রবি ছাড়ছেন মাহতাব উদ্দিন আহমেদ

দেশের দ্বিতীয় শীর্ষ মোবাইল ফোন অপারেটর রবি আজিয়াটা লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার পদ ছাড়ছেন মাহতাব উদ্দিন আহমেদ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 August 2021, 07:06 AM
Updated : 5 August 2021, 08:53 AM

বৃহস্পতিবার রবির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, পাঁচ বছর ধরে রবির সিইও ও এমডি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসা মাহতাব তার চুক্তি আর নবায়ন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

রবির প্রথম বাংলাদেশি সিইও মাহতাব উদ্দিন আহমেদের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা আগামী ৩১ অক্টোবর।

তবে মাহতাব এখনই আনুষ্ঠানিকভাবে ছুটিতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং তার দায়িত্বে না থাকার সিদ্ধান্ত তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হবে বলে রবি জানিয়েছে। 

আপাতত রবির প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা (সিএফও) এম রিয়াজ রশিদ তার নিজের দায়িত্বের অতিরিক্ত হিসেবে ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বও পালন করবেন।

রবির পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান থায়াপারান সাঙ্গারাপিল্লাই বলেন, "দেশের শীর্ষ ডিজিটাল কোম্পানি হিসেবে রবিকে প্রতিষ্ঠায় মাহতাবের দৃঢ় ভূমিকার জন্য পরিচালনা পর্ষদের পক্ষ থেকে তাকে আমি অভিনন্দন জানাই।"

দায়িত্ব পালনে পূর্ণ সহযোগিতার জন্য ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, আইসিটি বিভাগ, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি), বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি), ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ, রবির সহকর্মী ও ব্যবস্থাপনা পর্ষদ, ব্যবসায়ী সম্প্রদায়, গণমাধ্যম এবং গ্রাহকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন মাহতাব উদ্দিন আহমেদ।

২০১৬ সালের অক্টোবরে রবির শীর্ষ পদ পাওয়ার আগে তিনি কোম্পানির চিফ অপারেটিং অফিসার (সিওও), চিফ ফিনান্সিয়াল অফিসার (সিএফও) হিসেবে কাজ করেছেন। ২০১০ সালে রবিতে যোগ দেওয়ার আগে তিনি ইউনিলিভারের বিভিন্ন নেতৃস্থানীয় পদে দায়িত্ব পালন করেন ১৭ বছর।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হিসাব বিজ্ঞানে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করা মাহতাব ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্ট অব বাংলাদেশের (আইসিএমএবি) ফেলো সদস্য। হার্ভার্ড বিজনেস স্কুলেরও অ্যালামনাই তিনি।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রবির প্রথম বাংলাদেশি সিইও হিসেবে মাহতাব উদ্দিন আহমেদ কোম্পানিকে ‘সাফল্যের এক নতুন চূড়ায়’ নিয়ে গেছেন।

“ফোরজি সেবায় রবিকে শীর্ষ স্থানে নেওয়া, বাংলাদেশের কোম্পানি ইতিহাসে সর্ববৃহৎ রবি-এয়ারটেল মার্জার সম্পন্নকরণ, পুঁজিবাজারের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ আইপিওর মাধ্যমে রবির তালিকাভুক্তি, ডিজিটাল অগ্রযাত্রায় বিভিন্ন যুগান্তকারী পদক্ষেপ তার সাফল্যের  কিছু উদাহরণ।”

তবে সাম্প্রতিক সময়ে রবির ব্যবসা পরিস্থিতি কোম্পানির প্রত্যাশা পূরণ করতে পারছিল না। এ বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে মালয়েশিয়ার কোম্পানি আজিয়াটার ইউনিট রবির কর পরবর্তী মুনাফা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ২০ শতাংশ কমে ৪৬ কোটি ৬৩ লাখ টাকায় নেমে আসে।

এ প্রান্তিকের আর্থিক ফলাফল প্রকাশ করে সম্প্রতি এক ব্রিফিংয়ে মাহতাব বলেছিলেন, “সামগ্রিক প্রতিযোগিতামূলক ত্রুটিগুলো বাজারকে ব্যর্থতার দ্বারপ্রান্তে ঠেলে দিচ্ছে। প্রতিযোগিতার এমন ভঙ্গুর পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক সক্ষমতা অর্জন করা কঠিন হয়ে পড়েছে অপেক্ষাকৃত ছোট অপারেটরদের জন্য।

“ত্রুটিপূর্ণ মূল্য নির্ধারণ প্রক্রিয়া এবং বিতরণ ব্যবস্থা গ্রাহকদের স্বার্থ ক্ষুণ্ন করছে এবং একইসাথে টেলিকম শিল্পকে দুর্বল করে ফেলছে যা ডিজিটাল বাংলাদেশের লক্ষ্য অর্জনের পথে বড় বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।”