এসব পণ্যের বিক্রেতারাও অপেক্ষা করেন একেবারে চাঁদরাত পর্যন্ত। শেষ মুহূর্তেই তাদের বিক্রি জমে ওঠে।
Published : 30 Mar 2025, 03:02 PM
ঈদ উদযাপনে পরিবারের সদস্যদের যাবতীয় কেনাকাটা সেরে পুরুষদের অনেকেই শেষ মুহূর্তে ভিড় করছেন টুপি-আতরের দোকানে; নিজের পাশাপাশি পরিচিত বন্ধু-স্বজনদের জন্য অনেক খুঁজে পছন্দের টুপি, আতর আর জায়নামাজ কিনে বাসায় ফিরছেন।
এসব পণ্যের বিক্রেতারাও অপেক্ষা করেন একেবারে চাঁদরাত পর্যন্ত। শেষ মুহূর্তেই তাদের বিক্রি জমে ওঠে।
ঈদের দুদিন আগে শনিবার ভিড় দেখা যায় ঢাকার বায়তুল মোকাররম মসজিদ মার্কেট, গুলিস্তান, কাঁটাবন মসজিদ মার্কেট ও কাকরাইল মসজিদ মার্কেটসহ ফুটপাতের বিভিন্ন টুপি-আতরের দোকানে। কেউ পছন্দের পাঞ্জাবির সঙ্গে মিল করে টুপি কিনছিলেন। কেউ মৃদু সুগন্ধের আতর নাকে ধরে দেখছিলেন।
এসব মার্কেট ঘুরে দেখা যায়, পুরুষদের ‘পছন্দ বেশি’ হাতে বোনা রঙবেরঙের কারুকাজের টুপি, মৃদু সৌরভে আতর। নিজের পাশাপাশি বন্ধু-স্বজনদের উপহার দিতেও কিনছেন টুপি, আতর ও জায়নামাজ।
বায়তুল মোকাররম মসজিদ মার্কেটের নিচতলায় আতর-টুপির দোকানের সংখ্যা বেশি। ঈদ উপলক্ষে নতুন নতুন আতর ও আতরদানি, সুরমা, তসবিহ রেখেছেন দোকানিরা।
রাজধানীর বনশ্রী থেকে বায়তুল মোকাররম মার্কেটে টুপি ও তসবিহ কিনতে এসেছিলেন নজরুল ইসলাম। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “বন্ধুকে ঈদের দিন সকালে টুপিটা দিব। পাশেই থাকে। আর একটা তসবিহ দিব। এজন্য মার্কেটে আসলাম ভালো একটা টুপি কিনতে।”
এই মার্কেটে ছোট পুতির সঙ্গে সোনালি জড়ির কাজ, ছোটো স্বচ্ছ প্লাস্টিক বসানো হাতে তৈরি নিখুঁত রঙিন টুপি বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ২ হাজার টাকায়। সুতির টুপি ৫০ টাকা থেকে শুরু করে বিভিন্ন দামে বিক্রি হচ্ছে। আমদানি করা রুমি (মিশরী), পাথর বাধাই সিন্ধি টুপি ও জিন্নাহ টুপি বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
চীনা ও পাকিস্তানি টুপি পাওয়া যাচ্ছে ২৫০ টাকা থেকে ২ হাজার টাকার মধ্যে। তুরস্ক, ভারত, সৌদি আরব, কাতার, মালয়েশিয়া থেকেও আমদানি করা টুপি বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন দোকানে। ১০০ থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত দামে সেগুলো বিক্রি হচ্ছে। অনেক দোকানে ১০ হাজার টাকা দামেও টুপি পাওয়া যাচ্ছে।
টুপিতে কেমন মানাবে তার জন্য প্রত্যেক দোকানেই রয়েছে আয়না। ক্রেতারা টুপি কেনার সময় একপলক সেটা দেখেও নিচ্ছেন।
অপরদিকে দেশের বাজারে এখন ম্যধপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে বানানো হোয়াইট, এলিটো, কোরাঈশি, সুরগতি, ওধ, চকোলেট মাক্স সুলতান, আমির আল কুয়াদিরাজা ওপেন, জান্নাতুল ফেরদৌস, রয়েল, ওরেঞ্জ, সফট, লর্ডনিভিয়া মেন, রয়েল ম্যাবরেজজপি ও রাসা নামে আতর পাওয়া যাচ্ছে। ফ্রান্সের কুলওয়াটার ও ডানহিল বানানো হয় দুবাইতে। সেই আতর দেশে আসে বিভিন্ন হাত ঘুরে। ফিগো, হ্যাভোক, সিকোওয়ান, ইস্কেফ, গোল্ডেন সেন্ট নামেও আতর বিক্রি হচ্ছে।
একেকটা আতরের ফ্লেভারও একেকরম। ক্রেতারা সেগুলো কেনার সময় হাতের কবজির পৃষ্ঠে লাগিয়ে নাকে ধরে সুগন্ধ যাচাই করছেন।
বায়তুল মোকাররম মসজিদ মার্কেটের আত-তকদির ট্রেডার্সের মোহাম্মদ উল্ল্যাহ বলেন, ১০০ টাকা থেকে শুরু করে ১৫ হাজার টাকা দামেরও আতর দিতে পারনে। যার যতটুকু লাগে নিতে পারবেন।
আল নূর স্টোরের মোহাম্মদ সুমন বলেন, “পরিমাণের ওপর নির্ভর করে বোতলের দাম কত হবে। সাধারণত ২০০ থেকে ৩০০ টাকায় যতটুকু আসে, তাই নেয় ক্রেতারা।”
এবার হোয়াইট ও ওথ নামের আতর ৩ মিলি লিটারের শিশি পাওয়া যাচ্ছে ১৫০ টাকায়। সুরগতি ১০০ টাকায়, এলিটো ৯৫০ ও কোরাঈশি ৩ মিলি লিটারের শিশির দাম ৯৫০ টাকা। বিভিন্ন দোকানে চীনের ওয়ানি ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, আর মধ্যপ্রাচ্যের অ্যারাবিয়ান আতর ২ হাজার টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
তাজেরি শপের দোকানি মোহাম্মদ জিয়াদ বলেন, বোতলের শিশি অনুযায়ী ২০০ টাকা থেকে ১০ হাজার টাকা দামের আতর পাওয়া যাচ্ছে তার দোকানে।