ঈদযাত্রায় দেশজুড়ে ২৪টি স্থানকে যানজটঝুঁকিপূর্ণ স্থান হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
Published : 18 Jun 2023, 07:32 PM
কোরবানির পশুবাহী কোনো যানবাহন জোর করে হাটে থামানো যাবে না। এজন্য এগুলো কোন হাটে যেতে চায় সেই তথ্য যানবাহনের সামনের ব্যানারে লিখে রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
রোববার সচিবালয়ে কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত সভায় এসব নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
সভা শেষে তিনি জানান, সুনির্দিষ্ট তথ্য ছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও কোরবানির পশুবাহী যানবাহন থামাতে পারবে না। কেউ এসব যানবাহন থামালে সংশ্লিষ্ট পুলিশ সুপারকে জানাতে হবে।
কামাল বলেন, কোনো পশুবাহী নৌযান ও ট্রাক পরিবহনের সময় জোরপূর্বক নির্দিষ্ট কোনো হাটে নিতে যাতে বাধ্য করা না হয়, থামানো না হয়, সেজন্য ট্রাক বা যানের সামনে ব্যানারে লেখা থাকবে পশুবাহী যান কোন হাটে যাচ্ছে।
“পশুবাহী যানবাহন সড়ক, মহাসড়ক বা নদীতে কেউ থামাতে পারবে না। সুনির্দিষ্ট তথ্য না থাকলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও থামাতে পারবে না। কোনো যান থামালে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
নদী পথে আসা পশুবাহী নৌযানের সামনেও ব্যানার থাকবে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, নৌ পুলিশ, বিআইডব্লিউটিএ সমন্বয় করে নদীপথের যানগুলো তদারক করবে। নৌ পুলিশ টহলে থাকবে।
সরকারের নির্দেশনা থাকার পরেও কোথাও কেউ পশুবাহী যানবাহন থামালে সংশ্লিষ্ট জেলার এসপিকে জানালে তিনি ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান তিনি। পুলিশ ছাড়াও আরও অনেকেই পশুবাহী গাড়ি থামিয়ে থাকে বলে জানান তিনি।
কামাল বলেন, এবার সারা দেশে ৪ হাজার ৩৯৯টি পশুর হাট বসবে বলে আমাদের কাছে এ পর্যন্ত খবর এসেছে। এসব হাটে নিরাপত্তা দিতে নিরাপত্তা বাহিনী ব্যবস্থা নেবে।
“কোরবানির পশু ঠিকমত যাতে শহরে ঢুকতে পারে এবং পরিবহন যাতে সুন্দর হয় এজন্য গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার মোড় ও বড় বড় কোরবানির পশুর হাটে ওয়াচ টাওয়ার বসাব। পশুর হাটগুলো সিসি ক্যামেরায় আবৃত থাকবে।”
দুর্গম এলাকা দিয়ে মিয়ানমার থেকে কিছু পশু দেশে ঢুকছে বলেও স্বীকার করেন তিনি।
সড়ক-মহাসড়কে কোনো প্রকার হাট যাতে না বসে সেদিকেও লক্ষ্য রাখা হবে বলে জানান তিনি। মহাসড়কের পার্শ্ববর্তী এলাকায় পশুর হাট বসলে তা যেন কোনোক্রমেই যেন মহাসড়কের ভেতর না আসতে পারে, সেজন্য ওই হাটের কর্মকর্তাদের ব্যবস্থা নিতে হবে বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
পশুর হাটে হাসিলের সাইনবোর্ড দৃশ্যমান রাখার নির্দেশনার কথাও বলেন তিনি।
পশুর হাটে জাল নোট শনাক্তকরণ মেশিন ও এটিএম বুথ থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, “বাস, লঞ্চ টার্মিনাল, রেল স্টেশন ও ফেরিঘাটে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সতর্ক অবস্থায় থাকবে। মলম ও অজ্ঞান পার্টি যাতে কোনো কার্যক্রম করতে না পারে সেজন্য গোয়েন্দা সংস্থা তৎপর থাকবে। পশুর হাটে ভেটেরিনারি চিকিৎসক থাকবেন।”
কামাল জানান, ঈদের ছুটিতে সারা দেশে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই ও সন্ত্রাসী কার্যাকলাপরোধে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হবে। র্যাব দৃশ্যমান টহলে থাকবে।
“যানজট নিরসনে মহাসড়ক, সড়ক ও শহর এলাকার গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা ও মোড়ে হাইওয়ে পুলিশ বা ব্যাটেলিয়ন আনসার থাকবে। যানজটপ্রবণ স্থানে ওয়াচ টাওয়ার থেকে পর্যবেক্ষণ করে যানজট নিরসন করা হবে।”
ঈদযাত্রায় দেশজুড়ে ২৪টি স্থানকে যানজটঝুঁকিপূর্ণ স্থান হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এই স্থানগুলোতে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নিরাপদ ঈদযাত্রার জন্য হাইওয়ে পুলিশ, জেলা পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সমন্বয় করে কাজ করবে। ফায়ার সার্ভিস ও অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থাও থাকবে।
নৌ দূর্ঘটনা এড়াতে নৌযানে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ফেরি ঘাটে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী লক্ষ্য রাখবে। লঞ্চের ধারণ ক্ষমতার বাইরে কাউকে উঠতে দেওয়া হবে না। এজন্য লঞ্চ মালিকদের অনুরোধ করা হবে তারা যেন লঞ্চের ধারণ ক্ষমতা লিখে রাখেন।
তিনি বলেন, পোশাক শ্রমিকদের জুন মাসের ১৫ দিনের বেতন ও ঈদ বোনাস ঈদের ছুটির আগে দিতে এসব কারখানার মালিকদের বলা হয়েছে। যানজট নিরসনে পোশাক কারখানায় পর্যায়ক্রমে ছুটি দেবেন বলে মালিকরা সম্মত হয়েছেন।
ঈদের জামাতেও নিরাপত্তা দেওয়া হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, “করোনা এখনও যায়নি এজন্য আমরা বলেছি, স্বাস্থ্যবিধি যথাসম্ভব মেনে চলতে। ঈদযাত্রায় যানবাহনের ভাড়া যাতে না বাড়ানো হয় তা মনিটরিং করা হবে।”