সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর মামলাটি করে দুদক।
Published : 10 Jul 2023, 08:50 PM
গ্যাটকো দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ ১৩ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের অবশিষ্ট শুনানি পিছিয়েছে।
সোমবার কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে ঢাকার ৩ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের অস্থায়ী এজলাসে এ মামলার অভিযোগ গঠনের অবশিষ্ট শুনানির কথা ছিল। এদিন আসামি এ কে এম মুসা কাজল ও ইহসান ইউসুফের পক্ষে আইনজীবী তাজুল ইসলাম অব্যাহতি চেয়ে শুনানি করেন। তবে অন্য আসামির আইনজীবীরা অভিযোগ গঠন শুনানি পেছাতে সময়ের আবেদন করেন।
বিচারক আলী হোসেন তা গ্রহণ করে আগামী ৩০ জুলাই শুনানির নতুন তারিখ রাখেন বলে জানান খালেদা জিয়ার আইনজীবী আবুল কালাম খান।
গত ৬ জুন এ আদালতেই গ্যাটকো মামলায় অভিযোগ গঠনের শুনানি শুরু হয়েছিল। সেদিন বিএনপি নেতা আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীর পক্ষে অভিযোগ গঠনের শুনানি শেষ করেন আইনজীবী সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবাহ।
সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপ-পরিচালক গোলাম শাহরিয়ার চৌধুরী এই মামলা করেন।
তেজগাঁও থানায় করা এই মামলায় ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত চারদলীয় জোট সরকারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া, তার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোসহ ১৩ জনকে আসামি করা হয়। মামলার পরদিন খালেদা জিয়া ও কোকোকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ওই বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর মামলাটি অন্তর্ভুক্ত করা হয় জরুরি ক্ষমতা আইনে। পরের বছর ১৩ মে খালেদা জিয়াসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে এ মামলায় অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়।
সেখানে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গ্যাটকোকে ঢাকার কমলাপুর আইসিডি ও চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের কাজ পাইয়ে দিয়ে রাষ্ট্রের ১৪ কোটি ৫৬ লাখ ৩৭ হাজার ৬১৬ টাকার ক্ষতি করেছেন।
আসামিদের মধ্যে সাবেক মন্ত্রী এম সাইফুর রহমান, এম শামছুল ইসলাম, এম কে আনোয়ার, আকবর হোসেন, আবদুল মান্নান ভুইয়া এবং খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রাহমান কোকো মারা গেছেন। আর জামায়াত নেতা মতিউর রহমান নিজামীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন সাবেক মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সাবেক প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যান কমডোর জুলফিকার আলী, আকবর হোসেনর স্ত্রী জাহানারা আকবর, দুই ছেলে ইসমাইল হোসেন সায়মন এবং এ কে এম মুসা কাজল, এহসান ইউসুফ, সাবেক নৌ সচিব জুলফিকার হায়দার চৌধুরী, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সাবেক সদস্য এ কে রশিদ উদ্দিন আহমেদ, গ্লোবাল এগ্রোট্রেড প্রাইভেট লিমিটেড (গ্যাটকো) এর পরিচালক শাহজাহান এম হাসিব।
খালেদা জিয়া এরই মধ্যে দুর্নীতির দুটি মামলায় সাজা পেয়েছেন। এর মধ্যে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় ১০ বছর এবং জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় সাত বছরের সাজা হয়েছে তার।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি পাঁচ বছরের সাজা নিয়ে কারাগারে যান বিএনপি নেত্রী। পরে হাই কোর্টে আপিলে সাজা বেড়ে হয় দ্বিগুণ।
কারাগারে যাওয়ার দুই বছর পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্বাহী আদেশে সাজা স্থগিত হওয়ার পর ছয় মাসের জন্য মুক্তি মেলে বিএনপি নেত্রীর। এরপর আরও পাঁচ দফা বাড়ানো হয় মুক্তির মেয়াদ।
তার বিরুদ্ধে নাইকো দুর্নীতিসহ আরও কয়েক ডজন মামলা রয়েছে।