“চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ৯ ছাত্রীকে অগণতান্ত্রিক ও স্বৈরাচারী কায়দায় বহিষ্কার করা হয়েছ।”
Published : 06 Mar 2025, 05:48 PM
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর দেশে নারী নিপীড়নের ঘটনা ‘বেড়েই চলেছে’ মন্তব্য করে বেশ কিছু দাবি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক।
বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে শিক্ষকরা বলেন, “জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ন্যাক্কারজনকভাবে নারীবিদ্বেষী কথা বলেছেন এবং সেটির সঙ্গে ধর্ম ও আইনের ভুল-ভাল ব্যাখ্যা কৌশলে যুক্ত করে দিয়েছেন।”
সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬৭ জন শিক্ষকের নাম রয়েছে বিবৃতিতে, যেখানে নারী নির্যাতনের কয়েকটি ঘটনাও তুলে ধরা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, অভ্যুত্থানের পর দেশে নারীর প্রতি যৌন নিপীড়ন, হয়রানি, বিদ্বেষ বেড়েই চলেছে।
“নারীরা সমাজের বিভিন্ন স্তরে নানাভাবে হেয় প্রতিপন্ন হচ্ছেন; ‘মাইক্রো-এগ্রেশনের’ শিকার হচ্ছেন।”
বিবৃতিতে বলা হয়, “চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ৯ ছাত্রীকে অগণতান্ত্রিক ও স্বৈরাচারী কায়দায় বহিষ্কার করা হয়েছে, যেটি নারীর প্রতি কাঠামোগত (সিস্টেমেটিক) নিপীড়নেরই একটি রূপ বলে আমরা মনে করি।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের আত্মপ্রকাশের দিন নারী ‘নিপীড়নের’ ঘটনা; ঢাকার লালমাটিয়ার চায়ের দোকানে ধূমপানের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ‘মব’ তৈরি, রাজশাহীগামী বাসে ডাকাতির পর নারীকে ‘নিপীড়ন’ এবং বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের প্রসঙ্গও তুলা ধরা হয় বিবৃতিতে।
শিক্ষকদের দাবির মধ্যে রয়েছে- চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯ ছাত্রীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের জড়িত নেতাকর্মীদের শাস্তির আওতায় আনা; লালমাটিয়ার ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বক্তব্য প্রত্যাহার এবং বাসে ধর্ষণের ঘটনার জড়িতদের শাস্তি।
বিবৃতি দেওয়া শিক্ষকদের তালিকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুন, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সামিনা লুৎফা, উন্নয়ন অধ্যায়ন বিভাগের অধ্যাপক কাজী মারুফুল ইসলাম, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরীন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মির্জা তাসলিমা সুলতানা, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক আ-আল মামুন, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রামীণ সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কাজী ফরিদ ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক অভী চৌধুরীর নাম রয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের আসিফ মোহাম্মদ শাহান, ইংরেজি বিভাগের তাসনীম সিরাজ মাহবুব, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের মার্জিয়া রহমান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইইআর বিভাগের হাসান তৌফিক ইমাম, যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সুবর্ণা মজুমদার, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের হানিয়্যম মারিয়া খান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাসির আহমেদ ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক সৌমিত জয়দ্বীপ ও ইসমাইল সাদীর নামও রয়েছে বিবৃতিতে।
তালিকায় আছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শরমিন্দ নীলোর্মি, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের আর রাজী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের কাজী মামুন হায়দার ও ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের অলিউর সানও।