চালের দাম আরও কমাতে ব্যবস্থা চায় সংসদীয় কমিটি

চালের দাম আরও কমাতে খাদ্য মন্ত্রণালয়কে ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে সংসদীয় কমিটি।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Sept 2021, 02:29 PM
Updated : 20 Sept 2021, 02:29 PM

একইসঙ্গে চালের ঊর্ধ্বগতি রোধে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ায় মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদও জানিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।

সোমবার এই কমিটির বৈঠকে চালের দামসহ খাদ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের বিভিন্ন কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা হয়।

বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি দীপংকার তালকুদার সাংবাদিকদের বলেন, “চালের দাম কমার জন্য আমরা ধন্যবাদ দেইনি। দাম বাড়েনি, সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে- এজন্য ধন্যবাদ দিয়েছি। দাম বাড়েনি এটার জন্য তো আমরা ধন্যবাদ দিতেই পারি।”

মন্ত্রণালয়ের পদেক্ষেপে চালের দাম কিছুটা কমেছে দাবি করে তিনি বলেন, “চালের দাম কমেছে। তবে, এটি খুবই সামান্য। আমরা দাম আরও কমানোর জন্য পদক্ষেপ নেয়ার পরামর্শ দিয়েছি।”

সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বৈঠকে চালের দামের ঊর্ধ্বগতি রোধে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য কমিটি মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ জানায় এবং এ উদ্যোগ অব্যাহত রাখার জন্য সুপারিশ করে।

ট্রেডিং করপোরশেন অব বাংলাদেশ- টিসিবি এর তথ্য অনুযায়ী সোমবার রাজধানীতে সরু চাল (নাজিরশাইল) বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ৬৫ টাকা প্রতি কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। মোটা চাল (স্বর্ণা) বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ৪৮ টাকা প্রতি কেজি দরে।

রাষ্ট্রায়ত্ত এ সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, গত এক মাসে সরু চালের দাম ৬ দশমিক ২৫ শতাংশ কমেছে। আর মোটা চালের দাম কমেছে ২ দশমিক ১১ শতাংশ।

বৈঠকে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের মাঠ পর্যায়ের সব কার্যক্রমে স্থানীয় সংসদ সদস্যদের সম্পৃক্ত করার সুপারিশও করা হয়।

এছাড়া খাদ্যের সার্বিক হালনাগাদ পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রতিটি সভায় তথ্য জানতে চেয়েছে স্থায়ী কমিটি।

অপরদিকে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের দুর্নীতির সার্বিক চিত্র সম্পর্কে আগামী সভায় উপস্থাপনের জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়।

কমিটি বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক খাদ্য ও পুষ্টি বিদ্যা কোর্স চালু করে নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থা নিশ্চিত করারও সুপারিশ করেছে।

লকডাউনের মধ্যে ঢাকার মোহাম্মদপুরে রোববার ৩০ টাকা কেজি দরে ওএমএসের চাল কিনছে মানুষ। ছবি: আসিফ মাহমুদ অভি

খাদ্য অধিদপ্তরের শূন্যপদে নিয়োগ নভেম্বরে

বৈঠকে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, খাদ্য অধিদপ্তরের ১০টি ক্যাটাগরির এক হাজার ৩৫টি শূন্যপদে নিয়োগ পরীক্ষা আগামী নভেম্বরে শুরু হবে।

প্রথম ধাপে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক ও ডাটা এন্টি অপারেটরের ৪০৮টি শূন্য পদে ওই মাসের প্রথম সপ্তাহের বা তার কাছাকাছি সময়ে পরীক্ষা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

অন্যান্য ক্যাটাগরির নিয়োগের লিখিত/এমসিকিউ পরীক্ষা এ বছরই সম্পন্ন করা হবে।

এক হাজার ৩৫টি শূন্য পদের বিপরীতে ১৩ লাখ ৭২ হাজার ৮৪৫ জন চাকরির আবেদন করেছেন। এ হিসাবে প্রতিটি পদের বিপরীতে আবেদন পড়েছে এক হাজার ৩২৬টি।

এদিকে সংসদীয় কমিটির আগের বৈঠকের কার্যপত্র থেকে জানা গেছে, নিয়োগ পরীক্ষার জন্য ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও উত্তরপত্র মূল্যালয়ের জন্য গত ১৫ মে বুয়েটের আইআইসিটির (ইন্সস্টিটিউট অব ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি) বিভাগের সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছে।

করোনাভাইরাস সংক্রমন পরিস্থিতি বিবেচনা করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বৃহত্তর জেলা শহর বা প্রয়োজনে নিকটবর্তী জেলায় নিয়োগ পরীক্ষা গ্রহণের পরিকল্পনা নিয়েছে খাদ্য অধিদপ্তর।

নিয়োগের লিখিত/এমসিকিউ পরীক্ষা অনুষ্ঠানে বৃহত্তর জেলাসহ অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্টদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এমসিকিউ পরীক্ষা গ্রহণের জন্য ওএমআর শিট ছাপানো ও প্রিস্কেনিং সম্পন্ন হয়েছে।

এ পদের নিয়োগ আগামী ২২ অক্টোবর নিয়োগের পরিকল্পনা থাকলেও ওই সময় বুয়েটের ভর্তি পরীক্ষা থাকায় কিছুটা পেছানো হচ্ছে।

এদিকে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের ৫৫টি শূন্য পদের নিয়োগ পরীক্ষা আগামী ২২ অক্টোবর বা কাছাকাছি সময়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এজন্য ঢাকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

কমিটির সভাপতি দীপংকর তালুকদারের সভাপতিত্বে সোমবারের বৈঠকে সদস্য খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, নুরুল ইসলাম নাহিদ, হুইপ আতিউর রহমান আতিক, ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু, আব্দুল হাই, মো. আয়েন উদ্দিন, আতাউর রহমান খান ও আঞ্জুম সুলতানা অংশ নেন।

আরও পড়ুন-