বদলাতে হবে তৃতীয় লিঙ্গের প্রতি সামাজিক ধারণা

মো: শাহিন রেজা
Published : 2 March 2020, 12:32 PM
Updated : 2 March 2020, 12:32 PM

গ্রামে বা শহরে সন্তান জন্ম নিলে হিজড়াদের দেখা মেলে। নেচে-গেয়ে বকশিস নিয়ে যায় তারা। রাস্তা, বাস-ট্রেন, দোকান-বাজার থেকে টাকা উঠিয়েই জীবন চলছে তাদের। উপর্জনের পথ হিসাবে যৌনকর্মীও হয়ে ওঠে তারা। সমাজ হিজড়া জনগোষ্ঠীকে এখনও বাঁকা চোখে দেখে।  কিন্তু তাদেরও যে মানবিক অনুভূতি আছে এবং নাগরিক অধিকার আছে মূল্যায়ন নেই এখানে।

শিক্ষা, রাজনীতি, সামাজিক কর্মকাণ্ড থেকে মোটা দাগে বঞ্চিতই বলা চলে তাদের। কিন্তু সুযোগ পেলে তারাও যে ভালো কিছু করে দেখাতে পারে এর বড় উদাহরণ সাদিয়া আক্তার পিংকি। গত বছর অক্টোবরে ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত পিংকি একজন তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ।

২০১৩ সালে হিজড়া জনগোষ্ঠীকে প্রথমবারের মতো তৃতীয় লিঙ্গের স্বীকৃতি দেয় সরকার। হিজড়াদের জন্য ২০১৯-২০ অর্থ বছরে মোট পাঁচ কোটি ছাপ্পান্ন লাখ টাকা বারাদ্দ করেছে সরকার। এর আওতায় থাকবে হিজড়াদের জন্য শিক্ষা উপবৃত্তি, ভাতা ও প্রশিক্ষণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে।

কিন্তু আমার ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষণে মনে করি, হিজড়াদের সামাজিক উন্নয়ন অত্যন্ত ধীর গতির। সমাজের কুসংস্কার ও অসচেতনতার জন্য হিজড়ারা এখনও বৈষম্যের শিকার হচ্ছে; তাদের থাকতে হচ্ছে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন অবস্থায়। হিজড়া সন্তান যেন পরিবারের সঙ্গেই থাকতে পারে সেই পরিবেশ ও অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।

রাজনীতি ও ক্ষমতায়নে হিজড়াদের অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করা হলে সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর কাতার থেকে বেরিয়ে আসবে তারা।   হিজড়াদের কর্মসংস্থান নিশ্চিতে সরকারি চাকরির পাশাপাশি বেসরকারি খাতেও হিজড়াদের সুযোগ দেওয়ার ব্যবস্থা করা উচিৎ। সরকারের পক্ষেই এসব উদ্যোগ নেওয়া সম্ভব।

সামগ্রিকভাবে হিজড়াদের প্রতি আমাদের ধারণা বদলাতে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থাগুলোকেও কাজ করতে হবে। আর শিক্ষিত সমাজকে মানবিক আচরণ করতে হবে হিজড়া জনগোষ্ঠীর প্রতি। তাহলে হিজড়াদের নিয়ে সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি বদলাবে।