“আমরা যদি রিলেজিয়াস ট্যুরিজম বাড়াতে পারি, আমাদের ট্যুরিজম এগিয়ে যেতে পারে; আর পলিসিটা যাতে ইকো-ট্যুরিজম ফ্রেন্ডলি হয়,” বলছেন এফবিসিসিআই সভাপতি।
Published : 01 Feb 2024, 05:49 PM
পর্যটন খাতে বিভিন্ন দেশ বেশ এগোলেও বাংলাদেশ যে তার কাঙ্ক্ষিত জায়গা অর্জন করতে পারেনি, তা মানছেন পর্যটন মন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান।
তার ভাষ্যে, “পর্যটন শিল্প আজকে কিন্তু একটা খুব ভালো নাম অর্জন করেছে। এবং আমরা আমাদের বক্তব্যে স্বীকার করেছি, আমরা ইতোমধ্যে সেই জায়গা অর্জন করতে পারিনি। এবং আমরা এটাও স্বীকার করেছি, আমাদের সে অপার সম্ভাবনা আছে।
“এখন পলিসির ব্যাপারে কথা হয়েছে। আমার মনে হয়, আমাদের সরকারের যে পলিসি আছে, সেই পলিসি কিন্তু খুবই পর্যটনবান্ধব।”
বৃহস্পতিবার দুপুরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (টোয়াব) তিন দিনের পর্যটন মেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছিলেন ফারুক খান।
“আমি জানি পলিসিতে দুই-তিনটা সমস্যা আছে। যেগুলোকে আমরা অ্যাড্রেস করছি, যেমন- অন অ্যারাইভাল ভিসা। ইতোমধ্যে আমরা এ ব্যাপারে কথা বলা শুরু করেছি। বিশেষ করে যারা ট্যুরিস্ট, তারা যাতে অন অ্যারাইভাল ভিসা পান, এ ব্যাপারগুলো নিয়ে আমরা কাজ করছি।”
২০০৯ সালের সরকারে বাণিজ্য এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল ফারুক খানকে ১০ বছর পর আবারও বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ে ফেরানো হয়েছে মন্ত্রী করে।
পর্যটন মন্ত্রী বলেন, “এটা মানুষকে জানাতে হবে যে বাংলাদেশে কী কী সুবিধা আছে, কী কী পর্যটনের সম্ভাবনা আছে এবং সেখানে তারা কীভাবে আসবে। আসা-যাওয়ার যে ব্যাপারটা এটাকে সুন্দর করতে হবে। আমি মনে করি, আমাদের ব্যবসায়ীদের প্রচার-প্রসার আরও বাড়াতে হবে। এবং সেবার মান আরও উন্নত করতে হবে।
“আমি বিশেষভাবে বলব, সেবার মান আরও উন্নত করা দরকার। আমরা বারবার বলি, আমরা খুব অতিথিপরায়ণ। সেবার মানে উন্নয়ন ঘটিয়েই সেটা প্রমাণ করতে হবে। শুধু মুখে বললে হবে না।”
ফারুক খান বলেন, “আমাদের যারা ট্যুরের সঙ্গে জড়িত, তাদেরকে প্রশিক্ষণ দিতে হবে। এই কাজগুলি অলরেডি সরকারি সংস্থাগুলো করছে; কিন্তু আমি জোর গলায় বলব পর্যটনশিল্পে সরকারের প্রধানতম কাজ হচ্ছে পলিসি মেকিং। এটা কিন্তু প্রাইভেট সেক্টরকে দিয়ে কাজ করাতে হবে, দায়িত্ব নিতে হবে।”
এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, “বাংলাদেশ পৃথিবীর মানচিত্রে অন্যতম সুন্দর একটি দেশ। ইকো-ট্যুরিজমে আমরা অনেক ইনভেস্টমেন্ট পেতে পারি। আমাদের অবকাঠামো রেডি, কিন্তু, আমাদের পলিসি ঠিক নেই।
“আমাদের লোকাল কানেক্টিভিটি বাড়ছে। আমরা যদি রিলেজিয়াস ট্যুরিজম বাড়াতে পারি, আমাদের ট্যুরিজম এগিয়ে যেতে পারে। আর পলিসিটা যাতে ইকো-ট্যুরিজম ফ্রেন্ডলি হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।”
টোয়াব সভাপতি শিবলুল আজিম কোরেশী বলেন, “২০০৭ সাল থেকে টোয়াব এই মেলা করে যাচ্ছে। এটির উদ্দেশ্য হলো বিশ্বের বুকে বাংলাদেশের পর্যটনকে তুলে ধরা। বিশ্বে কোন কোন দেশে জিডিপিতে ৬০-৭০ শতাংশ পর্যটনের অবদান আছে।
“আমরা চেষ্টা করলে দেশের জিডিপিতে অন্তত ১০ শতাংশ পর্যটনের অবদান নিয়ে আসতে পারব। পর্যটন বিকশিত হলে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ উপকৃত হবে।”
মেলায় ভারত, নেপাল, মালদ্বীপ, সিঙ্গাপুর, ভিয়েতনাম, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও তুরস্কের ট্যুর অপারেটর ও ট্রাভেল এজেন্টরা অংশ নিয়েছে। আন্তর্জাতিক ও দেশি এয়ারলাইন্স, ট্যুরিজম বোর্ড, ট্রাভেল এজেন্সি, ট্যুর অপারেটর, হোটেল, রিসোর্ট, ক্রুজ লাইনার, হসপিটাল প্রদর্শক হিসেবে অংশগ্রহণ করেছে।
মেলা চলবে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত। মেলায় প্রবেশ মূল্য ৩০ টাকা; তবে ছাত্র-ছাত্রী ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য প্রবেশ উন্মুক্ত থাকবে। ৩দিন ব্যাপী মেলার পর্দা নামবে শনিবার।
ঢাকায় ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূত ন্যুয়েন মান কুঅং, নেপালের রাষ্ট্রদূত ঘনশ্যাম ভান্ডারী অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শফিউল আজিম, বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান আফতাব আহমেদ, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মোহাম্মদ জাবের, টোয়াব পরিচালক (বাণিজ্য ও মেলা) আনোয়ার হোসেন।