ইউক্রেইনে রাশিয়ার আগ্রাসনে বিশ্বজুড়ে জ্বালানির দাম চড়ে যাওয়ার পর সর্বোচ্চ বার্ষিক মুনাফা দেখল যুক্তরাজ্যভিত্তিক বহুজাতিক তেল-গ্যাস কোম্পানি শেল।
গত বছর কোম্পানিটি প্রায় ৪ হাজার কোটি ডলার মুনাফা করেছে, যা আগের বছরের চাইতে দ্বিগুণ। মুনাফার এই অঙ্ক কোম্পানিটির ১১৫ বছরের ইতিহাসেও সর্বোচ্চ বলে জানিয়েছে বিবিসি।
এদিকে শেলের এই মুনাফা করাকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ হিসেবে বর্ণনা করে যুক্তরাজ্যের বিরোধী দলগুলো বলছে, দেশটির সরকার জ্বালানি কোম্পানিগুলোকে লাগামহীন ব্যবসা করতে দিচ্ছে।
আগামী এপ্রিলে জ্বালানির দাম যে আবার বাড়ানোর পরিকল্পনা হচ্ছে, সেই পরিকল্পনা বাতিলের দাবিও জানান তারা।
কোভিড মহামারীর পর গত বছরের মার্চে রাশিয়া যখন ইউক্রেইনে অভিযান শুরু করে, তখন জ্বালানির দামও লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে।
ইউরোপের বাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম বাড়তে বাড়তে ব্যারেল প্রতি ১২৮ ডলারে উঠেছিল, পরে অবশ্য তা ৮৩ ডলারে নেমে আসে। গ্যাসের দামেও উল্লম্ফন দেখা দেয়, যা পরে কিছুটা কমেছে।
এ অবস্থায় বিপুল মুনাফা করেছে জ্বালানি কোম্পানিগুলো। কিন্তু অতিরিক্ত বিল নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে আবাসিক ও বাণিজ্যিক গ্রাহকরা।
বিবিসি লিখেছে, গত বছর যুক্তরাজ্য সরকার জ্বালানি কোম্পানিগুলোর ‘অস্বাভাবিক’ মুনাফার উপর আলাদা করারোপ করেছে, যাতে গ্যাস-বিদ্যুতে নিম্ন শ্রেণির গ্রাহকদের সহায়তা করা যায়।
শেল বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, কোম্পানিটি গত বছর এ ধরনের কর দিয়েছে প্রায় সাড়ে ১৩ কোটি ডলার, যা এ বছর ৫০ কোটি ডলার হতে পারে।
মুনাফা অনেক বাড়লেও শেল ব্যবসায় নতুন বিনিয়োগের চেয়ে শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ দিতেই বেশি আগ্রহী বলে অনেক সমালোচকই মনে করেন।
কোম্পানিটির মুনাফা বৃদ্ধির খবর প্রকাশের পর দেশটির সরকার যাতে কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে আরও বেশি অর্থ আদায় করে সেই চাপ বাড়বে।
তবে ১০ ডাউনিং স্ট্রিটের এক কর্মকর্তা বলছেন, এত মুনাফার খবরে ‘অবশ্যই’ ক্ষোভ বাড়বে। তবে গত বছর আলাদা করে যে করারোপ করা হয়েছে, তা বাড়ানোর কোনো পরিকল্পনা নেই।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখপাত্র জানিয়েছেন, পাইকারিতে দাম কমার পর তা যদি খুচরাতে প্রতিফলিত না হয়, সেক্ষেত্রে ব্যবস্থা নিতে সরকার প্রস্তত আছে।
তবে শেল প্রধান নির্বাহী ওয়াল সাওয়ানের ভাষ্য, “খুব কঠিন সময় যাচ্ছে-বিশ্বাস করার মতো নয়। বিশ্বজুড়েই ব্যাপক মূল্যস্ফীতি দেখা যাচ্ছে, এর পরও নবায়নযোগ্য প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ করে যাচ্ছে শেল।”