মাদারীপুরে বাস খাদে: স্বামীর পাঠানো ভিসায় সৌদি যেতে পারবেন ঝুমা?

এ সড়ক দুর্ঘটনায় ঝুমার দেবর নিহত হয়েছেন; তার অবস্থাও শঙ্কামুক্ত নয় বলে চিকিৎসক জানিয়েছেন।

কামাল তালুকদারবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 March 2023, 12:25 PM
Updated : 19 March 2023, 12:25 PM

রোজার শুরুতে সৌদি প্রবাসী স্বামীর কাছে যাবেন বলে দেবরকে সঙ্গে নিয়ে কাগজপত্র সংগ্রহ করতে গোপালগঞ্জ থেকে ঢাকায় আসছিলেন ঝুমা বেগম, এক দুর্ঘটনায় থমকে গেছে তার জীবন, তার স্বপ্ন।

গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীর সৌদি প্রবাসী আমিনুল ইসলামের স্ত্রী ঝুমা বেগম চার সন্তানের জননী। ঢাকায় আসার জন্য ইমাদ পরিবহনের যে বাসে তিনি চড়েছিলেন, রোববার সকালে মাদারীপুরের শিবচরে বঙ্গবন্ধু এক্সপ্রেসওয়ের রেলিং ভেঙে সেটি খাদে পড়ে যায়।

ঝুমার দেবর মো. সজীবসহ (২৫) এ পর্যন্ত মোট ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে এ ঘটনায়। আহত হয়েছেন অন্তত ৩০ জন। ঝুমার পা ভেঙে গেছে; মাথা ও কোমরে গুরুতর আঘাত পেয়েছেন। এখন তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন।

৩৪ বছর বয়সী এই নারী কোনোদিন স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবেন কিনা তা চিকিৎসকরা নির্দিষ্ট করে বলতে পারছেন না।

ঢাকা মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক জানান, মাদারীপুরের দুর্ঘটনায় আহত ১০ জনকে এ হাসপাতালে আনার পর দুজনকে মৃত ঘোষণা করা হয়, বাকি আটজন ভর্তি রয়েছেন।

“তাদের মধ্যে আবদুল হামিদ নামে ৫৫ বছর বয়সী একজনের অবস্থা গুরুতর; ঝুমার অবস্থাও আশঙ্কামুক্ত বলা যাবে না।”

ঝুমার মামাতো ভাই মো. মেজবাহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সাংবাদিকদের বলেন, “আগামী সপ্তাহে আপুর (ঝুমা) সৌদি আরবে দুলা ভাইয়ের কাছে যাওয়ার কথা ছিল। কয়েকদিন আগে সৌদি আরব থেকে ভিসা পাঠিয়েছেন। আজ সেই ভিসার কাগজপত্র নিতে দেবরের সঙ্গে ঢাকায় আসতেছিলেন। পথে এই দুর্ঘটনার শিকার হন।

“দুর্ঘটনায় আপুর ছোট দেবর সজীব মারা গেছেন। তারা পাশাপাশি সিটে ছিলেন।”

চোখের চিকিৎসা করানো হল না আলী আকবরের

মাদারীপুরে দুর্ঘটনায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এ পর্যন্ত দুজনের মৃত্যু হয়। তারা হলেন, ইমাদ পরিবহনের সুপারভাইজার মিনহাজ বিশ্বাস (২২) ও শেখ আলী আকবর (৭৫)।

আলী আকবরের ভাতিজা সার্জেন্ট জাহিদুল ইসলাম হাসপাতালে বলেন, তাদের বাড়ি বাগেরহাট জেলার রামপাল উপজেলার কুমলাই গ্রামে। এলাকায় একটি মাদ্রাসায় এক সময় শিক্ষকতা করতেন তার চাচা। অবসরে গিয়েছিলেন বেশ কয়েক বছর আগে।

জাহিদুল বলেন, “গ্রামের বাড়ি থেকে মেয়ে জামাই জাহাঙ্গীর হোসেনকে (৩৬) সঙ্গে নিয়ে চোখের ডাক্তার দেখাতে ঢাকায় আসছিলেন উনি। রাস্তায় দুর্ঘটনার কবলে পড়েন।”

দুর্ঘটনার সময় আকবরের সঙ্গে থাকা জাহাঙ্গীরও আহত হয়ে স্থানীয় একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলে জানান সার্জেন্ট জাহিদুল।

ইমাদ পরিবহনের মালিক মো. সাব্বির জানান, ওই বাসের চালক জাহিদ হোসেন ও সুপারভাইজার মিনহাজ বিশ্বাস দুজনই মারা গেছেন।

তার দাবি, দুর্ঘটনার আগে গাড়িটি ৭৯ কিলোমিটরা বেগে চলছিল; সামনের চাকা ফেটে যাওয়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও যাত্রীদের কেউ কেউ বলেছেন, বাসটি চালানো হচ্ছিল অনেক বেশি গতিতে। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে সাব্বির বলেন, ইমাদ পরিবহনের গাড়ি কোথায় কত গতিতে চলছিল তা তারা জিপিএস পদ্ধতির মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করতে পারেন।

আরও পড়ুন

Also Read: মাদারীপুরে বাস খাদে: নিহতদের মধ্যে ৯ জনই গোপালগঞ্জের