“গবেষণা দেখে মনে হচ্ছে অধিকাংশ মানুষই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে,” বলেন তিনি।
Published : 16 Jul 2023, 11:10 PM
চলতি বছর ডেঙ্গু পরিস্থিতি যে রকম উদ্বেগজনক পর্যায়ে গেছে, সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান-আইইডিসিআরের উপদেষ্টা ড. মুশতাক হোসেন।
তিনি বলেছেন, “ডেঙ্গু এখন জনস্বাস্থ্য সমস্যা। এটি তার ধরন পরিবর্তন করেছে। নগর ছাড়িয়ে এই রোগ এখন গ্রামেও ছড়িয়েছে। কাজেই সারা বছর ভয়ের মধ্যে থেকে জনস্বাস্থ্য সমস্যা সমাধান করা সম্ভব না।
“এ অবস্থায় এখন আমরা জাতীয় পর্যায়ে ডেঙ্গুর জনস্বাস্থ্যে জরুরি পরিস্থিতিতে আছি। এই বিবেচনায় রোগ নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। এই ব্যবস্থা নেবে স্বাস্থ্য বিভাগ, স্থানীয় সরকার বিভাগসহ অন্যান্য সংস্থাগুলো।”
রোববার ঢাকার মুগদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে বিএমএ আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।
এতে ‘প্রিভিলেন্স রিস্ক অ্যান্ড অব ডেঙ্গু ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে মুশতাক হোসেন বলেন, “গত বছর শীতের সময়ও ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এইডিস মশা দিনের বেলায় কামড়ায়, স্বচ্ছ পানিতে জন্মায়-এই ধারণাতেও পরিবর্তন এসেছে।
“গবেষণা বলছে, এইডিস মশা দিন-রাতের বিভেদ ভুলে যেকোনো সময় কামড়ায়। নোংরা পানিতেও তারা বংশ বিস্তার করছে। এসব কারণে এ বছর দ্রুতই এইডিস মশা বাড়ছে, ডেঙ্গুর বিস্তার ঘটছে। গত বছর দেখেছিলাম অক্টোবরে ডেঙ্গুর পিক সিজন ছিল। কিন্তু এ বছর দেখা যাচ্ছে, খুব আগেই ডেঙ্গুর বিস্তার ঘটেছে।”
ডা. মুশতাক বলেন, গত বছরের এক গবেষণায় দেশের এক চতুর্থাংশ মানুষের শরীরে ডেঙ্গুর অ্যান্টিবডি মিলেছে। তার মানে বোঝা যাচ্ছে অধিকাংশ মানুষই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে।
সেমিনারে ‘ডায়াগনসিস অ্যান্ড ট্রিটমেন্ট অব ডেঙ্গু’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএসএমএমইউর রিউমাটোলজি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আতিকুল হক।
তিনি বলেন, “ডেঙ্গু আক্রান্ত যাদের মধ্যে কোনো উপসর্গ নেই- আবার অসুস্থও নন, তাদের হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন নেই। এতে একদিকে হাসপাতালের সক্ষমতা নষ্ট হয়।
“অন্যদিকে জরুরি রোগীকে চিকিৎসা সেবা পেতে বিড়ম্বনা পোহাতে হয়। তবে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে।"
বিএসএমএমইউর উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, “ডেঙ্গু সাধারণ চিকিৎসায় ভালো হয়। যাদের ডেঙ্গু হচ্ছে সবাইকে কিন্তু হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন নেই। এতে সীমিত শয্যার হাসপাতালগুলোতে চাপ তৈরি হচ্ছে।
বেইজমেন্টে জন্মাচ্ছে এইডিস, ভ্রূক্ষেপ নেই ভবনওয়ালার
“মুগদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে যেহেতু সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হচ্ছে, এখানে বিএসএমএমইউ থেকে জরুরি ভিত্তিতে ট্রেইনি চিকিৎসক পাঠানো যায় কি না সে বিষয়ে আমরা আলোচনা করে দেখব।”
ডা. শারফুদ্দিনের সভাপতিত্বে সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিএমএর মহাসচিব ডা. ইহতেশামুল হক চৌধুরী। sবিএমএ সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনও সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন।