শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা. মোর্তজার নামে ঢাবিতে ভবনের নামকরণ দাবি

অর্থের বিনিময়ে কোনো ব্যবসায়ীর নামে নয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে নির্মিতব্য ভবন শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা. মোহাম্মদ মোর্তজার নামে করার দাবি জানিয়েছে 'গৌরব ৭১' নামে একটি সংগঠন।

মঙ্গলবার সংগঠনটির সভাপতি এস এম মনিরুল ইসলাম এবং সাধারণ সম্পাদক এফ এম শাহীন স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়।

তাদের এই দাবির যৌক্তিকতা মেনে নিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান।

গৌরব ৭১ এর বিবৃতিতে বলা হয়, “সম্প্রতি গণমাধ্যমের বদৌলতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ সংক্রান্ত একটি সংবাদ আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। আমরা অত্যন্ত উদ্বেগের সাথে লক্ষ করেছি, একজন বিশিষ্ট ব্যবসায়ীর নামে ঐতিহ্যবাহী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারের নির্মিতব্য ভবনের নামকরণ করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে একটি মহল।

“আমরা এই প্রচেষ্টার প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমরা মনে করি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের সাথে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি গৌরবদীপ্ত, গুরুত্বপূর্ণ ও ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানের যে কোনো স্থাপনার নামকরণ করার ক্ষেত্রে এ ধরনের একটি সিদ্ধান্ত কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত নীতিকে উপেক্ষা করে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে আর্থিক অনুদান নিয়ে ভবনের নামকরণের সিদ্ধান্ত ‘অত্যন্ত লজ্জাকর’ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং জাতির জন্য ‘খুবই অপমানজনক’ মনে করছে গৌরব ৭১।

শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা. মোহাম্মদ মোর্তজা

শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা. মোহাম্মদ মোর্তজার নামে নির্মিতব্য ভবনটির নামকরণের দাবি জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, এর মধ্য দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা, এর গৌরবের ইতিহাস ও ঐতিহ্যকেই তুলে ধরা হবে।

১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের সহযোগীরা আল বদর সদস্যরা অন্য অনেক বুদ্ধিজীবীর মতো ডা. মোর্তজাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুলার রোডের বাসভবন থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে হত্যা করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনিই একমাত্র শহীদ চিকিৎসক।

এবিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তাদের এই দাবিটি অপ্রাসঙ্গিক নয়, খুবই প্রাসঙ্গিক। বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ বুদ্ধিজীবীদের নামে কোনো স্থাপনা নামকরণ করা গৌরবের বিষয়। এই ধরনের উদ্যোগ আমাদের আছে।”

“ব্যবসায়ীর নামে ভবন নির্মাণের বিষয়টি মিস-ইন্টারপ্রেট হয়েছে। আমাদের অধিকাংশ ভবনই শহীদ বুদ্ধিজীবী, মুক্তিযোদ্ধা ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির নামে। বাকিগুলোও আমরা ক্রমান্বয়ে করব,” বলেন তিনি।