বাণিজ্য বাড়াতে বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর ‘এমওসি’

২০২১-২০২২ অর্থবছরে সিঙ্গাপুরে ১২ কোটি ৭১ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ; আমদানি করেছে ৪১১ কোটি ৫৮ লাখ ডলারের পণ্য।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Nov 2022, 05:18 AM
Updated : 17 Nov 2022, 05:18 AM

মেমোরেন্ডাম অব কো-অপারেশন (এমওসি) স্বাক্ষরের মাধ্যমে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোর পথে একধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুর।

বাংলাদেশ সফররত সিঙ্গাপুরের ট্রান্সপোর্ট, ট্রেড রিলেশনস এবং শিল্পমন্ত্রী এস ইসওয়ারান এবং বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনশি বুধবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।

বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুরের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি বিশাল। ২০২১-২০২২ অর্থবছরে সিঙ্গাপুরে ১২ কোটি ৭১ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। একই সময়ে আমদানি করেছে ৪১১ কোটি ৫৮ লাখ ডলারের পণ্য।

দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণের মাধ্যমে এই ঘাটতি ধীরে ধীরে কমিয়ে আনা যাবে বলে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে আশা প্রকাশ করেন টিপু মুনশি।

সিঙ্গাপুরের মন্ত্রী ইসওয়ারান বলেন, গত ওয়ার্ল্ড ইকনোমিক ফোরামের সাইডলাইন আলোচনায় দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্প্রসারণের বিষয়টি আলোচনায় আসে। তারই ধারাবাহিকতায় এবার প্রাথমিক পর্যায়ে এই চুক্তি হল।

“এই চুক্তির ফলে দুই দেশে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সম্ভাবনাগুলো খুঁজে বের করা সহজ হবে। জনগণের কল্যাণে সাপ্লাই চেইনকে শক্তিশালী করতে আমরা পরস্পরের প্রয়োজন অনুযায়ী কাজ করতে পারব।

“বাংলাদেশের সম্ভবনাগুলো নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। খাতভিত্তিক সম্ভবনাগুলো নিয়ে আরও আলোচনা প্রয়োজন। ফলে দুই দেশের বিনিয়োগকারীরা তাদের সম্ভাবনা ও সুযোগ সম্পর্কে সঠিক ধারণা পাবে। চুক্তি স্বাক্ষর হচ্ছে প্রথম ধাপে এগিয়ে যাওয়া। দুই দেশের বাণিজ্য সম্প্রসারণে একটি জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ রয়েছে; তারা এ বিষয়ে আরও কাজ করবে।”

এই সফরে বাংলাদেশের একাধিক মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে সিঙ্গাপুরের মন্ত্রী বলেন,  “আলোচনায় নবায়নযোগ্য জ্বালানি, তথ্য প্রযুক্তি, অবকাঠামো, আকাশ যোগাযোগ খাতে অনেক সম্ভবনার দিক ফুটে উঠেছে। এখানে সিঙ্গাপুর বিজনেস ফেডারেশনের প্রতিনিধিরা আমার সাথে এসেছেন। বাংলাদেশের বিনিয়োগকারীরাও কীভাবে সিঙ্গাপুরে বিনিয়োগ করে লাভবান হতে পারেন, সেই সুযোগগুলো খুঁজে দেখতে আমি বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানাই।

“সরাসরি সিঙ্গাপুরভিত্তিক বিনিয়োগ কিংবা সিঙ্গাপুরকে ব্যবহার করে আসিয়ান দেশগুলোতে বাণিজ্য সম্প্রসারণের সুযোগ রয়েছে। সেক্ষেত্রে অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধি দলকে সিঙ্গাপুরে সফরের আমন্ত্রণ জানাই।”

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, পণ্য, সেবা ও বিনিয়োগ খাতে সিঙ্গাপুরের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক জোরদার করা প্রয়োজন।

“বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি করতে উভয় দেশের মধ্যে ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্ট (এফটিএ) স্বাক্ষরের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। আশা করা যায় শিগগিরই আলোচনা শুরু করা সম্ভব হবে। উভয় দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত মেমোরেনডাম অফ কো-অপারেশন (এমওসি) বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে।”

দুই দেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগের আলোচনায় পাট ও পাটজাত পণ্য, টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেলস, কৃষি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, আইসিটি, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, দক্ষতা উন্নয়ন উদ্যোগ ও পরিবহন খাতের বিষয় এসেছে বলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে।