের ইনিংস দেখা গেল তিনটি।
ইব্রাহিম জাদরানের চমৎকার ইনিংসের সৌজন্যে ৭ উইকেটে ৩২৫ রান করেছে আফগানিস্তান। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে চার ওয়ানডে খেলে প্রথমবার তিনশ ছাড়াতে পারল আফগানরা।
ইংলিশদের সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জ। আফগানিস্তানের বিপক্ষে এত রান তাড়া করে জয়ের নজির নেই কোনো দলের। সর্বোচ্চ ৩১৪ রানের লক্ষ্যে জিতেছিল শ্রীলঙ্কা, ২০২২ সালে।
ইংলিশদের বিপক্ষে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে আফগানদের শুরুটা একদমই ভালো হয়নি। ৩৭ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ভীষণ চাপে পড়ে যায় দলটি। কঠিন সময়ে হাশমাতউল্লাহ শাহিদিকে নিয়ে হাল ধরেন ইব্রাহিম।
দেখেশুনে খেলে রান বাড়াতে থাকেন দুজন। ৬৫ বলে পঞ্চাশ স্পর্শ করেন ইব্রাহিম। কিন্তু ফিফটি করতে পারেননি শাহিদি। আদিল রাশিদের বলে বোল্ড হন তিনি ৩ চারে ৪০ রান করে। ভাঙে ১০৩ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটি।
শাহিদির বিদায়ের পর আজমাতউল্লাহ ওমারজাইকে নিয়ে দলকে টানেন ইব্রাহিম। এই সময়ই ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ শতক উপহার দেন তিনি। কাঙ্ক্ষিত তিন অঙ্কে পা রাখেন ১০৬ বলে।
আরেক প্রান্তে দ্রুত রান তুলে ৩ ছক্কা ও ১ চারে ৩১ বলে ৪১ রান করে বিদায় দেন ওমারজাই। তাদের জুটিতে আসে ৭২ রান।
সেঞ্চুরির পর রানের গতিতে দম দেন ইব্রাহিমও। দেড়শ ছুঁয়ে ফেলেন তিনি ১৩৪ বলে। আরেক প্রান্তে মোহাম্মদ নাবির ব্যাট থেকেও আসতে থাকে দ্রুত রান।
ক্যারিয়ার-সেরা ইনিংস খেলে শেষ ওভারে বিদায় নেন ইব্রাহিম। ভাঙে নাবির সঙ্গে ৫৫ বলে ১১১ রানের বিধ্বংসী জুটি। ৩ ছক্কা ও ২ চারে ২৪ বলে ৪০ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলেন নাবি।