সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হল দ্রব্যমূল্য পর্যালোচনার বৈঠক

নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য পরিস্থিতি পর্যালোচনায় ব্যবসায়ীদের নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বৈঠক শেষ হয়েছে নতুন কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 August 2021, 08:57 AM
Updated : 25 August 2021, 08:57 AM

বুধবার সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বিভিন্ন পণ্যের বড় বড় সরবরাহকারী, পণ্যভিত্তিক ব্যবসায়ী সমিতি ও নীতি নির্ধারকদের নিয়ে এ বৈঠক হয়।

বৈঠক শেষে বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা ব্যবসায়ীদের নিয়ে বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেছি। এটি ছিল বছরের প্রথম বৈঠক, তাই ওইভাবে কোনো সিদ্ধান্তের কথা বলা যাচ্ছে না।

“তবে আমরা ব্যবসায়ীদের নিয়ম-নীতি মেনে ব্যবসা করার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছি। তারাও আমাদের কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।”

আন্তর্জাতিক বাজারমূল্য বেড়ে যাওয়ার কারণে চিনি ও ভোজ্যতেলের দাম বেড়ে যাচ্ছে বলে বৈঠকে আলোচনা হয়।

এ বিষয়ে সচিব বলেন, “এই দুটি পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে, বাকিগুলো কমে গেছে। আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্য বৃদ্ধির রিফ্লেকশন হিসাবে এসব পণ্যের দাম বাড়ছে। তার বেশি যাতে না বাড়ে, ব্যবসায়ীরা সেটার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।”

মন্ত্রণালয়ের আমদানি ও অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য (আইআইটি) অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেন, ভোজ্যতেলের দাম আগে যা নির্ধারণ করা হয়েছিল সেটাই থাকবে।

“অগাস্ট মাস শোকের মাস বিবেচনায় এই মাসে নতুন করে দাম বাড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ালেও সেটা পরে বিবেচনা করা হবে।”

গত মে মাসের সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী, প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল ১২৯ টাকা, বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৫৩ টাকা, পাম সুপার তেল ১১২ টাকা এবং সয়াবিন তেলের ৫ লিটারের বোতল ৭২৮ টাকায় বিক্রি হওয়ার কথা।

এদিকে আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণ দেখিয়ে দেশের বাজারে চিনির দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। গত এক মাসে খুচরায় চিনির দাম অন্তত ১২ শতাংশ বেড়ে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সফিকুজ্জামান বলেন, চিনির খুচরা মূল্য আপাতত ৭৫ টাকা থেকে ৮০ টাকার মধ্যেই থাকবে বলে আলোচনা হয়েছে।

আর বাণিজ্য সচিব বলেন, “আমাদের সরবরাহে কোনো ঘাটতি নেই। কিন্তু যেহেতু অনেকগুলো পণ্য আমদানিনির্ভর, তাই আমদানি মূল্য বৃদ্ধিকে কাজে লাগিয়ে যাতে স্থানীয়ভাবে মূল্য বৃদ্ধি ও মজুদ করা না করা হয়, আজকে ব্যবসায়ীদের সেটাই বলেছি।

“তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, আমদানি মূল্য যেটা বাড়বে সেই অনুযায়ী হিসাব করে যতটুকু বৃদ্ধি অভ্যন্তরীণ বাজারে হওয়া উচিত, সেটুকুই তারা করবেন।”

দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে টিসিবির তৎপরতা ‘আরও জোরদার’ করা হবে জানিয়ে সচিব বলেন, “প্রান্তিক জনগোষ্ঠী বা স্বল্প আয়ের মানুষের কষ্ট লাঘবে আমরা টিসিবির অপারেশন গত বছরের তুলনায় আড়াই গুণ বৃদ্ধি করেছি। টিসিবি আরও কয়েকটি পণ্য বিক্রি করছে এবং আগামী মাস থেকে পেঁয়াজসহ আরও পণ্য বিক্রি শুরু করবে।”

সভায় উপস্থিত খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, আগামী দুই এক দিনের মধ্যে বেসরকারিভাবে আমদানি করা চাল দেশে প্রবেশ করবে। ইতোমধ্যে চালের দাম কমতে শুরু করেছে। প্রায় সাত লাখ টন চাল আমদানি হচ্ছে।

টিসিবির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আরিফুল হাসান, সিটি গ্রুপ, টিকে গ্রুপ, এস আলম গ্রুপ, মেঘনা গ্রুপের প্রতিনিধি, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন, ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি গোলাম মাওলাসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন সভায়।