“আমরা ফেইসবুকে অনেককেই দেখছি প্রক্টরের পক্ষে কথা বলার চেষ্টা করছেন। পরবর্তীতে আপনাদেরকেও স্বৈরাচারের দোসর হিসেবে পরিগণিত করা হবে।”
Published : 29 Dec 2024, 09:42 PM
ঘৃণার প্রতীক হয়ে ওঠা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি সংলগ্ন মেট্রোরেলের পিলারে আঁকা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি মুছে ফেলার চেষ্টায় ঘটনায় প্রক্টরের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন একদল শিক্ষার্থী।
শনিবার সন্ধ্যায় ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী শিক্ষার্থীবৃন্দ’ ব্যানারে এ মিছিল টিএসসির পায়রা চত্বর থেকে শুরু হয়ে ভিসি চত্বর, হল পাড়া ঘরে ভিসি কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়।
পরে ভিসি কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা।
সমাবেশে নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মাহিদুজ্জামান জ্যোতি বলেন, “গতকাল শেখ হাসিনার ঘৃণাস্তম্ভ মুছে দিয়েছে প্রশাসন। আগের প্রশাসন আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদ কায়েমে সহযোগিতা করছে। এখনো তারাই এসব করে বেড়াচ্ছে। আমরা সংস্কার চাই।”
দায়িত্ব পালন করতে না পারলে প্রক্টরকে দায়িত্ব ছাড়ার আহ্বান জানান তিনি।
গণ অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ অগাস্টে সরকার পতনের পর শেখ হাসিনার ওই ছবিতে লাল ছোপ দিয়ে তাতে জুতার মালা পরিয়ে দেওয়া হয়। ওই ছবিটি জনতার ক্ষোভ ও ঘৃণার প্রতীক হয়ে ওঠে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার রাত ২টার দিকে কয়েকজন লোক মেট্রোরেলের পিলারে শেখ হাসিনার ছবি মুছতে গেলে শিক্ষার্থীরা বাধা দেন। পরে তারা জানতে পারেন, প্রক্টরের অনুমতিতেই এই কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
এসময় একটি পিলারে শেখ মুজিবুর রহমানের সম্পূর্ণ ছবি, অন্যটিতে শেখ হাসিনার ছবির মুখের অংশ মুছে ফেলা হয়।
পরে শিক্ষার্থীরা বাধা দিয়ে মোছা বন্ধ করেন এবং পুনরায় সেখানে শেখ হাসিনার ব্যঙ্গচিত্র আঁকেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী। এরপর তারা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন।
সন্ধ্যার সমাবেশে আইন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম রিয়াদ বলেন, “ইতিহাসকে মুছে ফেলার চেষ্টা এবং পাঁয়তারায় যুক্ত আছে রাষ্ট্রযন্ত্র, গোয়েন্দা সংস্থা এবং বিদ্যালয় প্রশাসন। খুবই পরিকল্পিতভাবে শেখ হাসিনার ঘৃণাস্তম্ভ মুছে ফেলার চেষ্টা করা হলো।”
তিনি প্রশাসনের উদ্দেশে প্রশ্ন রেখে বলেন, “আপনার যদি ভুলের উপরে ক্যাম্পাস চালাতে থাকেন, তাহলে আমরা কীভাবে ক্যাম্পাসে টিকব। যেদিন এই ক্যাম্পাসে একজন মানুষ খুন হয় সেদিনই প্রক্টর তার আসনে থাকার নৈতিক ভিত্তি হারিয়ে ফেলেছেন।”
অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী তানভীর আহমেদ জিম বলেন, “আমরা ফেইসবুকে অনেককেই দেখছি প্রক্টরের পক্ষে কথা বলার চেষ্টা করছেন। পরবর্তীতে আপনাদেরকেও স্বৈরাচারের দোসর হিসেবে পরিগণিত করা হবে।”
ছবি মোছার ঘটনায় পরে দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ। তিনি বলেছেন, এ ঘটনার পেছনে কারো কোনো ষড়যন্ত্র নেই।
পরে প্রক্টর কার্যালয় এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, হাসিনার ছবি আঁকা সেই পিলারকে ‘ঘুণাস্তশ্ভ’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হবে।
শিক্ষার্থীরা চাইলে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সংবলিত পিলারটিকেও একই স্বীকৃতি দেওয়া হবে বলে জানান প্রক্টর।