তার বিরুদ্ধে সনদ জাল করে চাকরি নেওয়াসহ সেবগ্রহীতাদের ফাইল গায়েব করে দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে।
Published : 01 Aug 2023, 10:08 PM
জাল সনদে চাকরি নেওয়ার অভিযোগের ‘প্রমাণ পাওয়ায়’ জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদককে পুলিশে দেওয়া হয়েছে।
দেলোয়ার হোসেন নামের ওই ব্যক্তি জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের উচ্চমান সহকারী। মঙ্গলবার তাকে শাহবাগ থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়।
তার বিরুদ্ধে ফাইল গায়েব করে দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে বলে গৃহায়ন ও গণপূর্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন জানিয়েছেন।
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ নিয়ে অনেক অভিযোগ আমাদের কাছে আসে। জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কোনোটার প্রতিকার করতে পারেন আবার কোনোটার পারেন না।
“মূল অভিযোগগুলো আসে জমি নিয়ে। কারণ সেখানে জমি সংক্রান্ত কাজ বেশি হয়। জমির ফাইলগুলো কিছু লোকের কাছে জিম্মি। ফলে সেবাগ্রহীতারা হয়রানির শিকার হন।”
দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়ার কথা জানিয়ে সচিব বলেন, “সেখানে তার পদ উচ্চমান সহকারী। এ পদের জন্য যে শিক্ষাগত যোগ্যতা প্রয়োজন সেটি তার নেই। তিনি এইচএসসি সার্টিফিকেট জালিয়াতি করে চাকরি নিয়েছেন।
“অভিযোগ আসার পর আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি করি। উপসচিব দেবময় দেওয়ানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তদন্তের এক পর্যায়ে দেলোয়ারের কাছে সার্টিফিকেট চাওয়া হলে তিনি একটা সার্টিফিকেট আমাদের দেন। এরপর জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের কাছে তার নিয়োগ সংক্রান্ত কাগজপত্র চাওয়া হলে তারা তা দেখাতে পারেননি।”
গৃহায়ন সচিব জানান, দেলোয়ারের সনদ যাচাই করতে তদন্ত কর্মকর্তাকে কুমিল্লা বোর্ড ও কলেজে পাঠানো হয়। কিন্তু কলেজ কর্তৃপক্ষ কোনো কাগজপত্র দেয়নি, কোনো ধরনের সহযোগিতাও করেনি।
পরে বোর্ড চেয়ারম্যানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান ২০১৯ সালে দেলোয়ার তার বাবার নাম অ্যাফিডেভিট করিয়েছেন। সার্টিফিকেটে বাবার নাম শিশু মিয়া লেখা থাকলেও তা পরিবর্তন করে আব্দুল আলীম করে নেন। দেলোয়ারের এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তার নামে আরও এক ব্যক্তি রয়েছেন, যার বাবার নাম শিশু মিয়া।
তদন্তে এইচএসসির সনদ জাল হওয়ার প্রমাণ পাওয়ায় দেলোয়ারকে মঙ্গলবার গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে ডেকে শুনানি করেন উপসচিব দেবময় দেওয়ান।
অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় দেলোয়ারকে একজন উপসচিবের দপ্তরে আটকে রাখা হয়। পরে তার বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়ে তাকে শাহবাগ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
দেলোয়ারের বিরুদ্ধে সনদ জালিয়াতি ছাড়াও বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে জানিয়ে পূর্ত সচিব বলেন, “আমরা দুদককে তদন্ত করতে বলেছি। দেলোয়ার অনিয়ম করে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। তিনি অনেক টাকার মালিক। এর আগে বিভিন্ন সংস্থা তার বিরুদ্ধে তদন্ত করেছে, তবে সব জায়গায় তিনি নিষ্কৃতি পেয়েছেন।
“যেখানে এ ধরনের সমস্যা আছে, আমরা সেখানেই হাত দিচ্ছি। এক্ষেত্রে যারা বাধার সৃষ্টি করছেন তাদের চিহ্নিত করছি এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি,” বলেন তিনি।