“তার (খালেদা জিয়ার) জন্য নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ আইনি প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার জন্য আমরা সরকারকে উৎসাহিত করেছি।”
Published : 27 Oct 2023, 05:08 PM
বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়গুলো যুক্তরাষ্ট্র পর্যবেক্ষণ করছে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার।
বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র দপ্তরের ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নে তিনি বলেন, “সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার অবনতিশীল স্বাস্থ্যের খবরগুলো পর্যবেক্ষণ করছি আমরা।
“তার জন্য নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ আইনি প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার জন্য আমরা সরকারকে উৎসাহিত করেছি। এবং অভ্যন্তরীণ আইনি প্রক্রিয়ায় এর বেশি বলার নেই আমার।”
৭৮ বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী আথ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, লিভার, কিডনি, ফুসফুস ও হদরোগে ভুগছেন দীর্ঘদিন ধরে। লিভার সিরোসিসের জটিলতার কারণে চিকিৎসকরা বলেছেন, তার লিভার প্রতিস্থাপন করা প্রয়োজন। সেজন্য তাকে বিদেশে কোনো উন্নত মেডিকেল সেন্টারে নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে আসছিলেন মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা।
কিন্তু দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া এখন সরকারের নির্বাহী আদেশে সাময়িক মুক্ত আছেন। তাকে বিদেশে নেওয়ার জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে একাধিকবার আবেদন করা হলেও সরকারের সায় মেলেনি। সে কারণে পরে বিদেশ থেকে চিকিৎসক আনার সিদ্ধান্ত হয়।
সেই ধারাবাহিকতায় যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিনস ইউনিভার্সিটির স্কুল অব মেডিসিনের লিভার ও কিডনি প্রতিস্থাপন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক হামিদ আহমাদ আবদুর রব, ইন্টারভেনশনাল অনকোলজি বিভাগের অধ্যাপক ক্রিসটোস স্যাভাস জর্জিয়াডেস এবং হেপাটোলজির অধ্যাপক জেমস পিটার হ্যামিলটন বুধবার রাতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ঢাকায় পৌঁছান। তাদের আগে যুক্তরাজ্য থেকে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ রফিকুল আলম গত বুধবার রাতে ঢাকায় আসেন।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা তিন চিকিৎসক বৃহস্পতিবার সকালে এভারকেয়ার হাসপাতালে গিয়ে খালেদা জিয়াকে দেখেন এবং মেডিকেল বোর্ডের সঙ্গে বৈঠক করেন। পরে সন্ধ্যায় ‘ট্র্যান্সজাগুলার ইন্ট্রাহেপেটিক পোরটোসিসটেমিক শান্ট (টিপস)’ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তার লিভারে দুই রক্তনালীর মধ্যে একটি নতুন সংযোগ তৈরি করে দেন চিকিৎসকরা।
খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অবস্থা এবং জনস হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসকদের সফরের বিষয় তুলে ধরে করা প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অবস্থান জানান পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র।
যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক উপ-সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আফরিন আখতার ঢাকা সফরে এসে ‘৩ নভেম্বরের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে বলেছেন’– এমন একটি কথা এসেছে টেলিভিশনের আলোচনায়। এর সত্যাসত্য জানতে চাওয়া হয় মিলারের কাছে।
উত্তরে তিনি বলেন, “আমি শুধু বলব, না, অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিষয়ে আমরা কারও পক্ষ নিই না।”
২৮ অক্টোবর আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সমাবেশ ঘিরে উত্তেজনা এবং বিরোধী নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে মন্তব্য জানতে চান এক সাংবাদিক।
উত্তরে মিলার বলেন, “আমাদের মন্তব্য হচ্ছে, যেটা ইতোমধ্যে বলা হয়েছে সেটাই- আমরা বিশ্বাস করি আসন্ন নির্বাচন হতে হবে অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ। এবং এর বাইরে বাড়তি মন্তব্য আমার নেই।”