জ্বালানি তেলের দাম এক ধাক্কায় অনেকটা বেড়ে যাওয়ায় বাস ভাড়া বৃদ্ধির পর লঞ্চের ভাড়াও বাড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছে বাংলাদেশ লঞ্চ মালিক সমিতি।
নতুন করে লঞ্চের ভাড়া নির্ধারণে রোববার নিজেদের মধ্যে আলোচনায় বসার কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশ লঞ্চ মালিক সমিতির সভাপতি মাহবুব উদ্দিন আহমেদ।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “রোববার অফিস চালু হওয়ার পর ভাড়া নির্ধারণ নিয়ে নিজেদের মধ্যে বসব। এরপর বসব সরকারের সঙ্গে।”
গত ২৫ জুন পদ্মাসেতু উদ্বোধনের পর যাত্রী কমেছে লঞ্চে। একদিকে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি, অন্যদিকে যাত্রী কম থাকায় লঞ্চের ভাড়া না বাড়ালে আর্থিকভাবে ক্ষতির কথা বলছেন লঞ্চ মালিক সমিতির সভাপতি।
এক প্রশ্নের জবাবে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডট্কমকে তিনি বলেন, “ভাড়া না বাড়ালে তো মারা যাব।”
শুক্রবার রাতে হঠাৎ জ্বালানি তেলের দাম অনেকটা বাড়ানোর ঘোষণা আসে। প্রতি লিটার ডিজেল ও কেরোসিনের দাম ৪২.৫% বেড়ে হয়েছে প্রতি লিটার ১১৪ টাকা। পেট্রোলের দাম ৫১.১৬% বেড়ে প্রতি লিটারের দাম হয়েছে ১৩০ টাকা। আর অকটেনের দাম বেড়েছে ৫১.৬৮%, প্রতি লিটার কিনতে গুনতে হবে ১৩৫ টাকা।
তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব পরে শনিবার সকাল থেকেই। ঢাকার সড়কে বাসের উপস্থিতি কমে দুর্ভোগে পড়েন নগরবাসী। দিনভর সবার নজর ছিল পরিবহন মালিক সমিতির সঙ্গে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) বৈঠকের দিকে।
দীর্ঘ বৈঠক শেষে শনিবার রাতে দূর পাল্লার বাসের ভাড়া প্রতি কিলোমিটারে ১ টাকা ৮০ পয়সা থেকে ২২ শতাংশ বাড়িয়ে ২ টাকা ২০ পয়সা করা হয়।
অন্যদিকে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে প্রতি কিলোমিটারের ভাড়া ২ টাকা ১৫ পয়সা থেকে ১৬ শতাংশ বাড়িয়ে করা হয় ২ টাকা ৫০ পয়সা।
লঞ্চের ভাড়া বাড়ানোর নতুন ঘোষণা না আসায় রোববার সকালে ঢাকার সদরঘাট থেকে আগের ভাড়াতেই ছেড়ে গেছে দক্ষিণাঞ্চমুখী লঞ্চগুলো।
মিতালী-৪ লঞ্চের মাস্টার মোস্তাফিজুর রহমান সকাল ৯টার দিকে জানান, তাদের লঞ্চটি আগের ভাড়াতেই চাঁদপুরের উদ্দেশে ছেড়ে যাচ্ছে। আগের মতই তৃতীয় শ্রেণি ১৫০ টাকা, চেয়ার ২০০ টাকা, চেয়ার এসি ৩০০ টাকা, সিঙ্গেল কেবিন ৬০০ টাকা এবং ডাবল কেবিন ১২০০ টাকা রাখছেন তারা।
কোভিড মহামারীর ধাক্কার পর ইউক্রেইন যুদ্ধের প্রভাবে আট মাসের মধ্যে দ্বিতীয় দফায় জ্বালানি তেলের দাম বাড়ালো সরকার। এর প্রতিক্রিয়ায় প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভও হয়েছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উঠেছে আলোচনার ঝড়।
সরকারের পক্ষ থেকে বৈশ্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরে বলা হয়েছে, আরও বড় সঙ্কট সামাল দিতে দাম বাড়ানোর ‘বিকল্প ছিল না’।