সিআইডি জানিয়েছে, প্রতারণার কাজটি এই চক্র বিভিন্ন ধাপে অত্যন্ত ‘সুনিপুণভাবে’ করত।
Published : 01 Aug 2022, 07:02 PM
মোবাইল ব্যাংক অ্যাকাউন্টের পাশাপাশি ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড রয়েছে, এমন ব্যক্তিদের কাছ থেকে কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া একটি প্রতারক চক্র ধরা পড়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) জালে।
সংস্থাটি বলছে, এক ভুক্তভোগীর অভিযোগে সোমবার নারায়ণগঞ্জে অভিযান পরিচালনা করে চক্রের ‘হোতা’ খোকন ব্যাপারী ওরফে জুনায়েদকে (৩০) গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পরে ঢাকায় সিআইডির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর বলেন, খোকনের নেতৃত্বে তিন থেকে চার সদস্যের একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র নিজেদের বিকাশ, নগদ, রকেটের কর্মকর্তা পরিচয়ে প্রায় ৫ থেকে ৬ বছর ধরে প্রতারণা করে আসছিল।
“প্রতারণার কাজটি তারা বিভিন্ন ধাপে অত্যন্ত সুনিপুণভাবে করত। চক্রটি ছয়টি ধাপে প্রতারণার কাজটি করতো।”
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, খোকন ‘it's khokon bro’ এবং ‘it's khokon bro 02’ নামের দুটি ফেইসবুক অ্যাকাউন্ট খুলে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট পাঠাত। তারপর তাদের আর্থসামাজিক অবস্থা বুঝে মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে টার্গেট ব্যক্তির সঙ্গে প্রতারণা করা হত।
ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড হোল্ডারদেরই মূলত চক্রটি শিকারে পরিণত করত জানিয়ে মুক্তা ধর বলেন, “প্রতারক প্রথমে বিকাশ কর্মকর্তা হিসেবে ভিকটিমকে ফোন দিয়ে অ্যাকাউন্ট আপডেট করতে বলত, অ্যাকাউন্ট আপডেট না করলে স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে যাবে বলেও ভয় দেখাত।
দ্বিতীয় ধাপে প্রতারক নিজের ফোনের বিকাশ অ্যাপে ভুক্তভোগীর নম্বর বসিয়ে তিনবারের বেশি ভুল পাসওয়ার্ড দিয়ে ‘অ্যাকাউন্টটি সাসপেন্ড’ করত বলে জানান সিআইডির এই কর্মকর্তা।
“তৃতীয় ধাপে প্রতারক ভিকটিমকে জানায়, তার অ্যাকাউন্টটি সাময়িকভাবে সাসপেন্ড করা হয়েছে এবং একাউন্টে থাকা টাকা ব্লক হয়েছে। এই ব্লককৃত টাকা ডেবিট/ক্রেডিট কার্ডে ট্রান্সফার করা সম্ভব।”
চতুর্থ ধাপে প্রতারক ভিকটিমের ডেবিট/ক্রেডিট কার্ডের নম্বর এবং সিভিভি নম্বর জানতে চাইত।
এরপর ভুক্তভোগী এসব তথ্য সরবরাহ করলে প্রতারক ডেবিট/ক্রেডিট কার্ডের তথ্য ব্যবহার করে বিকাশে ‘অ্যাড মানি’র চেষ্টা করে। তখন সংশ্লিষ্ট ব্যাংক থেকে ভুক্তভোগীর মোবাইল নম্বরে যে ওটিপি চলে যায়।
ষষ্ঠ ধাপে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে ওই কোডটি জানতে চায় প্রতারক। এরপর ওই কোড ব্যবহার করে সর্বোচ্চ পরিমাণ টাকা প্রতারক নিজের বিকাশ অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করে থাকে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
সিআইডি কর্মকর্তা মুক্তা ধর বলেন, “ভুক্তভোগীর কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহের পর পরই তারা তাদের ব্যবহৃত সকল আইডেন্টিটি গোপন করে রাখে।
“গ্রেপ্তার ব্যক্তি এ পর্যন্ত সে তার অন্যান্য সহযোগীদের নিয়ে প্রায় এক কোটিরও বেশি টাকা প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছে।”