“ব্যাংকিং কার্যক্রম কীভাবে ইন্টারনেট ছাড়া করা যায়, সে বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক ধরনের পরিকল্পনা রয়েছে,” বলেন ব্র্যাক ব্যাংকের এমডি।
Published : 01 Aug 2024, 11:13 PM
ইন্টারনেট ছাড়া সারা দেশে ব্যাংকিং কার্যক্রম কীভাবে চালু রাখা যায়, তা নিয়ে এক ডজন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের (এমডি) সঙ্গে আলোচনা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার।
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতার জেরে সাম্প্রতিক ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউটে ব্যাংক লেনদেনে যে জটিলতার মুখোমুখি হতে হয়েছে, সেই প্রেক্ষাপটে বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকে এই বৈঠক হয়।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান ব্র্যাক ব্যাংকের এমডি সেলিম আর এফ রহমান বলেন, “ব্যাংকিং কার্যক্রম পুরোটাই এখন ইন্টারনেট নির্ভর। কোনো কারণে ইন্টারনেট না থাকলে ব্যাংকিং কার্যক্রম বন্ধ থাকবে, যেটা কয়েকদিন আগে ঘটেছিল।
“তাই ব্যাংকিং কার্যক্রম কীভাবে ইন্টারনেট ছাড়া করা যায়, সে বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক ধরনের পরিকল্পনা রয়েছে।”
তিনি বলেন, “ব্যাংকিং সেবার জন্য বিকল্প সেবা চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে। এটা পৃথক লাইন বা ইন্টারনেট ছাড়া কেবল লাইন দিয়ে হতে পারে।”
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে প্রাণঘাতী সংঘর্ষে ১৮ জুলাই থেকেই স্থবির হয়ে পড়েছিল রাজধানীর জনজীবন। একের পর এক হতাহতের ঘটনা ও বিভিন্ন স্থাপনায় তাণ্ডব চলানোয় উদ্বেগ ছড়ায়।
ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া হলে ব্যাংকের এটিএম ও পস মেশিনের সেবার পাশাপাশি অনলাইনে আর্থিক লেনদেনও বন্ধ হয়ে যায়।
পরদিন ১৯ জুলাই রাত ১২টা থেকে দেশজুড়ে কারফিউ শুরু হয়। কারফিউর মধ্যে ২১ থেকে ২৩ জুলাই ছিল সাধারণ ছুটি।
কারফিউ কিছুটা শিথিল হলে ২৪ জুলাই সীমিত পরিসরে অফিসও ব্যাংক খোলে। বুধবার থেকে আবার আগের মত পুরো সময় লেনদেন শুরু হয়।
ব্র্যাক ব্যাংকের এমডি বলেন, “সাম্প্রতিক ঘটনায় কয়েকজন ব্যাংকার মারা গেছেন। তাই যে কোনো পরিস্থিতিতে ব্যাংকারদের মনোবল চাঙ্গা রাখতে বলেছেন গভর্নর।”
ইন্টারনেট বন্ধ থাকার সময়ে রেমিটেন্সের প্রবাহ কমে যাওয়া নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে সেলিম আর রহমান বলেন, “বাইরে থেকে অনেকে বলছেন রেমিটেন্স যেন না পাঠানো হয়। এ বিষয়টি আমি একদম সঠিক মনে করি না। প্রবাসী যারা আছেন তারা দেশেই রেমিটেন্স পাঠাবে।
“রেমিটেন্সের চিত্রই এমন, এটা কোনো সময়ে বাড়বে, আবার কোনো সময় কমবে। দুয়েক দিনের রেমিটেন্স প্রবাহের চিত্র দেখে সামগ্রিকভাবে কোনো সিদ্ধান্তে চলে আসা ঠিক নয়। বরং রেমিটেন্সের ট্রেন্ড কয়েক মাসকে নিয়ে পর্যালোচনা করতে হবে।”
রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক ছাড়াও বেসরকারি খাতের ডাচ্-বাংলা, দি সিটি, ইস্টার্ন, মিউচুয়াল ট্রাস্ট, ব্র্যাক, ব্যাংক এশিয়া, প্রাইম ও ট্রাস্ট ব্যাংকের এমডিরা উপস্থিত ছিলেন বৈঠকে।
একজন এমডি জানান, সাম্প্রতিক ঘটনায় ব্যাংকের ক্ষয়ক্ষতি তেমন হয়নি। তবে দুয়েকটি এটিএম বুথের ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া দুটি ব্যাংকের চারজন মারা যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে সভায় আলোচনা হয়েছে।