Published : 20 Aug 2023, 12:23 PM
ফরিদপুরের নগরকান্দায় চার বছর আগে এক মসজিদে চাচা ও ভাতিজাক গুলি করে হত্যার ঘটনায় তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং দুইজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪ এর বিচারক জেসমিন আরা রোববার এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।
এ মামলার জীবিত ১৫ আসামির মধ্যে চারজনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড এবং ছয়জনকে খালাস দিয়েছেন বিচারক।
এলাকার আধিপত্য নিয়ে বিরোধের জেরে ২০১৯ সালে নগরকান্দার মধ্যকাইচাইল মাদ্রাসা মসজিদে রওশন আলী ও তার ভাতিজা মিরাজুল ইসলামকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় এ মামলা দায়ের করেন তাদের আত্মীয় শিক্ষানবিশ আইনজীবী গোলাম রসুল।
রায়ের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “আমি নিজেও আক্রমণের শিকার হয়ে আহত হয়েছিলাম। আমাকে যে আঘাত করেছে, তার মোটে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হল। আমি সকল আসামির মৃত্যুদণ্ড চাই। আমি এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করব।”
আসামিদের মধ্যে হানিফ ওরফে হৃদয়, এনামুল হাসান মিয়া এবং কাইয়ুম মিয়াকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত।
রেজাউল মাতুব্বর এবং আউয়াল মোল্লাকে দেওয়া হয়েছে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।
এছাড়া দুলাল মিয়াকে দুটি ধানায় ১০ বছর ও ৭ বছরের কারাদণ্ড; হাবিবুর রহমান ওরফে হাবিব মিয়াকে দুটি ধানায় ৭ বছর করে কারাদণ্ড; পাঁচু মিয়াকে ৩ বছরের কারাদণ্ড; এবং রিকুল ইসলাম ওরফে রবিন শিকদারকে এক বছরের সাজা দিয়েছে আদালত।
অপরাধে সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত না হওয়ায় হাফিজুর রহমান ওরফে তুষার মিয়া, তুহিন মিয়া, শহিদুল ইসলাম ওরফে শহীদ মিয়া, কে এম রাজু আহমদ ওরফে কোরবান মিয়া, রবিউল ইসলাম ওরফে মশিউর মিয়া এবং পারভেজ মিয়াকে খালাস দেওয়া হয়েছে রায়ে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৯ সালের ১০ অগাস্ট মধ্যকাইচাইল মাদরাসা মসজিদে আসরের নামাজ পড়ে রওশন আলী ও মিরাজুল ইসলাম তুহিনসহ অন্যরা মাদ্রাসা মাঠে গেলে আউয়াল মোল্লা ও হানিফ মিয়া ওরফে হৃদয়সহ অন্য আসামিরা পরিকল্পিতভাবে তাদের ওপর হামলা করেন।
আউয়াল মোল্লার হুকুমে হৃদয়সহ অন্য আসামিরা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি চালায়। তাতে রওশন আলী ও মিরাজুল ইসলাম তুহিন ঘটনাস্থলেই মারা যান। গুলিবিদ্ধ হন গোলাম রসুল বিপ্লব, গোলাম মাওলাসহ আটজন।
গোলাম রসুল পরে নগরকান্দা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। তদন্ত শেষে ২০২০ সালের ২২ জুলাই ১৬ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। তাদের মধ্যে আসাদুজ্জামান শিকদার নামের এক আসামির মৃত্যু হলে মামলা থেকে তার নাম বাদ যায়।
মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য পরে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইবুন্যালে এ পাঠানো হয়। বিচার চলাকালে ৩৬ জনের সাক্ষ্য নিয়ে নয় আসামিকে দোষী সাব্যস্ত করে রায় দিলেন বিচারক।