মোবাইল ফোনের নম্বর অপরিবর্তিত রেখে অপারেটর বদলানোর সুযোগ (এমএনপি) পেতে গ্রাহকদের আর মাস পাঁচেক অপেক্ষা করতে হবে বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম।
Published : 07 Oct 2015, 04:58 PM
তিনি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অনুমোদন পাওয়ার পর এখন এর ‘লাইসেন্স গাইড লাইন’ এর আর্থিক বিষয়গুলো অর্থমন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।
“এসব প্রক্রিয়া শেষ হলে আগামী বছর ফেব্রুয়ারি-মার্চের মধ্যে বা তারও আগে এ সেবা গ্রাহকরা পাবেন বলে আশা করি।”
বুধবার সচিবালয়ে এমএনপি সেবা শুরুর বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন তারানা হালিম।
তিনি জানান, অর্থমন্ত্রণালয় অনুমোদন দিলে নিলামের মাধ্যমে একটি কোম্পানিকে এমএনপির লাইসেন্স দেওয়া হবে। তারাই গ্রহককে অপারেটর বদলের সুযোগ করে দেবে।
“৩০ টাকার বিনিময়ে অপারেটর বদলের সেবা দেয়া যায় কিনা, সে বিষয়ে অনুমোদন চাওয়া হয়েছে। তবে এ অংক কম-বেশি হতে পারে। গ্রাহকরা একবার এ সুবিধা নেওয়ার ৪০ দিন পর আরেক অপারেটরে চলে যেতে পারবেন।”
অপারেটরদের মধ্যে সুস্থ প্রতিযোগিতা ও উন্নত সেবা নিশ্চিত করতেই এমএনপি শুরু করা হচ্ছে জানিয়ে তারানা হালিম বলেন, মোবাইল অপারেটরাও এ নিয়ে আপত্তি তোলেনি।
“গ্রাহক যদি একজনও হয়, তাহলে তার অভিযোগও গুরুত্বপূর্ণ। কলড্রপসহ অন্যান্য সমস্যা হলে গ্রাহক এমএনপি সেবার মাধ্যমে এক অপারেটর থেকে অন্য অপারেটরে যেতে পারবে। আর গ্রাহক ধরে রাখতেই অপারেটররা সেবার মান বাড়াতে প্রতিযোগিতা শুরু করবে। উন্নত করার জন্য।”
প্রতিমন্ত্রী জানান, নিবন্ধিত যোগ্য কোম্পানি, বাংলাদেশি বা প্রবাসী বাংলাদেশি মালিকানাধীন কোম্পানি এমএনপি লাইসেন্সের নিলামে অংশ নিতে পারবে।
বিদেশি কেম্পানির ক্ষেত্রে অবশ্যই বাংলাদেশি অংশীদার লাগবে। এক্ষেত্রে বিদেশি প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ মালিকানা ৫১ শতাংশ হতে পারবে। তাদের বিনিয়োগ করতে হবে বিদেশি মুদ্রায় এবং বাংলাদেশ থেকে তারা অর্থ সংগ্রহ করতে পারবে না।
বাংলাদেশে লাইসেন্সধারী কোনো মোবাইল অপারেটরের মালিক, পরিচালক, অংশীদার, বিনিয়োগকারী বা শেয়ারধারী কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এমএনপির নিলামে অংশ নিতে পারবে না।
লাইসেন্স পাওয়ার জন্য একাধিক দেশে অন্তত তিন বছর এমএনপি সেবা দেওয়ার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “বার্ষিক লাইসেন্স ফি হবে ২০ লাখ টাকা। লাইসেন্স দেওয়ার পর দ্বিতীয় বছর থেকে সরকারকে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ হারে রাজস্ব দিতে হবে।”
দীর্ঘ দিন ব্যবহারের ফলে মোবাইল নম্বর একজন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের পরিচয়ের অংশে পরিণত হয়। কিন্তু নেটওয়ার্ক, খরচ ও অন্যান্য দিক বিবেচনায় অনেক সময়ই গ্রাহকদের অপারেটর বদলানোর দরকার হয়।
এসব দিক বিবেচনা করে বিটিআরসি ২০১৩ সালে মোবাইল ফোন অপারেটরদের এমএনপি সেবা চালুর নির্দেশ দেয়। কিন্তু অপারেটররা তা না পারায় বিটিআরসির তত্ত্বাবধানে নতুন গাইডলাইন তৈরি করে সরকারের কাছে দেওয়া হয়। গত ২১ সেপ্টেম্বর ওই নীতিমালায় অনুমোদন দেয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়।
বর্তমানে ইউরোপ ও আমেরিকার বিভিন্ন দেশ ছাড়াও প্রতিবেশী দেশ ভারত ও পাকিস্তানে মোবাইল নম্বর পোর্টেবিলিটি পরিষেবা চালু রয়েছে।