সাতসকালে হাতিরঝিলে সাইকেল র‍্যালি

‘জাতিসংঘ সড়ক নিরাপত্তা সপ্তাহ’ উপলক্ষে এ আয়োজন করা হয়।

হাঁটা, সাইকেল চালানো, গণপরিবহন ব্যবহারের মতো অভ্যাস গড়তে ঢাকার হাতিরঝিলে অনুষ্ঠিত হলো সাইকেল র‍্যালি।

শুক্রবার সকাল সাড়ে ৬টায় শুরু হওয়া এ আয়োজনে শতাধিক নারী-পুরুষ সাইক্লিস্ট অংশ নেন বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে ব্র্যাক।

এতে বলা হয়, জাতিসংঘ সড়ক নিরাপত্তা সপ্তাহ উপলক্ষে এ কর্মসূচি আয়োজন করে বিশ্ব ব্যাংক ও ব্র্যাক। র‌্যালি উদ্বোধন করেন ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক।

হাতিরঝিলের অ্যাম্ফিথিয়েটারের পাশ থেকে শুরু হয়ে র‌্যালিটি পুলিশ প্লাজা, রামপুরা, মহানগর আবাসিক এলাকার পাশে অবস্থিত সেতু ঘুরে আবার অ্যাম্ফিথিয়েটারের পাশে এসে শেষ হয়।

গোলাম ফারুক বলেন, “সাইকেল নিজেদের চলাচলের জন্য এবং ব্যায়ামের জন্য উত্তম একটা বাহন। কিন্তু এই উত্তম বাহন ব্যবহার করার মত উত্তম পরিবেশ আমাদের ঢাকা শহরে নাই। বিশ্বের অনেক দেশেই সাইকেলের জন্য আলাদা লেন থাকে। তারা সেটা ব্যবহার করে অফিস আদালতে যায়। ঢাকা শহরে যে পরিবেশ তাতে আমরা যতই উৎসাহিত করি, সাইকেল নিয়ে বের হওয়ার আলাদা লেন নাই।

“আমাদের নগরায়ন পরিকল্পিত না। আমাদের স্থাপত্যবিদ, নগরবিদ, ট্রাফিক ইঞ্জিনিয়াররা এসব খেয়াল রাখেন না। ঢাকা শহরের রাস্তায় ঠেলাগাড়ি থেকে শুরু করে ২২ ধরনের যানবাহন চলাচল করে। আমরা ফুটপাথগুলো জনগণের জন্য পুরোপুরি উন্মুক্ত করতে পারি না।”

ঢাকা শহরের রাস্তার গাড়ি ধারণক্ষমতা দুই লাখ উল্লেখ করে তিনি বলেন, “কিন্তু ১২ লাখ গাড়ি রাস্তায় চলাচল করছে। ধারণক্ষমতার ছয়গুণ বেশি থাকার কারণে তীব্র পরিবেশ দূষণ, তীব্র যানজট, চারদিকে হর্নের শব্দে কান ঝালাপালা। মাস্ক ছাড়া রাস্তায় চলাচল করলে দেখা যাবে, আপনি শ্বাসতন্ত্রের ভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাফিক পুলিশরাও এ ধরনের নানা রোগে আক্রান্ত হয়।”

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ্ বলেন, “অনেক কিছুই আমাদের এখন পুনর্বিবেচনা করা দরকার। আমাদের নিজেদের স্বাস্থ্যের যেমন একটা ব্যাপার আছে, পরিবেশের স্বাস্থ্যেরও একটা ব্যাপার আছে। সেই দিক থেকে সাইকেল চালানো একদিকে যেমন নিজের জন্য ভালো। তেমনি পৃথিবীর জন্যও ভালো।

“আমাদের রাস্তাঘাটগুলো তৈরিই করা হচ্ছে গাড়ির জন্য, সাইকেলের জন্য না। সাইকেল চালকদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে যদি পরিকল্পনা করা হয়, বিশেষ করে যে নতুন শহরতলী হচ্ছে, তাহলে আরো বেশি মানুষ বিশেষ করে তরুণরা সাইকেল চালাতে উৎসাহী হবে।”

ব্র্যাকের রোড সেফটি প্রোগ্রামের পরিচালক আহমেদ নাজমুল হুসেইন বলেন, “এবার জাতিসংঘ বলেছে, রিথিঙ্ক মবিলিটি। এতে তিনটা বিষয়কে গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। হেঁটে চলা, সাইকেলে চড়ে কাজে যাওয়া, স্কুলে যাওয়া, এবং গণপরিবহনের ব্যবহার।

“সাইকেলে চলা সবার মধ্যে ছড়িয়ে দিতে আমরা এখানে একটা সাইকেল র‍্যালির আয়োজন করেছি। আমরা মনে করি, সবাই যাতে সাইকেলে চড়ে কাজে যায়, স্কুলে যায়, অফিসে যায়, যেতে পারে। এজন্য অবকাঠামোর প্রয়োজন আছে। এগুলোর জন্য আমরা অ্যাডভোকেসি ও সচেতনতা তৈরি করছি।”