“যারা ঝামেলা করেছে, কোরিয়া সিন্ডিকেট করেছে; সিঙ্গাপুরে লোক নেওয়া সিন্ডিকেট,” পাল্টা অভিযোগ সংগঠনের সভাপতির।
Published : 10 Jun 2024, 11:01 PM
জনশক্তি রপ্তানিকারকদের সংগঠন বায়রার বার্ষিক সাধারণ সভায় হৈচৈ ও বিশৃঙ্খলার মধ্যে জ্যেষ্ঠ সহসভাপতিসহ বেশ কিছু সদস্যকে নাজেহাল করার অভিযোগ উঠেছে।
বিদেশে জনশক্তি পাঠাতে ‘সিন্ডিকেট’ করা নিয়ে একাংশের অভিযোগের মধ্যে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিজের (বায়রা) বার্ষিক এ সভা (এজিএমে) উত্তপ্ত হয়ে ওঠে, যা পরে বিশৃঙ্খলায় রূপ নেয়।
পরে দুই অংশ এ ঘটনায় একে অপরকে দায়ী করে ‘সিন্ডিকেট’ করা নিয়ে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ তোলে।
সোমবার ঢাকায় হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে সংগঠনের ৩৩তম এজিএম অনুষ্ঠিত হয়। সভা চলাকালে জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি রিয়াজ-উল-ইসলাম ও কয়েকজন সদস্যকে নাজেহালের প্রতিবাদে একাংশ তা বর্জন করে।
পরে এ নিয়ে অভিযোগ তুলে ধরতে সাধারণ সদস্যদের ব্যানারে রাজধানীর নয়াপল্টনের একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলন করে।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি রিয়াজ-উল-ইসলাম এজিএমে ‘উস্কানি’ দিয়ে বিশৃঙ্খলা তৈরি ও ‘হামলার’ অভিযোগ তোলেন সভাপতি আবুল বাশার ও মহাসচিব আলী হায়দায় চৌধুরীর বিরুদ্ধে।
এ সময় অন্যদের মধ্যে বায়রার প্রথম যুগ্ম মহাসচিব ফখরুল ইসলাম, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক রেহানা পারভীন উপস্থিত ছিলেন।
তবে সভাপতি আবুল বাশার অভিযোগ অস্বীকার করে উল্টো সংবাদ সম্মেলনকারী অংশকে ঘটনার জন্য দায়ী করে।
এজিএমের পরিস্থিতির বিবরণে রিয়াজ বলেন, “কিছুদিন আগে বাংলাদেশ থেকে অনেক শ্রমিক মালয়েশিয়ায় যেতে পারেননি। এ ঘটনায় দেশজুড়ে আলোচনা-সমালোচনা তৈরি হয়। আপনারা হিসাব করেন গড়ে সাড়ে ৫ লাখ টাকা হিসাবে ৫০ হাজার লোক যেতে পারে নাই। যেখানে সরকার নির্ধারিত টাকা ছিল ৭৮ হাজারের কিছু বেশি। এই বিশাল অঙ্কের টাকাটা কি হল? কোথায় গেল? এটা নিয়ে কেউ কথা বলছে না।
“প্রতিটি মেজর আর্থিক ডিসিশনের জন্য বায়রার মিটিং করা লাগে৷ সে ধরনের কোনো মিটিং না করে বর্তমান সভাপতি সিন্ডিকেটধারীদের সাথে হাত মিলিয়ে সিদ্ধান্ত নেয় বায়রা এই দায়ভার নেবে। মাত্র ১০০ জন সিন্ডিকেটের সাথে সম্পৃক্ত ছিল। যেখানে ৩ হাজার সদসের এই সংগঠন কীভাবে তাদের দায়-দায়িত্ব নেবে?”
তার অভিযোগ, “আজকে আমাদের রুটিন এজিএম ছিল। যথারীতি সব কিছু ঠিকঠাক ছিল। সেখানে কথা বলার জন্য জামিল হোসেন (বায়রার সদস্য) কার্ড দেওয়ার পর সভাপতি তার দিকে তেড়ে আসলেন এবং তাচ্ছিল্য করে কার্ড রেখে উনি চলে গেলেন।
“ (তার)চলে যাওয়ার পর আগে থেকে শিখিয়ে দেওয়া ‘সো কল্ড’ কিছু মেম্বার দুই গ্রুপ থেকে আমাদের মারার জন্য তেড়ে আসে। সঙ্গে-সঙ্গে আমার কলিগ ছিল, তারা আমাকে সেইভ করে।”
তিনি বলেন, “একটা এজিএম, সেখানে বার্ষিক প্রতিবেদন পড়ার কথা মহাসচিরে। কিন্তু সেটা না পড়ে তাড়াহুড়া করে সেটাকে পঠিত গণ্য করে ফাইলবন্দি করে ফেলা হল। পড়ার বা দেখার সুযোগ দেওয়া হল না।”
অভিযোগের বিষয়ে যা বললেন সভাপতি
এসব অভিযোগের বিষয়ে বায়রার সভাপতি আবুল বাশার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমাদের এজিএম অত্যন্ত সুন্দরভাবে সম্পন্ন হয়েছিল। শেষ মুহূর্তে বিবিধ কথা নিয়ে ঝামেলা হয়। যারা ঝামেলা করেছে, এরা কোরিয়া সিন্ডিকেট করেছে, সিঙ্গাপুরে লোক নেয়া সিন্ডিকেট।”
’মালয়েশিয়ার সিন্ডিকেট’ এজিএমের অংশ না মন্তব্য করে তিনি বলেন, “এটা এজেন্ডাও ছিল না। এটা এখানে আসার কোনো যুক্তি নেই। ওরা সংবাদ সম্মেলনে যেসব অভিযোগ করেছে সেগুলো, সব মিথ্যা। এগুলো ওরা বলেছে, ওরা সিন্ডিকেটে আসতে পারেনি বলে। ওরা চাইছে সিন্ডিকেটে আসতে। এজন্য এসব করেছে।”
সিন্ডিকেটের আর্থিক অনিয়মের অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, “তাদের যদি কোনো অভিযোগ থাকে তারা বায়রার কাছে লিখিত আবেদন করুক। আমরা তদন্ত কমিটি করে, যাচাই বাছাই করে ব্যবস্থা নেব। অথবা মন্ত্রণালয়, বিএমইটিতে আবেদন করুক।”