অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা উপকূলে আঘাত হানার পর দুর্বল হতে হতে গুরুত্বহীন হয়ে পড়ায় দেশের সমুদ্রবন্দরগুলোকে সব ধরনের সতর্ক সংকেত নামিয়ে ফেলতে বলেছে আবহাওয়া অফিস।
সোমবার আবহাওয়াবিদ মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিকের স্বাক্ষরে ঘূর্ণিঝড় মোখার সর্বশেষ বুলেটিনে বলা হয়, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার আর কোনো সম্ভাবনা নেই।
টানা তাপপ্রবাহের মধ্যে গত সপ্তাহে সাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়, যা ধাপে ধাপে শক্তিশালী হয়ে অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড়ের রূপ পায়।
সোমবার সকালে বাংলাদেশের কক্সবাজার ও উত্তর মিয়ানমার অঞ্চল দিয়ে উপকূল অতিক্রম শুরু করে ঘূর্ণিঝড় মোখা। তখন কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত, চট্টগ্রাম ও পায়রা বন্দরে ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত এবং মোংলা বন্দরে ৪ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত জারি ছিল।
এ ঝড় তাণ্ডব চালাতে চালাতে সোমবার বিকালের পর পুরোপুরি স্থলভাবে উঠে আসে এবং বৃষ্টি ঝরিয়ে দুর্বল হয়ে পড়ে। ঝড়টি স্থল নিম্নচাপের রূপ নিলে সোমবার সন্ধ্যায় সংকেত কমিয়ে সব বন্দরে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়।
মিয়ানমারের দিকে চলে যেত যেতে মোখা আরও দুর্বল হয়ে গুরুত্বহীন হয়ে পড়ে। সে কারণে সোমবার দেশের বন্দরগুলোকে সতর্ক সংকেত নামিয়ে ফেলতে বলা হল।
তবে সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলেছে আবহাওয়া অফিস।
প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী কক্সবাজারে সম্পূর্ণ ও আংশিক মিলিয়ে ১২ সহস্রাধিক ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ঘূর্ণিঝড় মোখার আঘাতে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা সোয়া ৩ লাখ মানুষ।
এছাড়া রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরে আড়াই হাজার ঘর ও স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে ত্রাণ, শরণার্থী ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয়।
দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিনে ১২০০ মতো ঘরবাড়ির ক্ষতি হয়েছে। গাছপালা উপড়ে গেছে, ঘরবাড়ি ভেঙে মানুষের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় মোখা ঘণ্টায় ১৪৭ কিলোমিটার বাতাসের গতি নিয়ে সেন্ট মার্টিনে আঘাত হেনেছিল বলে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় উপকূলে আঘাত হানার আগে চট্টগ্রাম বন্দর, শাহ আমানত বিমানবন্দরের কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়, দেশের ভেতরে নদীপথে নৌযান চলাচলে দেওয়া হয় নিষেধাজ্ঞা।
ঝড়ের বিপদ কেটে যাওয়ায় বিমানবন্দর ও বন্দর চালু হয়েছে আবার, সোমবার সকালে নৌযান চলাচলের নিষেধাজ্ঞাও তুলে নেওয়া হয়েছে।