বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী থাই ব্যবসায়ীরা

বাংলাদেশে বিনিয়োগের মাধ্যমে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বাড়াতে আগ্রহ দেখিয়েছেন  থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীরা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Sept 2018, 03:22 PM
Updated : 17 Sept 2018, 03:22 PM

সফররত ১৪ সদস্যের থাই বাণিজ্যিক প্রতিনিধি দলটি সোমবার এফবিসিসিআই ও পোশাক ব্যবসায়ীদের সংগঠন বিজিএমইএর সঙ্গে বৈঠক করে বিনিয়োগ সংক্রান্ত অভিজ্ঞতা বিনিময় করে। নতুন বিনিয়োগের ক্ষেত্র ও বাজার সম্ভবনা নিয়েও কথা বলেন তারা।

বিকালে কারওয়ান বাজারে বিজিএমইএ ভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সংগঠনটির সহ-সভাপতি মোহাম্মদ নাসির বলেন, “বাংলাদেশে উৎপাদিত পোশাক পণ্যের মধ্যে ৭০ শতাংশ রয়েছে সুতিপণ্য। বাকি ৩০ শতাংশের মধ্যে রয়েছে সোয়েটার, সিনথেটিক ও বিভিন্ন উচ্চমূল্যের পণ্য। থাইল্যান্ডের অধিকাংশ গার্মেন্টসই উচ্চমূল্যের পণ্য উৎপাদন করে। তাই তারা চাইলে বাংলাদেশে এধরনের বিনিয়োগ করে অধিক লাভবান হতে পারে।”

থাইল্যান্ডের তুলনায় বাংলাদেশে শ্রমিকের মজুরি কম হওয়ার বিষয় তুলে ধরে নাছির বলেন, সরকার নতুন বিনিয়োগে বিভিন্ন ধরনের প্রণোদনা দিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর একান্ত উদ্যোগে একশটি ইকোনমিক জোন তৈরি হচ্ছে, যা হবে বিনিয়োগের বড় একটা সুযোগ।

থাইল্যান্ডের বাজারে বাংলাদেশি পণ্য প্রবেশে শুল্ক বাধার কথা তুলে ধরে বিজিএমইএর জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, “থাইল্যান্ডের বাজারে ৩০ শতাংশ শুল্ক বাধা রয়েছে। তাই সেখানে রপ্তানি করার ইচ্ছা থাকলেও হচ্ছেনা। সুতরাং এই শুল্ক বাধা কমিয়ে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য আরও জোরদার করা যেতে পারে।

“চায়না, কোরিয়া ও জাপান থেকে বাংলাদেশ যে ধরনের কাপড় আমদানি করে তার কিছু অংশ থাইল্যান্ড থেকেও আমদানি করা যেতে পারে।”

থাইল্যান্ড প্রতিনিধিদলের নেতা মানু সিথিপ্রাসাসানা বিজিএমইএ নেতাদের বলেন,  বাংলাদেশে তাদের এই সফর খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ব্যবসার অনেক অনেক সম্ভাবনা দেখে তারা আনন্দিত।

“বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বিনিয়োগের অনেক সম্ভাবনা তুলে ধরা হয়েছে। থাই ব্যবসায়ীরা এই সফর থেকে ভালো কিছু সুযোগ নেবে বলে আমি আশা করি,” বলেন থাইল্যান্ডের ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর ট্রেড অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আইটিডি) নির্বাহী পরিচালক মানু সিথিপ্রাসাসান।

এর আগে দুপুরে মতিঝিলে বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করে থাই প্রতিনিধি দল।

বৈঠকে থাইল্যান্ডের স্বাস্থ্য, কৃষি, সিরামিক, লুব্রিকেন্ট, মোটর সাইকেল, প্লাস্টিক, আর্কিটেকচারাল ডিজাইনসহ অন্যান্য খাতের প্রতিনিধি বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট খাতগুলোর ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেন।

বাংলাদেশ সরকারের দেওয়া আকর্ষণীয় বিনিয়োগ সুবিধা যেমন ট্যাক্স হলিডে, রপ্তানির ক্ষেত্রে শুল্কমুক্ত সুবিধা এবং কর্পোরেট করসহ অন্যান্য সুবিধা গ্রহণ করে থাইল্যান্ড প্রতিনিধি দলকে এদেশের সম্ভাবনাময় খাতগুলোতে বিনিয়োগের আহ্বান জানান এফবিসিসিআই সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন।

থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীদের জন্য বাংলাদেশ আকর্ষণীয় একটি গন্তব্য জানিয়ে থাইল্যান্ড প্রতিনিধিদলের নেতা মানু বলেন, “থাইল্যান্ড সরকারও এ বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে চায়।”

এফবিসিসিআইর তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বাংলাদেশ ৩৮ দশমিক ১৪ মিলিয়ন ডলারের পণ্য থাইল্যান্ডে রপ্তানি করে; বিপরীতে থাইল্যান্ড থেকে ১১৯৩ দশমিক ৩০ মিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করে।

থাইল্যান্ডে বাংলাদেশের রপ্তানিযোগ্য পণ্যগুলো হচ্ছে- ওভেন গার্মেন্টস, নিটওয়্যার, প্রকৌশল পণ্য এবং হোম টেক্সটাইল।

আর থাইল্যান্ড থেকে প্লাস্টিক এবং রাবার উপাদান, খনিজদ্রব্য, বস্ত্র ও বস্ত্র সামগ্রী এবং যন্ত্রপাতি আমদানি করা হয়।

আরও খবর