আরেক দফা ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের

বিশ্ববাজারে দাম বেড়ে যাওয়াকে কারণ হিসেবে দেখিয়ে দেশে ভোজ্যতেলের দাম আরও এক দফা বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক বৈঠক থেকে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Oct 2021, 03:26 PM
Updated : 17 Oct 2021, 03:26 PM

রোববার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে নিত্যপণ্য মজুত পরিস্থিতি, আমদানি, দাম নির্ধারণ সংক্রান্ত বৈঠকে প্রতিলিটার বোতলজাত সয়াবিন ১৬০ টাকা এবং খোলা সয়াবিনের দাম ১৩৬ টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এ.এইচ.এম. সফিকুজ্জামান।

এতে আগের বেধে দেওয়া বাজারমূল্যের চেয়ে প্রতিলিটার বোতলজাত ও খোলা সয়াবিনের দাম সাত টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব করা হল। তবে ভোজ্যতেল পরিশোধনকারী কোম্পানিগুলো আরও বেশি বাড়ানোর প্রস্তাব করেছিল ।

তবে গত কয়েক সপ্তাহ থেকেই বাজারে আগের বেধে দেওয়া দামের চেয়ে অনেক বেশি দরে বিক্রি হচ্ছিল ভোজ্যতেল।

চলতি সপ্তাহে খুচরা পর্যায়ে রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন দোকানে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বোতলজাত সয়াবিন প্রতিলিটার ১৫৬ থেকে ১৫৮ টাকা এবং খোলা সয়াবিন প্রতিলিটার ১৪২ থেকে ১৪৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এর আগে ৫ সেপ্টম্বর মন্ত্রণালয়ের বৈঠকে পাম তেল ছাড়া খুচরা পর্যায়ে সয়াবিন তেলের দাম আগের মতোই রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছিল।

মন্ত্রণালয় নির্ধারিত আগের দাম ছিল প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন ১২৯ টাকা, প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ১৫৩ টাকা, ৫ লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ৭২৮ টাকা।

তবে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ওই দিনের সভায় পাম তেলের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়।

রোববার বৈঠক শেষে ভোজ্যতেলের দামের বিষয়ে আমদানি ও অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য (আইআইটি) অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব এ.এইচ.এম. সফিকুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, “ওনাদের (বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন) প্রস্তাব ছিল বোতলজাত কেজিপ্রতি তেল ১৬৮ টাকা করার।

“ট্যারিফ কমিশন একাধিকবার বসে অ্যানালাইসিস করে ১৬২ টাকা প্রস্তাব করেছে। এটা ছিল সেপ্টেম্বর মাসের ‘অ্যাভারেজ রিপোর্ট’। আজ দীর্ঘক্ষণ আলোচনা করে প্রতি কেজি বোতলজাত তেলের দাম প্রস্তাব করা হয়েছে ১৬০ টাকা। যেটার আগে দাম ছিল ১৫৩ টাকা।”

তিনি বলেন, “প্রস্তাব করা হয়েছে খোলা সয়াবিন প্রতি লিটার ১৩৬ টাকা, বোতলজাত ৫ লিটার তেলের দাম ৭৬০ টাকা, আর পাম তেল ১১৯ টাকা। আগে যা ছিল খোলা সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১২৯ টাকা, ৫ লিটারের বোতল ৭২৮ টাকা ও পাম তেল ১১৬ টাকা।”

অতিরিক্ত সচিব বলেন, “এ প্রস্তাব বাণিজ্য সচিবের কাছে উপস্থাপন করা হবে। তিনি মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে এটি চূড়ান্ত করে পরে রিফাইনারিদের জানিয়ে দেওয়া হবে। পরে রিফাইনারিরা তাদের প্যাডে এটি ঘোষণা করবেন।

রিফাইনারিগুলো ৪ অক্টোবর দাম বাড়ানোর আবেদন করেছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, “ট্যারিফ কমিশন চিনি ও তেলের ক্ষেত্রে আমাদের রিপোর্ট দেয়। পেঁয়াজের দাম অস্থির ছিল। গত এক সপ্তাহে আমরা স্পেশাল ফোকাস দিয়ে, আল্লাহ রহম করেছে, পেঁয়াজের বাজারটা মোটামুটি একটা ভালো পর্যায়ে নিয়ে আসতে পেরেছি।”

মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ আসছে জানিয়ে সফিকুজ্জামান বলেন, “এতে ভারতের উপর পেঁয়াজ আমদানির নির্ভরতা কমবে। আমি ধারণা করছি, পেঁয়াজের বাজার আর অস্থির হবে না। পেঁয়াজে আমরা স্বস্তি দিতে পারব, এই প্রত্যাশা আমরা ব্যক্ত করতে পারি।“

চিনির রেগুলেটরি ডিউটি কবে থেকে কার্যকর হচ্ছে তা অ্যাসেসমেন্ট করে খুব শিগগির সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।