জগন্নাথে উপাচার্যের তত্ত্বাবধানে ‘যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি’র দাবি

শিক্ষার্থীরা বলছেন, যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধে বর্তমানে যে সেল আছে, সেটি স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছে না।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 March 2024, 11:30 AM
Updated : 20 March 2024, 11:30 AM

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের তত্ত্বাবধানে ‘যৌন হয়রানি প্রতিরোধ’ কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। 

তারা চাইছে, এই কমিটিতে সিন্ডিকেট এবং প্রক্টরিয়াল বডির কোনো প্রভাব থাকবে না। এতে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত শিক্ষার্থী প্রতিনিধি, ন্যূনতম একজন আইনজীবী ও একজন মানবাধিকার কর্মী থাকবে। 

বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফিটেরিয়ার সামনে ‘নিপীড়নের বিরুদ্ধে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়’ ব্যানারে সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি তুলে ধরা হয়। 

আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনায় গড়ে উঠা আন্দোলনের মধ্যে এই সংবাদ সম্মেলনে মোট পাঁচটি দাবি তুলে ধরা হয়। পরে তারা উপাচার্য সাদেকা হালিমের কাছে স্মারকলিপিও দেয়। 

সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ইভান তাহসীব বলেন, “এই ধরনের (যৌন হয়রানি) ঘটনা বার বার হচ্ছে। আমাদের অনেক শিক্ষার্থী বিভিন্ন সময়ে নিপীড়নের স্বীকার হয়েছে। অভিযোগ দিলেও সেগুলোর বিচার না করে প্রশাসন দীর্ঘসূত্রতা তৈরি করেছে।” 

শিক্ষক সিন্ডিকেটের ‘ভয়ে’ শিক্ষার্থীরা যৌন নিপীড়ন সেলে অভিযোগ দিতে দ্বিধা করে জানিয়ে তিনি বলেন, “সিংহভাগ শিক্ষার্থী মনে করে অভিযোগ-আন্দোলন ফলপ্রসূ হবে না। সেজন্য অনেকেই মুখ বুজে এসব নির্যাতন অপমান সহ্য করে। 

“আমরা চাই শিক্ষক শিক্ষার্থীর মধ্যে একটা সুস্থ সম্পর্ক হোক। এ কারণে আন্দোলন গড়ে তোলা। উপাচার্য মহোদয় মুখে আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু আমরা লিখিত আকারে বাস্তবায়ন চাই।” 

আরেক শিক্ষার্থী শাহ সোবহান সাকিব বলেন, “অংকন বিশ্বাসের (ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী) মৃত্যুতে বিশ্ববিদ্যালয় বাদী হয়ে মামলা করবে- এটা হবে নতুন 'যৌন হয়রানি প্রতিরোধ' কমিটির প্রথম কাজ। 

“প্রত্যেক মাসে এই কমিটিকে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় ও জবাবদিহি সভার আয়োজন করতে হবে। যৌন নিপীড়নসহ সব ধরনের নিপীড়নের বিচার নিশ্চিতে এই কমিটি বাধ্য থাকবে।” 

যৌন নিপীড়নবিরোধী বর্তমান যে সেল আছে, সে সম্পর্কে শিক্ষার্থীরা ‘জানে না’ আর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ‘সুনজরের’ অভাব রয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ সেল স্বাধীনভাবে কাজ করতে ব্যর্থ। এজন্য দ্রুততম সময়ে সম্পূর্ণ প্রভাবমুক্ত যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ কমিটির কার্যকর করতে হবে।” 

অন্য দাবি 

• অবন্তিকার মৃত্যুর ঘটনায় দ্রুততম সময়ে বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। 

• অংকনের মৃত্যুসহ আগের অভিযোগের দ্রুত তদন্ত ও সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করতে হবে।

• আগের প্রক্টোরিয়াল বডির বিরুদ্ধে গ্রহণযোগ্য তদন্ত করতে হবে এবং দোষীদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। 

এবং 

• অবন্তিকা ও অংকনের স্মৃতিতে ক্যাম্পাসে দুটি স্থায়ী ফলক নির্মাণ করতে হবে৷ 

বৃহস্পতিবার বিবিএ ভবনে অবন্তিকা এবং কলা ভবনে অংকনের গ্রাফিতি অঙ্কন কর্মসূচিও ঘোষণা করেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।

 আরও পড়ুন

Also Read: কী ঘটেছিল অবন্তিকার সঙ্গে?

Also Read: অবন্তিকার অভিযোগ নিয়ে প্রক্টর অফিসের ‘অবহেলার’ তদন্ত হবে: উপাচার্য

Also Read: ‘আর কোনো অবন্তিকা যেন এভাবে ঝরে না পড়ে’

Also Read: অবন্তিকার আত্মহত্যা: দ্বীন ইসলামের সংশ্লিষ্টতা নিয়ে তথ্য চায় তদন্ত কমিটি

Also Read: উত্তাল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়